সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলছে ইউনূস সরকার! উদ্বিগ্ন মমতা
১৬ জুলাই : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর এবার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িটি ভাঙার কাজ চলছে। এ নিয়ে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশের ইউনূস সরকারে বাড়িটি না ভাঙার আর্জি জানিয়েছেন। পাশাপাশি ভারত সরকারকেও অবগত করিয়েছেন।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানান, কয়েক দশকের পুরনো ঢাকার হরিকিশোর রায়চৌধুরী রোডে অবস্থিত সত্যজিৎ রায়ের এই পৈতৃক বাড়িটি। সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পৈতৃক সম্পত্তি এটি। এই বাড়ি বাংলাদেশ শিশু আকাদেমির ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হত। ঐতিহাসিক এই স্থানটি এবং বাড়ি ভাঙার কাজ ভারত সরকারকে না জানিয়েই বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে ভাঙা শুরু হয়েছে। যা ঘিরে তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় মঙ্গলবার রাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁর পোস্টের পরেই নড়েচড়ে বসে বিদেশ মন্ত্রক। রাতেই তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে বাড়িটি না ভাঙার আর্জি জানানো হয়েছে।
এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘খবরে প্রকাশ যে, বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদা, স্বয়ং স্বনামধন্য সাহিত্যিক-সম্পাদক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্মৃতিজড়িত তাঁদের পৈতৃক বাড়িটি নাকি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল বলে খবর প্রকাশিত।’
এরপরই মমতা লেখেন, ‘এই সংবাদ অত্যন্ত দুঃখের। রায় পরিবার বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক। উপেন্দ্রকিশোর বাংলার নবজাগরণের একজন স্তম্ভ। তাই আমি মনে করি, এই বাড়ি বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।’
মহম্মদ ইউনূস সরকারের কাছে এরপরই তিনি আর্জি জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকার ও ওই দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন করব, এই ঐতিহ্যশালী বাড়িটিকে রক্ষা করার জন্য। ভারত সরকার বিষয়টিতে নজর দিন।’
মহম্মদ ইউনূস সরকারের কাছে এরপরই তিনি আর্জি জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকার ও ওই দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন করব, এই ঐতিহ্যশালী বাড়িটিকে রক্ষা করার জন্য। ভারত সরকার বিষয়টিতে নজর দিন।’
গতকাল রাতেই একটি বিবৃতি দিয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, বাংলাদেশের ময়মনসিংহে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদা সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পৈতৃক সম্পত্তি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারকে। ভারত ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে এটি পুনর্নির্মাণ করার আবেদন করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, হাসিনা সরকারের পতনের পর কয়েক মাস আগেই বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ভাঙচুর করা হয় বাড়িটি। তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথের বাড়ি ভাঙার খবর জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। এমন কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশে সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রকে কথার বলার আবেদন জানিয়েছিলেন সে সময়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর এবার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িটি ভাঙার কাজ চলছে।
খবর : আজকাল ডট ইন।