উচ্ছেদের নামে অমানবিক ও বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধের দাবি সংগ্রাম কমিটির
বরাক তরঙ্গ, ২৯ জুলাই : রাজ্যের প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের সরকারি খাস জমি থেকে উচ্ছেদের নামে যে অমানবিক ও বেআইনি কার্যকলাপ চলছে তা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানালো নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সংগ্রাম কমিটি। মঙ্গলবার এ দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দু’টি পৃথক স্মারকপত্র কাছাড় জেলার কমিশনার মৃদুল যাদবের মারফতে প্রদান করে নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সংগ্রাম কমিটি আসাম-এর কেন্দ্রীয় কমিটি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রদান করা স্মারকপত্রে দাবি জানানো হয় রাজ্যের দরিদ্র এবং অসহায় প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের পুনর্বাসনের সুযোগ ও তাদের অগ্রিম নোটিশ প্রদান না করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বল প্রয়োগের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা চলবে না।
উচ্ছেদ অভিযানের তীব্র বিরোধিতা করে বলা হয়, রাজ্যের কোথাও বিদেশি নাগরিক থাকলে নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের সনাক্ত করে তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে টার্গেট করে বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এসব কার্যকলাপের ফলে দেশের সংবিধানের মূল সিদ্ধান্ত এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশাবলীর অবমাননা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
অনুরূপভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া স্মারকপত্রে বলা হয় যে অবিলম্বে ভারতের রেজিস্টার জেনারেলকে এনআরসি এর নোটিফিকেশন জারি করে অসমের ৩ কোটি ১১ লক্ষ নাগরিকের নাগরিকত্বের বৈধতা প্রদানের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাছাড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়া ১৯ লক্ষ নাগরিকদের রিজেকশন স্লিপ প্রদান করে পূর্ণাঙ্গ ন্যায়িক প্রক্রিয়ায় তাদের নাগরিকত্ব যাচাইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতের নির্বাচন কমিশনার অসমেও ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের প্রস্তুতি নেওয়ার খবরের তীব্র বিরোধিতা করে বলা হয় যে যেহেতু ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ১৬০০ কোটি টাকা সরকারি অর্থ ব্যয়ে জনগণের নাগরিকত্ব প্রমাণের নথি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে এর ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ৩১শে আগস্ট এনআরসি এর চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয় তাই অসমে বিহারের মতো বিশেষ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন করে সরকারি অর্থের অপচয় এবং জনগণকে অহেতুক হয়রানির মুখে ঠেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছু লাভ হবে না।
স্মারকপত্রে এও উল্লেখ করা হয় সুপ্রিম কোর্টে এখন আর এনআরসি সংক্রান্ত কোন মামলা নেই তাই আরজিআই এর এনআরসির নোটিফিকেশন জারির ক্ষেত্রেও কোনও বাধা নেই। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য এতবড় নথি যেখানে আরজিআই এর হাতে রয়েছে তাই ভারতের নির্বাচন আয়োগকে আসামের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের করানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। স্মারকপত্রে এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানানো হয়েছে। স্মারকপত্র দুটোতে স্বাক্ষর করেন নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় কমিটি, আসাম এর কো-চেয়ারম্যান সাধন পুরকায়স্থ, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি যথাক্রমে শিহাব উদ্দিন আহমেদ, সুব্রতচন্দ্র নাথ, অন্যতম সম্পাদক আইনজীবী আব্দুল হাই লস্কর, আইনজীবী আলি রাজা ওসমানি এবং সঞ্জীব রায়।