বদরপুরে গোডাউনের শ্রমিকদের সভা অনুষ্ঠিত
বরাক তরঙ্গ, ৮ জানুয়ারি : ভারতীয় রেলওয়ে মাল গোদাম শ্রমিক সঙ্ঘের এনএফআর জোনের ভাঙ্গা গোডাউনের শ্রমিকদের এক সভা বদরপুর ঘাট বিবাহ ভবনে অনুষ্টিত হয়। এই সভায় মুখ্য বক্তা সঙ্ঘের এন ই জোনের ইনচার্জ পঞ্চানন ডেকা তার বক্তব্য বলেন, ভারতীয় রেলওয়ে মাল গোদাম শ্রমিকদের স্বার্থে আগের কংগ্রেস সরকার কোন কাজ করেনি।শুধু আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস সরকার। শ্রমিকদের স্বার্থের কথা ভাবছে এক মাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। এই মন্তব্য করেন এন এফ রেলওয়ে এন ই জোনের ইনচার্জ পঞ্চানন ডেকা। বিজেপি সরকার আসার পর প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রেলমন্ত্রী, শ্রম মন্ত্রী, রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান মাল গোদাম শ্রমিকদের দাবির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন ।সঙ্ঘের কর্মকর্তারা জানান বিজেপি সরকার আসার পর তারা রেল মন্ত্রী, রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান, শ্রম মন্ত্রীর সঙ্গে তাদের দাবি নিয়ে আলোচনায় বসার সুযোগ পেয়েছেন ।দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে ।তারা বলেছেন শুধু উত্তরপূর্বাঞ্চলে
চল্লিশ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করছেন ।এই চল্লিশ হাজার পরিবারে যদি পাচ জন করে সদস্য থাকেন তবে হিসেবটা কোথায় দাড়ায় ।পঞ্চানন ডেকা বলেন বিজেপি সরকার আসার পর তাদের তেরো দফা দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে ।প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশে রেল মন্ত্রী, শ্রম মন্ত্রী, রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান তাদের দাবি গুলো বিবেচনা করে শীঘ্রই পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন ।তিনি বিজেপি সরকারের প্রশংসা করার পাশাপাশি প্রাক্তন রেলমন্ত্রী রাজেন গোহাইর ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন রেল বোর্ডের কাছে অস্থায়ী শ্রমিকদের কোন হিসেব নেই। তাই মাল গোদাম শ্রমিকরা ই-শ্রম রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নিজেদের নাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তিনি জানান ১৯১৭ সালে কিউআর কার্ডের ব্যবস্থা করে দেন তৎকালীন রেল প্রতি মন্ত্রী রাজেন গোহাই। এর মাধ্যমে মাল গোদাম শ্রমিকরা বেতন, রেলওয়ে বেতন, মেডিক্যাল, রেল পাশ, ইউনিফর্ম, ইন্সুরেন্স, সহ তেরো দফা দাবির প্রতিটি সুবিধা পাবেন।দেশের প্রতিটি রেল ডিভিশনের শ্রমিকরা এই সুবিধা পাবেন। তার জন্য বর্তমানে কাজ ও চলছে। এসব দাবি নিয়ে কংগ্রেস আমলে দফায় দফায় জেল ভরো থেকে অনেক আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস সরকার কোন সাড়া দেয়নি।
বিজেপি সরকার এই মাল গোদাম শ্রমিকদের দাবির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছে। প্রতিটি ডিভিশনের শ্রমিকরা এই সুবিধা পাবেন। বর্তমান সরকার বলেছে মাল গোদাম শ্রমিক দের স্পেশিপাই করে দেয়ার জন্য এই কাজ আগামী ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। দীর্ঘ তেইশ বছরের আন্দোলনের ফসল মিলতে শুরু হয়েছে এবার। পঞ্চানন ডেকা বলেন তারা স্বার্থপর হলে কয়েকজনের চাকরি নিয়ে বসে থাকতেন। কিন্তু তা করেননি। বলেন কয়লা এবং এফসিআই শ্রমিকের মত মাল গোদাম শ্রমিকরা আট দশ ঘণ্টা কাজ করেন। তাদের আন্দোলনের ফলে ই শ্রম কার্ড মঞ্জুর করেছে সরকার। এর সফল পাচ্ছেন অন্যান্য অসংগঠিত শ্রমিকরা। ভাঙ্গা মাল গুদামের অধিন শ্রমিকদের আগামি ২২ জানুযারির মধ্যে ডাটা বেইজড জমা দিয়ে ই শ্রম কার্ড সংগ্রহ করতে বলেন তিনি। অন্য শ্রমিকরা এসে এই সুবিধা যাহাতে নিতে না পারেন, সে দিকে নজর রাখতে বলেন পঞ্চানন ডেকা।জানান তাদের দাবির মধ্যে বেতন নির্ধারণ, রেল পাশ, ইন্সুরেন্স, মেডিক্যাল সুবিধা প্রদান, উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা, বিশ্রামাগার নির্মাণ, কেনটিনের ব্যবস্থা করা, পানীয় জলের ব্যাবস্থা রাখা সহ তেরো দফা দাবি সরকার মেনে নিয়েছে। বলে সরকার কে ধন্যবাদ জানান তিনি।সাংবাদিক সম্মেলন শেষে অনুষ্টিত হয় তাদের সাধারণ সভা। এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পঞ্চানন ডেকা সহ সংঘের ভাঙ্গা মাল গুদামের সংগঠন মন্ত্রী মহেশ ঠাকুর, প্রেসিডেন্ট তরুন প্রসাদ রায়, আলা উদ্দিন, সিণ্টু দত্ত, অজয় কুমার দাস, ফকর উদ্দিন তালুকদার, সমাজসেবী সীতাংশু রায় সহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন তরুণ প্রসাদ রায়।
প্রতিবেদক : মোহাম্মদ মুন্না, বদরপুর।