শিলচর ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণে আদৌ আগ্রহী রাজ্য?
।। প্রদীপ দত্ত রায় ।।
(লেখক প্রাক্তন ছাত্রনেতা ও গৌহাটি হাইকোর্টের আইনজীবী)
৫ নভেম্বর : শিলচর রেলওয়ে স্টেশনকে ভাষাশহিদ রেলস্টেশন নাম করার দাবিতে রাজ্য সরকারের মনোভাব বরাবরুই নেতিবাচক। না হলে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয় এই নামকরণের অনুমোদন দিলেও শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের অনীহার জন্য এটা আটকে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই ইস্যুতে জোড় গলায় বলেছেন রাজ্য সরকার এনওসি দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এখানে এনওসি দেওয়ার কোনও বিষয় জড়িত নেই। ২০১৫ সালে কেন্দ্র রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল ভাষা শহিদ স্টেশন শিলচর নামকরণের বানানটা কেমন হবে তা অনুমোদন করে কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে। কিন্তু এ চিঠির কোনো জবাব রাজ্য সরকার আজ অবধি দেয়নি। ফলে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক। শিলচর রেলস্টেশনকে ভাষা শহিদ স্টেশন করার দাবিটি দীর্ঘদিনের হলেও এটা যাতে বাস্তবায়িত না হয় সেজন্য নানাভাবে প্যাঁচ কষা হচ্ছে। সম্প্রতি ডিমাসা লেখক ফোরামের সভাপতি মুক্তেশ্বর ক্যাম্প্রাই নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে ১৯৬১ সালের ভাষা আন্দোলনকারীদের বাংলাদেশী আখ্যা দেওয়ানো হয়েছে। দেওয়ানো হয়েছে এজন্যই বলছি কারণ, তার ভাষায় রাজ্য সরকারের সুর বাজছে। ওই ব্যক্তির হয়তো জানা নেই ৬১’র ভাষা আন্দোলনের বাঙালিদের সঙ্গে মণিপুরি, ডিমাসা, চা-বাগান সম্প্রদায় সহ অন্যান্য জনজাতি জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। এমন একটি সংবেদনশীল ইস্যুতে বেফাঁস মন্তব্য বরাক উপত্যকার আমজনতার মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে এটা অনুমান করা কঠিন নয়। যদিও অসমের ডিমাসা সাহিত্য পরিষদ ক্যামপ্রাইর বক্তব্য খণ্ডন করেছে। পরিষদ স্পষ্টই বলেছে ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণের সঙ্গে কোনো নির্দিষ্ট ভাষিকগোষ্ঠীর কোনও লাভ ক্ষতির বিষয় জড়িত নেই। ৬১ সালের আন্দোলনে ডিমাসাদের সমর্থন ছিল এ কোথাও তাদের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট। শিলচর রেল স্টেশনের নাম ভাষা শহিদ স্টেশন হলে কোনভাষিক গোষ্ঠীর এতে কোন ধরনের লাভ বা ক্ষতি নেই। বরং ভাষার অস্তিত্ব রক্ষার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে নিরীহ যে ১১ জন ব্যক্তি শহিদ হয়েছিলেন তাদের সেই আত্মত্যাগের যথার্থ মূল্যায়ন এই নামকরণের মধ্যেই হতে পারে। সর্বশেষ অসম সাহিত্য সভার কেন্দ্রীয় সভাপতি বসন্তকুমার গোস্বামী নিজে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে চিঠিও লিখেছেন। বসন্ত গোস্বামী এই চিঠি লেখার পর হঠাৎ করে ভুইফোড়ের মত উদয় হয়েছে ডিমাসা লেখক ফোরাম নামক সংগঠনের। এই সংগঠনটি গড়ে তোলার পিছনে কে কলকাঠি নাড়ছে সেটা বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। কারণ যেন তেনো প্রকারে ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণকে আটকে দেওয়া রাজ্য সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এই বাস্তব সত্যকে বরাক উপত্যকার শাসকদলের সদস্যরা অস্বীকার করতে পারবেন না। তবে তারা রাজনৈতিক কারণেই মুখ খুলে এ নিয়ে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করেন।
