করিমগঞ্জে বন্যার পদধ্বনি, বাড়ছে জল

বরাক তরঙ্গ, ১৭ জুন : কুশিয়ারা ও সিংলা বিপদসীমা অতিক্রম করে পুনরায় একবার ধীরে ধীরে রুদ্রমূর্তি ধারন করা শুরু করেছে। এক‌ইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে লঙাই নদীও ইতিমধ্যে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় ব‌ইছে। একদিকে অবিরত ধারা বর্ষনে সাধারণ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে পাহাড়ে ভুমিস্খলনের ফলে রেল পথ ও সড়ক পথ বন্ধ হয়ে সমগ্র দেশের সঙ্গে বরাক উপত্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বলতে গেলে বরাক উপত্যকার তিন জেলা এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়ে পড়েছে। বর্তমান প্রতিকুল পরিস্থিতির জন্য বরকাবাসীর সঙ্গে প্রান্তিক জেলা করিমগঞ্জবাসীও গভীর উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। বিশেষ করে করিমগঞ্জ জেলা সহ সমগ্র বরাক উপত্যকার কৃষককুল গভীর দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। প্রকৃতিদেবীর রুষ্ঠ মনোভাবের কারনে কৃষককুলের সর্বস্বান্ত হ‌ওয়ার উপক্রম। বর্তমান সময়েই বাজারে সবজির আকাল দেখা দিয়েছে। সর্বনাশা বন্যার কারনে ফসলের ফলন না হলে, আগামী বছর হাহাকারের সৃষ্টি হবে বলে বিশেষজ্ঞ মহল ধারনা করছেন। একমাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার বন্যার পদধ্বনিতে সীমান্ত জেলাবাসী শঙ্কিত।

করিমগঞ্জে বন্যার পদধ্বনি, বাড়ছে জল

গত ৭২ ঘন্টার ধারা বর্ষনে কুশিয়ারা বিপদসীমার উপর দিয়ে ব‌ইতে শুরু করেছে। জেলাবাসীকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে জেলা প্রশাসন ও জেলা জলসম্পদ বিভাগ ইতিমধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। এমনিতেই অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে আবাসিক এলাকা সহ শহরের বিভিন্ন সড়ক বিগত বেশ কয়েকদিন থেকে জলমগ্ন হয়ে আছে। তার উপর ফের একবার কুশিয়ারার চোখরাঙানি শহরবাসীর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। গত চব্বিশ ঘন্টা থেকে কুশিয়ারার জল ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দিশপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বানুমান অনুযায়ী আগামী দু’তিনদিন ধারা বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। এমর্মে কাছার জেলায় লাল সংকেত এবং করিমগঞ্জ জেলায় কমলা সংকেত জারি করা হয়েছে।

করিমগঞ্জে বন্যার পদধ্বনি, বাড়ছে জল

জেলা তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুসারে কুশিয়ারার বিপদসীমা হলো ১৪’৯৪ মিটার। জল ব‌ইছে ১৫’০৩ মিটারের উপর দিয়ে। এক‌ই সঙ্গে সিংলা নদীও বিপদসীমার উপর দিয়ে ব‌ইছে। বিপদসীমা হলো ১৭’৯৮৫ মিটার, জল ব‌ইছে ১৮’১১৫ মিটার উপর দিয়ে। লঙাই নদীর জল ক্রমশ বেড়েই চলছে। 
প্রতিবেদক : মোহাম্মদ জনি, করিমগঞ্জ।

Author

Spread the News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *