যুদ্ধ নয় ভারতের প্রত্যাঘাতেই নাস্তানবুদ পাকিস্তান

।। প্রদীপ দত্তরায় ।।
(লেখক প্রাক্তন ছাত্রনেতা ও গৌহাটি হাইকোর্টের আইনজীবী)
৯ মে : পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি পাঠিয়ে পাকিস্তান হামলা চালানোর পর এর প্রত্যাঘাত করেছে ভারত। লক্ষ্য স্থির করে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানের কোন সাধারণ নাগরিক যাতে মারা না পড়েন সেদিকে নজর দিয়ে কেবলমাত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যেই আঘাত হানা হয়েছে। যদিও পাকিস্তান গলাবাজি করে বলছে তাদের সিভিলিয়ান এলাকায় আক্রমণ করেছে ভারত। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পাক মন্ত্রী লেজে গোবরে হয়ে যাচ্ছেন। ভারত যে সিভিলিয়ান এলাকায় আক্রমণ করেছে এটা প্রমাণ করতে ব্যর্থ পাকিস্তান। এরপর পাকিস্তান যদি যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার মত চেষ্টা করে তাহলে তাদের ভয়ানক পরিনাম ভুগতে হবে। কারণ, গোটা বিশ্বের মানুষ দেখেছে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করেই ভারতের এই প্রত্যাঘাত। পাকিস্তানের দোসর চীন ছাড়া আর কোন দেশই এ নিয়ে ভারতের সমালোচনা করেনি। কোনও কোনও শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত এবং পাকিস্তানকে সংযত থাকতে পরামর্শ দিয়েছে মাত্র। ভারতের প্রত্যাঘাতে বেশ কিছু জঙ্গির মৃত্যু হলেও মুম্বাই হামলার মাস্টারমাইন্ড মাসুদ আজহার এখনো জীবিত। তাকে নিধন না করা পর্যন্ত ভারত এ ধরনের লক্ষ স্থির করে এ ধরনের হামলা চালিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর প্রত্যুত্তরে পাকিস্তান ভারতের জনবসতি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে বেশ কিছু মানুষকে খুন করেছে। কারণ, ওই রাষ্ট্রটি কোন নীতি নিয়মের তোয়াক্কা করে না। ওই দেশের সেনা এবং জঙ্গির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। অর্থাৎ ওই দেশের সেনারাই জঙ্গি এবং জঙ্গিরাই সেনা সেটা প্রমাণ হয়ে গেছে। নিহত জঙ্গির জানাজার নামাজে জঙ্গির উপর পাক পতাকা চাপিয়ে দেওয়া এবং সেনা জওয়ানরা তাতে সামিল হওয়ার মধ্যে দিয়ে এই সত্যটা প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। সারা বিশ্বের সামনে এ বিষয়টা এখন খোলসা হয়ে গেছে।

পাকিস্তানের মতো জঙ্গি প্রতিপালক দেশের সঙ্গে ভারতের কোন তুলনাই হয় না। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এই দেশ সব সময়ই একটা নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে বিশ্বের মঙ্গল কামনা করে এসেছে। স্বাধীনতার পর বিশ্ব যখন বিভিন্ন শক্তিধর রাষ্ট্রের জোটের শরিক হয়ে দাঁড়ায় সে সময়ে ভারত জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিয়ে গড়ে ওঠা এই জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন বিশ্বের অগণিত মানুষকে পথ দেখাতে সমর্থ্য হয়। সারা বিশ্বে শান্তি কায়েমের পক্ষে ভারতের অঙ্গীকার রয়েছে এর পাশাপাশি রয়েছে বিশ্বকে সন্ত্রাসমুক্ত করে তোলার প্রয়াস। সন্ত্রাসবাদী শক্ত শক্তিকে-নিকেশ করার জন্য ভারত প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা সবাই দেখছেন বুঝছেন। ভারত শক্তিশালী দেশ নিজেকে নিয়ন্ত্রণে এবং সংযত রাখতে জানে। পাকিস্তানের যুদ্ধ প্ররোচনার ফাঁদে ভারত পা দিতে রাজি নয়। বর্তমান পাক সেনা প্রধান আসিম মুনির যুদ্ধ বাধাতে চাইছেন। পহেলগাঁওয়ে হামলাও তারই মস্তিষ্কপ্রসূত এটাও প্রকাশ্যে এসে গেছে। পাকিস্তানের এই এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা অধিকর্তা এ কথাটা বলেছেন। পাক সেনাপ্রধানের উদ্দেশ্য হল যুদ্ধ বেধে গেলে কিছু অস্ত্রশস্ত্র কিনতে হবে এবং সেই অস্ত্র কেনার ছুতো ধরেই সরকারি অর্থ তছরুপ করে তিনি সময় বুঝে পাকিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যাবেন। অন্যান্য পাক সেনা আধিকারিকরা একই কাজ করে এসেছেন। অবসরের পর কোন পাক সেনা কর্তা পাকিস্তানে থাকেন না তারা সব কানাডায় পাড়ি দেন। মুনিরও একই পথের যাত্রী।

পহেলগাঁওয়ের নারকীয় সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে  অপারেশন সিন্দুর অভিযান চালিয়ে ভারত পাকিস্তানকে নাস্তানুবুত করে দিয়েছে। পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছে। এই অভিযানে নিহত হয়েছে ৮০-র বেশি জঙ্গি, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ২৬/১১ মুম্বই হামলার সংগঠকদের ঘনিষ্ঠ বলে  জানা গেছে। গভীর রাতে ভারতের দুই বীরাঙ্গনা সোফিয়া কুরেশি এবং ভুমিকা সিংহের নেতৃত্বে মাত্র ২৫ মিনিটের এই অভিযানে নয়টি জঙ্গি শিবির ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এবার কিন্তু এই হামলার পুরো ভিডিও সেনাই তুলে রেখেছে। কারণ , উরি হামলার পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং পুলোমাওয়া হত্যাকাণ্ডের পর বালাকোটে বিমান হামলা নিয়ে ভারতেরই কিছু রাজনৈতিক দল প্রশ্ন তুলেছিল। তাদের সন্দেহ ছিল আদৌ ভারতীয় সেনাবাহিনী এসব করেছে কিনা। এই সংশয়ের অবসান ঘটাতেই এবার প্রত্যাঘাতের ঘটনাকে ভিডিও করে রাখা হয়েছে। এই হামলার সময় বাঘ সেনা ঘাটি গুল গুলোকে লক্ষ্য করা হয়নি। কারণ, ভারত যুদ্ধের প্ররোচনা দিতে রাজি নয়। এখন পাকিস্তান যদি অন্যান্য বারের মতো ভারতের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় তখন নিরুপায় হয়ে ভারতকে এতে যুক্ত হতে হবে। তবে এবার যুদ্ধ হলে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব  সংকটে পড়বে। একমাত্র চীন ছাড়া যুদ্ধ লেগে গেলে পাকিস্তানের পাশে এসে দাঁড়াবে এমন কোন শক্তি নেই। ভারতকে সমর্থন দেবে এমন অনেক দেশ হয়ে গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অন্তর্গত নানা দেশ সমর্থন করবে আর যুদ্ধ লাগার আগেই ইজরায়েল তো জানিয়ে দিয়েছে ভারতকে তারা সমর্থন করছে এবং করে যাবে। চিন প্রথম দিকে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে কথা বললেও এখন ক্রমশই নিজের অবস্থান সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কার্যত পাকিস্তানি এখন এক ঘরেই বলা চলে।

পাকিস্তানের ভিতরে এখন হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। লাহোর, করাচি এবং রাওয়ালপিন্ডিতে একেরপর এক বিষ্ফোরণ ঘটে চলেছে। এটা বালোচ বিদ্রোহীদের কাজ না পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ কোন শক্তির কাজ এটা এখনো নিশ্চিত হতে পারছে না পাকিস্তান। আবার এইসব বিস্ফোরণের পেছনে ভারতের হাত বলেও প্রচার করতে পারছে না। রাওয়াল পিন্ডিতে সেনা সদর দপ্তরের কাছেই বিস্ফোরণের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ওই দেশের মানুষ এই প্রশ্ন তুলছে কোথায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাক নাগরিকরাই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ভেঙে পড়ায় পাক সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান প্রত্যাঘাত চালাতে ড্রোন এবং মিসাইল ছুড়েছিল। কিন্তু ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস ৪০০ সুদর্শন চক্র পাক ড্রোন এবং মিসাইলকে আকাশে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই মিসাইল হামলার পাল্টা হিসাবে ভারত সীমান্ত এলাকায় মিসাইল ছুড়ে দিয়েছে।

যুদ্ধ নয় ভারতের প্রত্যাঘাতেই নাস্তানবুদ পাকিস্তান

ভারত পাক যুদ্ধের আবহে আরেকটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কে তাদের সুর পাল্টে নিয়েছে। বর্তমান তথ্যাবদায়ক সরকারের প্রধান মোহাম্মদ ইউনুস চিনে গিয়ে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলকে কব্জা করার যে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, তাতে জিন তেমন একটা সাড়া দেয়নি। ভারতের প্রত্যাঘাতের সময় পাকিস্তানের ব্যবহার করা চিনের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পুরোপুরি বিফল হয়ে গেছে। এটা বাংলাদেশকে যথেষ্ট আশাহত করেছে। তাছাড়া চিন যেভাবে পাকিস্তানের পেছন থেকে সরে যাচ্ছে তাতে বাংলাদেশ যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বললে ভুল হবে না। তাই এখন সুর বদল করে ইউনুস বলছেন ভারত বাংলাদেশের ভালো বন্ধু রাষ্ট্র। এর পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশিকা জারি করেছেন। ভারতের সফল কূটনীতির ফলে বাংলাদেশ যথেষ্ট চাপের মধ্যে নিজেদের অবস্থান ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। পাকিস্তানকে সমর্থন করা তো দূরের কথা সম্পর্ক রাখবে কিনা এ নিয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

যুদ্ধ নয় ভারতের প্রত্যাঘাতেই নাস্তানবুদ পাকিস্তান

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের কেন্দ্রে যে সংঘাতের আগুন জ্বলছে, তা শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার সূচনালগ্নেই। ১৯৪৭ সালে প্রথম কাশ্মীর যুদ্ধ শুরু হয়। ব্রিটিশ ভারতের বিভাজনের ঠিক পরই কাশ্মীর হয়ে ওঠে সংঘর্ষের কেন্দ্র। পাকিস্তান-সমর্থিত উপজাতীয় আক্রমণের মুখে ভারত সেনা পাঠায়। যুদ্ধ শেষে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে গঠিত হয় লাইন অফ কন্ট্রোল। কাশ্মীর ভাগ হয়ে যায়।এক ভাগ ভারতে বাকি অংশ চলে যায় পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে। সে অংশ এখনো পাক অধিকৃত কাশ্মীর হিসেবে পরিচিত। ১৯৬৫ সালে দ্বিতীয় ভারত-পাক যুদ্ধ লাগে। পুরো কাশ্মীর  দখলে পাকিস্তান অপারেশন গিব্রাল্টারীর মাধ্যমে কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে সীমান্ত অস্থির করে তোলে। ভারতের সামরিক প্রতিক্রিয়ায় পুরো পশ্চিম সীমান্ত জুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তাসখন্দ চুক্তিতে যুদ্ধবিরতি হলেও সম্পর্কের ফাটল গভীর হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও তৃতীয় ভারত-পাক যুদ্ধ হয়। পূর্ব-পাকিস্তানে গণহত্যা ও শরণার্থীদের ঢল ঠেকাতে ভারত হস্তক্ষেপ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিজয় ও পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। এরপর ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধ শুরু হয়। জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে পাকিস্তানের সেনার অবাঞ্ছিত অনুপ্রবেশ ঘটে। ভারতীয় সেনার অপারেশন বিজয়-এর মাধ্যমে পাহাড়ি এলাকা পুনর্দখল করতে সমর্থ্য হয়। ২০১৬ সালে উরিতে ভারতীয় সেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পরে, ভারত প্রথমবারের মতো সীমান্ত পেরিয়ে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালায়। জঙ্গি খাঁটিতে নির্ভুল হামলা করে ভারত বিশ্বের সামনে নতুন কৌশল তুলে ধরে। ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় হামলা চালিয়ে ৪০ ভারতীয় জওয়ানের প্রাণ নেয়। পুলওয়ামা হামলার জবাবে, ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বালাকোটে বোমা বর্ষণ করে। স্বাধীনতার পর প্রথমবার পাকিস্তানের গভীরে ঢুকে বিমান হানা চালায় ভারত। ২০২৫ সালে পহেলগাঁওয়ের বর্বর হামলার পরে মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয় ভারত। অপারেশন সিঁদুর অভিযানে প্রযুক্তি, সময়ানুগত্য ও সুনির্দিষ্টতা, সব পূর্ণমাত্রায় ছিল।

