একের পর এক স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সেভ এডুকেশন কমিটির

বরাক তরঙ্গ, ১৫ সেপ্টেম্বর : রাজ্যে স্কুল একত্ৰীকরণের নামে একের পর এক স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং তৃতীয় শ্রেণী থেকে বিজ্ঞান ও গণিত মাতৃভাষাতেই পড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করল অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির। বৃহস্পতিবার শিলচরের ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে চলা বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন সরকারি বালক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির কাছাড় জেলা শাখার সভাপতি দীপঙ্কর চন্দ, প্রাক্তন শিক্ষক গৌতম প্রসাদ দত্ত, প্রাক্তন শিক্ষক মলয় ভট্টাচার্য, মন্মথ নাথ, দিলীপ নাথ, তমোজিৎ সাহা, রনজিৎ চন্দ, বিবেক আচার্য, সিরাজুল হুক, ইফতিকার আলম মাঝারভূইয়া সহ বিশিষ্ট জনেরা। বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে বক্তব্য রাখেন অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির কাছাড় ইউনিটের সম্পাদক শ্যামদেও কুর্মী, প্রাক্তন শিক্ষক তথা অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির অসম রাজ্য শাখার সহ-সভাপতি সুব্রতচন্দ্র নাথ ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের সঞ্জীব দেব লস্কর প্রমুখ।

একের পর এক স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সেভ এডুকেশন কমিটির

বক্তারা জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০ এর উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন। তারা বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০ দেশে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যেই তৈরি হয়েছে। এই শিক্ষানীতিতেই ক্লাস্টার স্কুল গঠনের কথা বলে মার্জার প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করার আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে। বক্তারা অসম সরকারের স্কুল একত্ৰীকরণের নামে একের পর এক স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান। তারা বলেন শিক্ষা ছাত্র ছাত্রীদের মৌলিক অধিকার, কিন্তু একত্ৰীকরণের নামে স্কুল বন্ধের ফলে গ্রামের গরিব পরিবারের ছাত্ৰ-ছাত্রীরা পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হবে।
এ ছাড়াও তারা বলেন মাতৃভাষার স্কুলে পরিকাঠামোহীন অবস্থায়, পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ না করে হঠাৎ করে বিজ্ঞান ও গণিত ইংরেজি ভাষায় পড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যত সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ না করে, শিক্ষকদের নানা ধরনের সরকারি কাজে ব্যস্ত রেখে শিক্ষার মানকে তলানিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়াও পাস ফেল প্রথা তুলে দিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষা জীবন ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ফলে অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে তাদের সন্তানদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়েছেন। বর্তমানে অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা অংশের পরিবারের ছাত্ৰ-ছাত্রীরা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হচ্ছে। তাদের পক্ষে সরকারি স্কুলে শিক্ষকের সম্পূর্ণ সহায়তা ছাড়া ঘরে ইংরেজিতে বিজ্ঞান ও গণিত পড়ানো সম্ভব হবে না। তাছাড়া বক্তারা এও বলেন যে মাতৃভাষাতে পড়াশোনা করানোর পক্ষে বিশ্বের সমস্ত শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা মতামত দিয়েছেন। তাই অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটি ছাত্র ছাত্রীদের উন্নত জ্ঞানার্জনের স্বার্থে প্রাথমিক স্কুলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার সপক্ষে সরব রয়েছে কিন্তু শিক্ষার মাধ্যম ছাত্র ছাত্রীদের প্রকৃত বিকাশের স্বার্থে মাতৃভাষাতে রাখার সপক্ষে রয়েছে। আগামীকাল জেলাশাসক মারফত স্মারকলিপি অসমের শিক্ষামন্ত্রী কাছে প্রেরণ করা হবে।

Author

Spread the News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *