কাছাড়ের মাইক্রোফাইন্যান্সের ঋণ মুক্তির ২৫ হাজার টাকা করে চেক বণ্টন
বরাক তরঙ্গ, ২৬ মার্চ : কাছাড় জেলায় মাইক্রোফাইন্যান্স থেকে ঋণগ্রহীতা ৮২ হাজার ৩১৫ জন প্রথম শ্রেণীর ঋণ পরিশোধকারী কে তাদের ঋণ মুক্তির জন্য ২৫ হাজার টাকা করে অর্থের চেক বণ্টন শুরু হয়েছে শনিবার। রাজ্যের অর্থ তথা সমাজকল্যাণমন্ত্রী অজন্তা নেওগ রংপুর হাইস্কুলের খেলার মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ১৯ জন হিতাধিকারীর হাতে শনিবার এই অর্থের চেক তুলে দেন। রাজ্যের বন পরিবেশ আবগারি ও পরিবেশ আবগারি ও মৎস্য মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য এবং জেলার অভিভাবক মন্ত্রী তথা আবাসন নগর উন্নয়ন এবং জলসেচ মন্ত্রী অশোক সিংঘালকে পাশে বসিয়ে অর্থ মন্ত্রী নেওগ বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বরাকের সার্বিক উন্নয়ন কে তরান্বিত করতে তৎপর। মুখ্যমন্ত্রী হবার পর তিনি কয়েক বার এই উপত্যকা সফরে এসেছেন। এই অঞ্চলের সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়েছেন। আর বরাকের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর যে অগাধ ভালোবাসা রয়েছে তার প্রমাণ আসাম মাইক্রোফাইন্সাস থেকে নিয়মিত ঋণ নিয়ে যারা ঋণ পরিশোধ করেছেন। এইরুপ রাজ্যের ১১ লক্ষ ঋন গ্রহিতা মহিলা যারা কোভিড পরিস্থিতির জন্য ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি তাদের কে ২৫ হাজার করে চেক প্রদান করা হচ্ছে। যাতে তারা ঋণ মুক্ত হতে পারেন। শনিবার জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে আসাম মাইক্রোফাইন্সাস থেকে নিয়মিত ঋণ পরিশোধ কারী ৮২ হাজার ৩০০ শত ১৫ জন হিতাধিকারিদের মধো ৫ হাজার হিতাধিকারিদেরকে প্রথম পর্যায়ে চেক বণ্টন অনুষ্ঠানে অজন্তা নেওগ আরও বলেন, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আগের অর্থ মন্ত্রী হিসেবে নির্বাচনের পূর্বে ঘোষনা করেছিলেন বন্ধন ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য মাইক্রোফাইনান্স থেকে ঋণ নিয়ে কোভিড পরিস্থিতির জন্য যারা ঋণ পরিশোধ করতে যেসব মহিলা পারেননি পারেননি, আগামীতে আবার সরকারে বিজেপি দল ফিরে এলে প্রথম কাজ হবে এই ঋণ মুকুব করা। রাজ্যের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর উপর বিশ্বাস রেখেছে ফলে সরকার ফিরে এসেছে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হবার পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে তিনি মন্ত্রী বিধায়কদের ডেকে বলেছেন সরকারের প্রথম কাজ মহিলাদের ঋণ মুকুব করা। কারন মহিলারা তো মা। তিনিও এক মহিলার সন্তান। তাই তাদের প্রতি তার অপরিসীম শ্রদ্ধা রয়েছে সেটাই প্রমাণিত হল আজ। অজন্তা নেওগ বরাকের উন্নয়ন প্রসঙ্গ টেনে বলেন বরাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব সময় মুখ্যমন্ত্রী শর্মা চিন্তা করেন। তার কাছে বরাক ব্রক্ষ্মপুত্র আলাদা নয়। তাই বরাকের যেসব উন্নয়ন কাজ স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল সেগুলো কাজ দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। অনেক কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন বিভিন্ন ভাষাগোষ্ঠী জাতীগোষ্ঠীর মানুষ এই রাজ্যে বসবাস করছেন। মুখ্যমন্ত্রী শর্মা সদিচ্ছা হল সবাইকে একত্রিত করে দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসাবে আসাম কে তুলে ধরা। আর সেজন্য সবাই মুখ্যমন্ত্রী শর্মার হাত সুদৃঢ় করতে হবে। রাজ্যের গৃহ ও নগর উন্নয়ন ও জলসেচ মন্ত্রী তথা বরাকের অভিভাবক মন্ত্রী বলেন বরাকের সার্বিক উন্নয়ন কে তরান্বিত করতে মুখ্যমন্ত্রী শর্মা তৎপর। তিনি বলেন বহু বছর যেসব কাজ বন্ধ ছিল সব উন্নয়ন মূলক কাজ শুরু হয়েছে।মহাসড়কের কাজ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শেষ হবে। কৃষি শিক্ষা স্বাস্থ্য যোগাযোগ সব কিছুতে বরাক উপত্যকায় বিপ্লব নিয়ে আসবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। করিমগঞ্জে আর একটি মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার কথা ও শোনাতে ভুল করেন নি রাজ্যের জলসেচ মন্ত্রী। রাজ্যের আবগারী মীন ও বন ও পরিবেশ মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য বলেন মেলা হচ্ছে অনেক ধরনের। আজকের এই মেলা হচ্ছে ঋণ মুক্তির মেলা। এই মেলা মায়েরা বোনেরা রারা এসেছেন তাদেরকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। ঋণ গ্রহণ করা খারাপ কাজ নয়। আপনারা এই ঋণ গ্রহন করে ঋণ পরিশোধ করেছেন। নিজেকে স্ব নির্ভরশীল করেছেন। সাহায্য করেছেন পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নয়নে। কোভিড পরিস্থিতির জন্য ঋন পরিশোধ করতে পারেননি। তাই মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী তাদের ঋণ মুকুবের সুযোগ করে দিচ্ছেন। মন্ত্রী শুক্লবৈদ্য বলেন ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আবার যদি তাদের দলের সরকার আসে তাহলে মহিলাদের ঋণ মুকুব করা হবে। সে সময় বিরোধীরা বলেছিল এটা মুখ্যমন্ত্রী শর্মার নির্বাচনী ভাওতা প্রতিশ্রুতি।
প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন লক্ষীপুরের বিধায়ক কৌশিক রাই উধারবন্দের বিধায়ক মিহির কান্তি সোম। দুজনেই তাদের বক্তব্যে সরকার প্রদত্ত অর্থ যাতে স্বনির্ভরশীল হয়ে উঠার কাজে লাগান সেজন্য উপস্থিত মহিলাদের অনুরোধ জানান। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জেলাশাসক কীর্তি জল্লী। উধারবন্দ শিলচর লক্ষীপুরের মিহির কান্তি সোম, দীপায়ন চক্রবর্তী কৌশিক রাই সভায় ভাষণ দেন। বি জে পি জেলা সভাপতি বিমলেন্দু রায় এপিডিসিএল এর ডিরেক্টর নিত্যভুষন দে, সাংসদ প্রতিনিধি পুলক দাস, কনাদ পুরকায়স্থ, শিলচর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মঞ্জুল দেব সহ হিতাধিকারি মহিলারা উপস্থিত ছিলেন সভায়।
প্রতিবেদন : জনসংযোগ, শিলচর।