অসম সাহিত্য সভার প্রতিনিধি দল শিলচর রেলওয়ে স্টেশনকে ভাষা শহিদ স্টেশন করার দাবিকে সমর্থন করেছেন। শহিদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদনের পর সাহিত্য সভার সভাপতি বসন্তকুমার গোস্বামী বলেছেন, তিনি এই দাবি যাতে পূরণ করা হয় সেজন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন। তার এই ইতিবাচক মনোভাব খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন এবং এ বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং রেল মন্ত্রক যে অনুমোদন জানিয়েছিল এর প্রতিলিপি ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দিয়েছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে বলেছেন রাজ্য সরকার এর আগেই এনওসি পাঠিয়ে দিয়েছে। এক্ষেত্রে কথা এবং কাজে কোন মিল আছে বলে মনে হয় না। রাজ্য সরকার বরাক উপত্যকার মানুষের ভাবাবেগের কোনও মূল্য দিতে রাজি নয়, তাদের আচরণ এটি প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। অসম সাহিত্য সভার মত একটি সর্বজন গ্রাহ্য সংগঠন যখন দুই উপত্যকার মধ্যে মানসিক দূরত্ব দূর করার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে এসেছে। তখন রাজ্য সরকার কিন্তু তার অবস্থান থেকে এক চুলও নড়েনি। এই ইস্যুটাকে জটিল করে রেখে কি ধরনের রাজনৈতিক মুনাফা আদায়ের ফন্দি আটছে তা বোঝা কঠিন।
১৯৬১ সালের ১৯শে মে মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলনে বরাক উপত্যকার এগারো জন বীর সন্তান শিলচর রেলস্টেশনে শহিদ হন। তারা ছিলেন নিরস্ত্র নাগরিক— ছাত্র, শ্রমিক— অহিংসার আদর্শে অনুপ্রাণিত, যাদের মধ্যে ছিলেন ষোলো বছরের স্কুলছাত্রী কমলা ভট্টাচার্য, যিনি ভারতের প্রথম মহিলা ভাষা শহিদ। এই শহিদরা কোনো সম্প্রদায় বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে নয়, বরং ভারতের সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ভাষাগত পরিচয়ের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন। তাদের আত্মবলিদান বরাক উপত্যকাকে স্বাধীনোত্তর ভারতের একমাত্র অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যেখানে নাগরিকরা মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার জন্য শহিদ হয়েছিলেন। তাদের সংগ্রাম ছিল গণতান্ত্রিক, অহিংস ও গান্ধীবাদী। এই আন্দোলনকে সাম্প্রদায়িক বা সংকীর্ণ বলে চিহ্নিত করা মানে ভারতের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মূলে আঘাত করা। এই আন্দোলন বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষার জন্য ছিল না। এই আন্দোলন ছিল বরাকে বসবাস করা প্রতিটি জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলন। যার ফলে এই আন্দোলনে প্রতিটি জনগোষ্ঠীর মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। নিরীহ মানুষের উপর পুলিশের গুলি চালানোর প্রতিবাদে তৎকালের সোনাই বিধানসভা কেন্দ্রের বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরী জনগোষ্ঠীর বিধায়ক নন্দকিশোর সিনহা পদত্যাগ পর্যন্ত করেছিলেন। এটাই বুঝিয়ে দেয় ওই সময়কার আন্দোলন কোনো নির্দিষ্ট ভাষিকগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার আন্দোলন ছিল না। সেটা ছিল রাজ্য সরকারের এক ভাষা নীতি জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তাই