বিশেষ ভাবে সক্ষম ছাত্রীর পাশে দাঁড়াল কিশোরী

বরাক তরঙ্গ, ১২ নভেম্বর : মেয়েটির নাম দিব্যা হাজাম। বয়স ১২ বছর।  হাইলাকান্দি জেলার লালপানি অঞ্চলের দীপক হাজাম ও সুশীলা হাজামের দ্বিতীয় কন্যা। মেয়েটির বয়স যখন তিন বছর ছিল তখন ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হলে, মেয়েটি ধীরে ধীরে ভাল করে  চলাফেরার শক্তি হারিয়ে ফেলে। মেয়েটির পরিবারবর্গ ওকে নিয়ে চলাফেরা করতে দুর্ভোগে পড়ে ছিলেন। মেয়েটি স্থানীয় একটি স্কুলেও পড়ে। কিন্তু নিজের পায়ে চলাফেরা করতে পারেনি মেয়েটি। এজন্য বহুদিন থেকে তারা সরকারি সাহায্যের আশায় ছিলেন। তাছাড়া মেয়েটি ধীরে ধীরে বড়ও হচ্ছে। এজন্য এলাকার বিশিষ্ট নাগরিক তথা শিক্ষক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী একটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে দিতে সক্ষম সংস্থার সভাপতি শংকর চৌধুরীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সেই মতে শংকরবাবু অনেকেরেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন।

শেষ পর্যন্ত দীপাবলির প্রাকমুহূর্তে আশ্রম রোডের বিশিষ্ট সংস্কৃতিকর্মী মণিময় সিনহাকে একথা জানালে তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান। পরবর্তীতে নবম শ্রেণিতে পাঠরত তাঁর কন্যা বাগিশ্বরী সিনহা ও এতে সামিল হয়। সে এবছর  এবছরের দীপাবলিতে বাজি পটকা না পুড়িয়ে টাকা বাঁচিয়ে  বাবার হাতে তুলে দেয়। মণিময়বাবুর সঙ্গে অতিরিক্ত টাকা যোগ করে একটি উন্নতমানের একটি হুইলচেয়ার অনলাইনে কেনেন। আর রবিবার  জগদ্ধাত্রী পূজা উপলক্ষে লালপানি সেবা সংঘের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষের  জগদ্ধাত্রী পূজায় উপস্থিত হয়ে  মেয়েটি কে উপহার হিসেবে বাগীশ্বরী তুলে দেয় এই চেয়ারটি। সঙ্গে বাগিশ্বরীর বাবা মণিময় সিনহা মা বিনতা সিনহা, শংকর চৌধুরী, শিক্ষক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী সহ  লালপানি সেবা সংঘের কর্মকর্তা এবং মেয়েটির পরিবারবর্গ তখন পূজা মণ্ডপে উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত বাগীশ্বরী এই চেয়ারটি নিজের প্রয়াত ঠাকুরদা অধ্যাপক ব্রজেন্দ্রকুমার সিনহা ও ঠাকুমা সুখদা সিনহার স্মৃতিতে প্রদান করেন।

বিশেষ ভাবে সক্ষম ছাত্রীর পাশে দাঁড়াল কিশোরী

এই চেয়ারটি পেয়ে পরিবারের সবাই আনন্দিত। কথা প্রসঙ্গে জানা গেল আর্থিক অনটনের জন্য মেয়েটির নিয়মিত ফিজিও থ্যারাপি হচ্ছে না। হলে হয়তো মেয়েটি একদিন হুইল চেয়ার ছাড়াই দৌঁড়াতে পারবে। কিন্তু এজন্য চাই নিয়মিত ফিজিও থ্যারাপি। কিন্তু পেশায় ক্ষৌরকর্মী দিব্যার পিতার পক্ষে সবসময় মেয়ে কে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া আর্থিক অনটন ও একটি বড় ব্যাপার। মেয়েটির উন্নত চিকিৎসা অভাবে দিব্যাঙ্গের জীবন ভোগ যেন না করে তাই তার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান শংকর চৌধুরী। 

বিশেষ ভাবে সক্ষম ছাত্রীর পাশে দাঁড়াল কিশোরী

Author

Spread the News