পাকিস্তানের সঙ্গে যদি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ বেধে যায় তাহলেও ভারতের যতটা ক্ষতি হবে তা হয়তো ভারত পুষিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু পাকিস্তান আর কখনো কমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না। এর লক্ষণ দেখা গেছে ওই দেশের ভিতরেই বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।  বালোচিস্তান নামক পৃথক রাষ্ট্র গঠনের কুচকাওয়াজ শুরু হয়ে গেছে পাকিস্তানের ভিতরে। যুদ্ধের আবহেই হয়তো পৃথক রাষ্ট্রটি গঠিত হয়ে যাবে। প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা শাহবাজ শরীফের বিরুদ্ধে ময়দানে নেমেছে। তারা যুদ্ধ ডেকে আনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করছেন। কাজেই ভিতরে বাইরে উভয়ের ক্ষেত্রেই পাক প্রশাসন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ভারতের অভিযানের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের কোন দেশই পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়নি বরং অনেকে ভারতকেই সমর্থন করছে। কারণ পাকিস্তানের কার্যকলাপ সভ্য দুনিয়ার জন্য উপযুক্ত নয় এটা সবাই উপলব্ধি করতে পারছে। ভারতের ভিতর এ ধরনের কোনো অনৈক্য নেই। সবগুলি রাজনৈতিক দল জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন করছে। পাকিস্তান সরকার ভারতের প্রত্যাঘাত কে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করে ভারতীয় মুসলমানদের মন জয় করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এই টোটকা কোনো কাজে আসেনি। কারণ জঙ্গি নির্মূল অভিযান অপারেশন সিঁদুর চালাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যে দুই মহিলা তার মধ্যে একজন মুসলমান সম্প্রদায়ের। এই সোফিয়া কুরেশি তার বাবা এবং তার ঠাকুরদা সবাই ভারতীয় সেনায় যুক্ত ছিলেন। এটাই প্রমাণ করে যে ভারতের মুসলমানরা রাষ্ট্রের হিতে সরকারের পদক্ষেপকে প্রকাশ্যে সমর্থন করছেন। ফারুক আব্দুল্লাহ, ওমর আব্দুল্লাহ, আসাদুদ্দিন ওয়েসি সহ দেশের বিশিষ্ট ইসলামিক পণ্ডিতরা ভারতের নীতিগতভাবে জঙ্গি নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে হাঁটছে তাকে সমর্থন করছেন। দেশের ভিতর কিছু অসৎ ব্যক্তি পাক সমর্থন প্রকাশ করে বিশৃঙ্খলা বাধাতে চাইলেও অধিকাংশ মানুষ এর বিরুদ্ধেই রয়েছে। খুব অল্প সংখ্যক সরকার বিরোধী মনোভাব নিয়ে পাক সমর্থনে গোলাবাজি করলেও তা বৃহত্তর জনসমাজে ধীকৃত হয়েছে। ভারতীয় মুসলিমদের ধর্মীয় বিভাজনের ফাঁদে ফেলে পাকিস্তান যে নীল নকশা রচনা করেছিল তা পুরোপুরি বিফল হয়ে গেছে। কারণ ভারতীয় মুসলিমরা সন্ত্রাসের পক্ষে নয়। এই সন্ত্রাস নির্মূল কর্মকাণ্ডে ভারত যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা প্রকারান্তরে বিশ্ব শান্তির জন্যই প্রয়োজন। সন্ত্রাসের শিকার রাষ্ট্রগুলি একথা অস্বীকার করতে পারবে না।

Author

Spread the News