শিলচর রেলস্টেশনের নাম “শিলচর ভাষা শহিদ স্টেশন” রাখার প্রস্তাব কোনো আঞ্চলিকতা বা ভাষাগত আধিপত্যের প্রতীক নয়— এটি ন্যায়বিচার ও শহিদদের প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রতীক। যেমন ভারত গর্বের সঙ্গে বিমানবন্দর, সড়ক ও প্রতিষ্ঠানগুলির নাম রাখে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, শহিদ ভগৎ সিং ও মহাত্মা গান্ধীর নামে, তেমনি শিলচরও তার শহিদদের সম্মান জানানোর অধিকার রাখে, যারা সংবিধানের আত্মাকে শান্তিপূর্ণ আত্মত্যাগের মাধ্যমে রক্ষা করেছিলেন।যে স্টেশনে এগারোটি নির্দোষ প্রাণ হারিয়েছিল, সেটি কেবল একটি রেলস্টেশন নয়; এটি ভাষাগত গণতন্ত্রের স্মৃতিস্তম্ভ— এক পবিত্র ভূমি, যা জাতীয় ঐতিহ্যের মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য। যেমন জালিয়ানওয়ালাবাগ আমাদের উপনিবেশিক নিষ্ঠুরতার কথা স্মরণ করায়, তেমনি শিলচর রেলস্টেশন স্বাধীন ভারতের ভাষাগত ন্যায়ের পবিত্র স্মারক হিসেবে চিহ্নিত। “শিলচর ভাষা শহিদ স্টেশন” নামকরণের পিছনে কোনো সংকীর্ণ রাজনীতি যুক্ত নয়। বরং এটা ভাষাগত স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার ও বৈচিত্র্যের ঐক্যের প্রতীক। এটি কোনো ডিমাসা, অসমিয়া বা অন্য ভাষিক গোষ্ঠীর ঐতিহ্যকে খর্ব করে না; বরং বরাক উপত্যকার সেই সহাবস্থানের ইতিহাসকে উদযাপন করে যেখানে বিভিন্ন জাতি জনজাতির গৌরবময় সংস্কৃতি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সম্প্রীতিতে বসবাস করেছে।
বাংলা ভাষা বরাক উপত্যকার বহিরাগত নয়; এটি এই ভূমির নিজস্ব সাংস্কৃতিক ও প্রশাসনিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।ষোড়শ শতাব্দীতে, যখন ডিমাসা কছারী রাজারা মাইবাং-এ তাদের রাজধানী স্থাপন করেন, তখন ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে সেখানে আবিষ্কৃত শিলালিপিটিও বাংলা লিপিতে লেখা ছিল। সমস্ত রাজকীয় দলিল— আইন, জরিমানা, ভূমি রেকর্ড ও চুক্তিপত্র— বাংলা ভাষায় রক্ষিত হতো। অতএব, বাংলা কেবল কথ্য ভাষা নয়, এই অঞ্চলে আইন, প্রশাসন ও সভ্যতার ভাষা ছিল— আধুনিক আসামের জন্মের বহু পূর্বে থেকেই। ডিমাসা রাজারা, রাজকার্য পরিচালনা এবং পূজা পার্বণের জন্য তৎকালীন সমতট অঞ্চল থেকে বাঙালিদের এনে সংস্থাপন দিয়েছিলেন। ফলে, ডিমাসা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাঙালিদের আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এখনও বহমান। কাজেই এই দু’টি জনগোষ্ঠীকে কোনও রাজনৈতিক ন্যাস্ত স্বার্থ আদায়ের জন্য পরস্পরকে লড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না। কিছু কিছু মানুষ আবেগের বসবর্তী হয়ে কিছু উল্টোপাল্টা মন্তব্য করে ফেলতে পারে। কিন্তু বৃহত্তর ক্ষেত্রে সংঘাতের পরিবেশ রচনা করা এত সহজ হবে না। এর আগেও রেলওয়ে স্টেশনের নামকরণকে কেন্দ্র করে আরেকটি সংগঠনকে দিয়ে এই রেলস্টেশনকে বীর শম্ভুধন ফংলোর নামে নামকরণের দাবি তোলা হয়েছিল। আমরা বরাকের সব জনগোষ্ঠীর মানুষ বীর শম্ভুধন ফংলোকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি— যিনি ১৮৮৩ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে বীরোচিত লড়াই করেছিলেন। তাঁর অবদান ভারতের গৌরবময় স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশ। কিন্তু তাঁর নাম ব্যবহার করে ১৯৬১ সালের ভাষা শহিদদের স্মৃতিকে আড়াল করা যায় না। দুই সংগ্রামই পবিত্র— একটিতে বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে, অন্যটিতে গণতান্ত্রিক ভারতের প্রশাসনিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে— কিন্তু এদের তুলনা করা যায় না।