স্টপেজের দাবিতে জামিরা স্টেশন চত্তরে অনশন, আশ্বাসে প্রত্যাহার

এবি লস্কর, লালা।
বরাক তরঙ্গ, ১০ সেপ্টেম্বর : আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর বহুকাঙ্ক্ষিত সাইরেং-গুয়াহাটি, সাইরেং-দিল্লি ট্রেনের উদ্বোধন হতে চলেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদির হাত ধরে। এনিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্য মিজোরামের সংগে হাইলাকান্দি জেলায়ও খুশির জোয়ার বইছে। দীর্ঘদিনের স্বপ্নের বাস্তবে রূপায়ণ হলেও ট্রেনের স্টপেজ নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ মানুষের মধ্যে। লালা, কাটলিছড়া এবং জামিরা এই তিনটি স্টেশনে ট্রেনের স্টপেজ নিয়ে চলছে আন্দোলন। বুধবার জামিরা স্টেশনে স্টেপেজের দাবিতে অনশন কার্যসূচী পালন করেন স্থানীয় নাগরিক। আপাতত মিজোরাম থেকে সাইরেং- আনন্দবিহার রাজধানী এক্সপ্রেস এবং সাইরেং-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে দুটি চলবে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে। আর এই দু’টি ট্রেনের হাইলাকান্দি জেলার লালা, কাটলিছড়া এবং জামিরায় স্টপেজের দাবিতে রীতিমতো আন্দোলন শুরু হয়েছে৷ এই তিন স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপেজ দেয় নি রেলমন্ত্রক। বুধবার জামিরায় অনশন করে নিজেদের দাবির প্রতি আরও জোর দিলেন জামিরার জনগণ। 

বুধবার সকাল থেকে দিনভর শান্তিপূর্ণ অনশন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। সপ্তাহ খানেক আগে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেন বৃহত্তর জামিরা অঞ্চলের মানুষ। জামিরায় স্টপেজ দাবি করে ইতিপূর্বে  রেল কর্তৃপক্ষকে স্মারকপত্র প্রদান করলেও  কর্তৃপক্ষের নীরবতা ও পদক্ষেপহীনতায় ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে সামিল হন। রেলযাত্রী সুরক্ষা অধিকার সুরক্ষা সমিতির সভাপতি সামসুল হক বড়ভূইয়া অনশনস্থলে উপস্থিত হয়ে জামিরা স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপেজের পাশাপাশি হাইলাকান্দিতে পৃথক দু’জোড়া দৈনিক যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করার দাবি উত্থাপন করেন।স্থানীয় বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্করের প্রতিনিধি হিসেবে কৃষ্ণপুর আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল আহাদ লস্কর অনশনস্থলে  উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের দাবির পক্ষে জোর সওয়াল তুলেন। জামিরা রেলস্টেশন ডেভলাপমেন্ট ডিমান্ট কমিটির সম্পাদক টিংকু হাজাম বলেন, সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হিসাবে পরিচিত জামিরায়  অর্থনৈতিক উন্নয়নে দূরপাল্লার ট্রেন স্টপেজ একান্ত জরুরি।

দক্ষিণ হাইলাকান্দির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত মানুষ ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে  অংশ নেন এবং স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন পুরো এলাকা। আন্দোলনকারীদের দাবি, সদ্য প্রকাশিত সাইরেন থেকে দূরপাল্লার বিভিন্ন ট্রেনের সময়সূচিতে দেখা যায় জামিরা স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন  হলেও এখানে কোনও দূরপাল্লার ট্রেন থামবে না। ফলে ছাত্রছাত্রী, রোগী ও সাধারণ যাত্রীদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে এই দাবি বারবার উপেক্ষিত হওয়ায় অনশনের পথ বেছে নিতে হয়েছে। বিকেল নাগাদ  কাটলিছড়া সার্কলের ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেন তিনি।  আশ্বাস পেয়ে  আপাতত অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনকারীরা। তবে তারা জানিয়েছেন, দাবির সপক্ষে  কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা  না হলে ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

উল্লেখযোগ্য, কৃষি, শিক্ষা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল এলাকা হওয়া সত্ত্বেও পর্যাপ্ত পরিবহন সুবিধার অভাবে জামিরা স্টেশন এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় ভুগছেন। ফলে রেলস্টপেজের দাবি কেবল পরিবহনের সুবিধার প্রশ্ন নয়, বরং এক ধরণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকারেরও প্রতিফলন। অনশনস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দল সংঘটন ও রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা।

Spread the News
error: Content is protected !!