নাচে-গানে-কথায়-কবিতায় বর্ষবরণ বরাকবঙ্গের

বরাক তরঙ্গ, ১৬ এপ্রিল : নাচে-গানে-কথায় -কবিতায় এ বারও নববর্ষের সকালে বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের শিলচর শহর আঞ্চলিক সমিতি। সানাইয়ে শুক্কুর আলি মজুমদারের মঙ্গলধুনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তাঁকে হারমোনিয়ামে সহযোগিতা করেন মনোরঞ্জন মালাকার। তবলায় ছিলেন চিরঞ্জীব অধিকারী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আঞ্চলিক সমিতির সভাপতি সব্যসাচী পুরকায়স্থ।

নাচে-গানে-কথায়-কবিতায় বর্ষবরণ বরাকবঙ্গের

অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল আকস্মিক বক্তৃতা। ড. বিভাসরঞ্জন চৌধুরী, তৈমুর রাজা চৌধুরী, গৌতমপ্রসাদ দত্ত, জয়দীপ বিশ্বাস, মিলন উদ্দিন লস্কর, রণধীর চক্রবর্তী, সীমান্ত ভট্টাচার্য, ড. সোমা পাল, ড. পরিতোষ দত্ত, মৌটুসী বিশ্বাস, অনিল পালের মতো বিশিষ্টজনেরাও চিরকূট তুলে নির্ধারিত বিষয়ের ওপর এক মিনিট বক্তৃতা করেন। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন আঞ্চলিক সমিতির সহসম্পাদক সুশান্ত সেন। শিলচরের বর্ষবরণ দেখতে বেঙ্গালুরু থেকে এসেছেন অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্তা আশিস দে। তিনিও এ দিন বঙ্গভবনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বর্ষবরণ সহ বরাক বঙ্গের নানা কর্মকাণ্ডের কথা জেনে সন্তোষ ব্যক্ত করেন। তাঁর আক্ষেপ, বাঙালির মহা-উৎসবের এই দিনটিতে বাঙালিরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সামিল হচ্ছেন না। আশিসবাবু বলেন, এই দিনটি বৃহৎ পরিসরে উদযাপনের মধ্য দিয়েই বাঙালি ঐক্য গড়ে উঠতে পারে।

নাচে-গানে-কথায়-কবিতায় বর্ষবরণ বরাকবঙ্গের

‘এসো হো বৈশাখ’ সমবেত ভাবে গেয়ে নতুন বছর ১৪২৯-কে স্বাগত জানান বরাক বঙ্গের শিল্পীরা। পরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিধায়ক ভট্টাচার্য, অনুসূয়া মজুমদার, তাপসী দত্ত, অনামিকা দেব, তুহিন মজুমদার, প্রভাতী চক্রবর্তী, রোহিতাশ্ব চক্রবর্তী, আকাশ সরকার, গীতাঞ্জলি দত্ত, অদ্রিজা সরকার, মধুবনী ভট্টাচার্য ও অরুন্ধতি ভট্টাচার্য। বছরের প্রথম দিনে এই অঞ্চলের প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের গান শোনা যেমন বড় প্রাপ্তি ছিল, তেমনি তরুণ শিল্পীদের কয়েকজনের সুরেলা কণ্ঠের সঙ্গে অনেকের পরিচয় ঘটেছে এ দিন। উল্লেখ করতে হয় ছন্দে ছন্দে মিউজিক অ্যাকাডেমি-র শিশুশিল্পীদের কথা। মধুর সুরে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে এরা। পরিচালনায় ছিলেন মণিদীপা পাল। আয়োজক সভাপতি সব্যসাচী পুরকায়স্থও একটি গান গেয়ে শোনান।

নাচে-গানে-কথায়-কবিতায় বর্ষবরণ বরাকবঙ্গের

প্রবীণ দুই কবি মহুয়া চৌধুরী এবং শিপ্রা দে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কবিতা পাঠের মাধ্যমে বর্ষবরণ করেন তাঁরা।
নৃত্যের ডালি নিয়ে হাজির ছিলেন বিভিন্ন বয়সের শিল্পীদল। নতুন বছরের প্রথম দিনটির সঙ্গে একেবারে মানানসই গান বাছাই করেন নবনীতা দেব। তাঁর নৃত্য সকলকে মাতিয়ে তোলে। সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে দুটি দল। শিশুশিল্পীরা হল আরোহী, আদ্রিকা, আনিশা, মধুস্মিতা, রূপসী ও দীপশিখা। চা জনগোষ্ঠীর সুন্দর নৃত্য মঞ্চে উপস্থাপন করেন পাঁচ তরুণী—তনুপ্রিয়, অনুষ্কা, অনভিষা, অনামিকা ও অরনিকা।

নাচে-গানে-কথায়-কবিতায় বর্ষবরণ বরাকবঙ্গের

চিরঞ্জীব অধিকারী ছাড়াও শিল্পীদের তবলায় সহযোগিতা করেন আলোকরঞ্জন ভট্টাচার্য ও তন্ময় মজুমদার। পুরো অনুষ্ঠানে গিটারে গোবিন্দ শর্মা এবং কি-বোর্ডে হৃষীকেশ চক্রবর্তী ভিন্ন মাত্রা যোগ করেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাস্কর দাস, বকুলচন্দ্র নাথ, সুজন দত্ত, শিপ্রা পুরকায়স্থ, অরূপ সরকার, রমাকান্ত দেব, পলাশ দাস, সঞ্জয় দেবলস্কর, রঞ্জিত চৌধুরী, অমিত চক্রবর্তী প্রমুখ।

Author

Spread the News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *