বৃষ্টি হয়ে যেন আবার নেমে এলেন জুবিন : গরিমা

বরাক তরঙ্গ, ৩১ অক্টোবর : একঝাক বৃষ্টি হয়ে যেন আবার নেমে এলেন জুবিন। ৩১ অক্টোবর ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে, প্রথম প্রদর্শনীর আগে নামল সেই বৃষ্টি। অসমবাসীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দেখে মনে হলো, ‘রৈ রৈ বিনালে’-এর প্রথম প্রদর্শনীর আগে যেন জুবিন নিজেই বৃষ্টি হয়ে ফিরে এলেন। সেই “জুবিন নামের বৃষ্টি” যেন গোটা অসমকে ধুয়ে মুছে নতুন করে দিল। বৃষ্টি নামতেই ভক্তরা বলে উঠল, “জুবিনদা আমাদের দেখছে।” আবেগে ভেসে গেল সবাই।

প্রথম প্রদর্শনী শেষে চোখ ভেজা আর নীরব মুখে বেরিয়ে এল দর্শকরা। আবেগে ভরা পরিবেশে কেউ কথা বলতে পারল না। এক মহিলা কোলে নয় মাসের শিশুকে নিয়ে, প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও, হাতে ছাতা নিয়ে এসেছেন সিনেমা দেখতে। কণ্ঠ কাঁপিয়ে বললেন, “জুবিনদার জন্যই এসেছি।” বহু প্রবীণ মানুষও সকাল ৪টা ৩০ মিনিটে প্রথম প্রদর্শনী দেখতে হাজির হয়েছিলেন। হাতে লাঠি নিয়ে এসেছেন তাঁরা জুবিনের স্বপ্নের সিনেমাটি দেখতে।

নগাঁওয়ে এক বৃদ্ধা কাঁপা গলায় বললেন, “জুবিন আমার ছেলের মতো ছিল। ভাবতেই পারি না সে নেই। তাকে একবার দেখার আশায় এসেছি।” ডিব্রুগড়ে এক ভক্ত প্রথম প্রদর্শনী দেখে আবেগে বললেন, “শেষবারের মতো প্রভুকে জীবন্ত রূপে দেখলাম।” সত্যিই, গোটা অসম যেন ডুবে গেল জুবিনময় আবেগে। শিবসাগরের ভটিয়াপারার ভাস্করজ্যোতি সিনেমা হলে প্রথম প্রদর্শনীর আগে ভক্তরা একসঙ্গে গাইলেন—“মায়াবিনী রাতিৰ বুকুত।”

সবার চোখে জল। দর্শকদের এমন উচ্ছ্বাস দেখে আবেগে ভেসে গেলেন গরিমা শইকিয়া গর্গ। তিনি বললেন, “জুবিন বৃষ্টি ভালোবাসতেন। আজ সকালের এই বৃষ্টি যেন তাঁর থাকারই আশ্বাস। সিঙ্গাপুর থেকেও ফেরার সময় তিনি বৃষ্টি হয়ে এসেছিলেন। আজ থেকেই শুরু হলো অসমিয়া সিনেমার নতুন জয়যাত্রা।”

জুবিন গর্গের স্বপ্নের সিনেমা ‘রৈ রৈ বিনালে’ আজ, ৩১ অক্টোবর, শুভমুক্তি পেল। গুয়াহাটির মেট্রিক্স সিনেমা হলে ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে শুরু হয় প্রথম প্রদর্শনী। অপরদিকে, লখিমপুরে ভোর ৪টা ৩৫ মিনিটে এবং ধেমাজিতে ৪টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয় প্রথম প্রদর্শনী। হলভর্তি দর্শকের উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে উঠল চারদিক। মুক্তির আগেই রেকর্ড গড়েছে জুবিনের ‘রৈ রৈ বিনালে, রাজ্যের প্রায় সব সিনেমা হলই আগাম সাত দিনের জন্য হাউসফুল।

৯০ বছরের অসমিয়া চলচ্চিত্র ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে জুবিন গর্গের এই স্বপ্নের ছবি ‘রৈ রৈ বিনালে’।

Spread the News
error: Content is protected !!