বীর শম্ভুধন ফংলোর নামে অন্য কিছুর নামাকরণ করলে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু রেলস্টেশনকে ভাষা শহিদের নাম করাটাই যুক্তিযুক্ত। কারণ এতে কারো কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অসম সরকার ৬১ সালের ভাষা আন্দোলনকারীদের এখনও ভাষা শহিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ওই বছর শিলচর রেলস্টেশনে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার তদন্তের জন্য যে মেহরোত্রা কমিশন গঠন করা হয়েছিল এর রিপোর্ট আজ অব্দি প্রকাশ করা হয়নি। এখানেই রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। কমিশনের ওই রিপোর্ট প্রকাশ পেলে রাজ্য সরকারের গাফিলতি ধরা পড়ে যেত। সেই রিপোর্ট প্রকাশের পরিবর্তে বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ৬১ ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে খোলাখুলি জানিয়ে দেন, ওই বছর পুলিশের গুলিতে রেলওয়ে স্টেশনে নিহতরা দুষ্কৃতি। এটাই হলো রাজ্য সরকারের প্রকৃত মনোভাব। যে নিরীহ মানুষগুলো রাষ্ট্রের নিপীড়নের শিকার তাদের দুষ্কৃতি বলে অপবাদ দেওয়া এর চেয়ে নিকৃষ্ট মনোভাব আর কি হতে পারে। পূর্ববর্তী রাজ্য সরকারগুলির মতোই বর্তমান রাজ্য সরকারের ভাষা শহিদদের স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে যে অনীহা রয়েছে তা পদে পদে প্রমাণ মেলে। যারা ভাষা শহিদদের শহিদ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি নয় , তারা কিভাবে রেল স্টেশনের নাম ভাষা শহিদ স্টেশন করায় সাড়া দেবে এটার বড় প্রশ্ন। তাই যখনই রেল স্টেশনের নাম বদলের প্রস্তাব আসছে তখনই নানা ছল ছুতোয় তা আটকে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার কলকাঠি নেড়ে চলেছে। এর আগেও ভুঁইফোর সংগঠনের নামে আপত্তি তোলা হয়েছিল। উদ্দেশ্য অযথা জটিলতা সৃষ্টি করে ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণকে আটকে দেওয়া। কিন্তু নিয়ম হলো যে কোনো জায়গার যেকোনো মানুষ এ বিষয়ে আপত্তি তুলতে পারে না। সংশ্লিষ্ট এলাকার সিংহভাগ মানুষ যদি এই দাবির প্রতি সমর্থন জানায় তাহলে তাকে অগ্রাহ্য করা অগণতান্ত্রিক এবং অনৈতিক বলে মনে করা যেতে পারে। বর্তমান রাজ্য সরকার কোনো নিয়ম-কনুন মানতে রাজি নয়। সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা মুখে এক কথা বলেন কিন্তু কাজ করেন ঠিক তার উল্টো। না হলে শিলচর স্টেশনে ভাষা আন্দোলনের শহিদদের দুষ্কৃতী বলার মত ধৃষ্টতা দেখানোর ঘটনা রাজ্যবাসীকে দেখতে হত না। বরাকের ঐতিহ্য এবং ইতিহাসকে অস্বীকার করার যে প্রবণতা এখন নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে এটা খুব শুভ লক্ষণ নয়। রাজনীতির মার প্যাচে জনতার আবেদনকে অস্বীকার করা কখনো ইতিবাচক ফল এনে দিতে সক্ষম নয়। রাজনীতিতে চিরকাল কারো সমান যায় না এ কথাটা বর্তমান সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের মাথায় রাখা উচিত। বরাকের মানুষের এই সাধারণ দাবিকে নানা ছল ছুতোয় আটকে রাখার পরিনাম কিন্তু আজ হোক আর কাল হোক বর্তমানে শাসক দলকে ভুগতে হবে।
(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)

