কালোবাজারির বিরুদ্ধে অভিযান, মেহেরপুর থেকে উদ্ধার ৬৯ হাজার প্যাকেট  আলু

জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৪ জুন : বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির সময় যাতে কেউ অবৈধ মুনাফা অর্জনের সুযোগ না নিতে পারে, সেই লক্ষ্যে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে কাছাড় জেলা প্রশাসন। খাদ্য, গণবণ্টন ও ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী মাননীয় কৌশিক রায়ের নির্দেশ এবং কাছাড়ের জেলা আয়ুক্ত  শ্রী মৃদুল কুমার যাদব, আইএএস-এর তত্ত্বাবধানে, বুধবার শিলচরের বিভিন্ন বাজার এলাকায় একের পর এক হঠাৎ তল্লাশি চালায় প্রশাসন। এই অভিযান চালিয়েছে খাদ্য, গণবণ্টন ও ভোক্তা বিষয়ক বিভাগ, যার নেতৃত্বে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা আয়ুক্ত,  ড. ধ্রুবজ্যোতি হাজরিকা, এ.সি.এস। অভিযানে মূল ভুমিকায় ছিলেন মুখ্যধর দাস, পরিদর্শক, খাদ্য, গণবণ্টন ও ভোক্তা বিষয়ক দপ্তর।

কালোবাজারির বিরুদ্ধে অভিযান, মেহেরপুর থেকে উদ্ধার ৬৯ হাজার প্যাকেট  আলু

তল্লাশির মূল লক্ষ্য ছিল বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মূল্যবৃদ্ধির অপচেষ্টা রুখে দেওয়া এবং গুদামজাত পণ্যের যথাযথ হিসাব ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। অভিযানে শিলচরের গুরুত্বপূর্ণ বাজার অঞ্চল যেমন তারাপুর, মেহেরপুর, জেলরোড, রংপুর ও সদরঘাটে দোকান ও গুদামে খুঁটিনাটি পরিদর্শন ও স্টক যাচাই করা হয়। এই কঠোর অভিযান থেকেই মেহেরপুরে একটি বিশাল গুদামে মজুত অবস্থায় পাওয়া যায় ৫৬,০০০ প্যাকেট বেঙ্গল আলু ও ১৩,০০০ প্যাকেট আগ্রা আলু—যার প্রতিটি প্যাকেটের ওজন ৫০ কেজি। এই বিশাল মজুতের খোঁজ মিলে যাওয়ায় জেলায় আলুর ঘাটতির আশঙ্কা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয় এবং প্রশাসনের তৎপরতাকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য এনে দেয়।

কালোবাজারির বিরুদ্ধে অভিযান, মেহেরপুর থেকে উদ্ধার ৬৯ হাজার প্যাকেট  আলু

পরিদর্শনের সময় আলুর খুচরা মূল্যও খতিয়ে দেখা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান বাজারে বেঙ্গল আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৬–১৮ টাকায় এবং আগ্রা আলুর দাম ২১–২২ টাকার মধ্যে যা স্বাভাবিক ও গ্রহণযোগ্য। এতে প্রমাণিত হয় যে, বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি ও মুল্যবৃদ্ধির আতঙ্ক অনেকাংশেই ভিত্তিহীন এবং কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর অপপ্রচারের ফল।

কাছাড় জেলা প্রশাসন, ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়েছে—বাজারে ন্যায্য ব্যবসায়িক নীতি বজায় না রাখলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই অভিযান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, সরকারের কালোবাজারি ও কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বলবৎ রয়েছে এবং ভোক্তা স্বার্থরক্ষায় প্রশাসন সর্বদা সজাগ।

এই দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে কাছাড় জেলা প্রশাসন প্রমাণ করেছে যে তারা সঙ্কটের মাঝেও সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সুলভ ও সহজলভ্য রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই তদারকি ও দমনমূলক কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং জেলায় মূল্য শৃঙ্খলা বজায় রাখতে, অকারণ মুনাফার চেষ্টা রোধ করতে ও প্রতিটি নাগরিকের অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষা করতে প্রশাসন সদা প্রস্তুত।

Author

Spread the News