জাতীয় সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ! পাথারকান্দি-শ্রীভূমি পর্যন্ত গর্তে দখলে, ক্ষোভ

মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ৮ আগস্ট : পাথারকান্দি-শ্রীভূমি জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ অসম-ত্রিপুরা সংযোগকারী ৮ নম্বর জাতীয় সড়ক বর্তমানে কার্যত এক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ ও যানবাহন এই রাস্তা ব্যবহার করে, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিটি যাত্রা যেন এক মৃত্যুর মুখোমুখি যাওয়ার সামিল। বিশেষ করে নিলামবাজার, কায়স্থগ্রাম, বারইগ্রাম, মইনা ইত্যাদি এলাকায় রাস্তার বেহাল দশা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে।

রাস্তার ওপর তৈরি হয়েছে একের পর এক ভয়ঙ্কর গর্ত, যেগুলোর আকার এতটাই বড় যে অনেক ক্ষেত্রেই তা পুকুরের মতো গভীর। বিশেষ করে বারইগ্রাম রেল ক্রসিং-এর পাশে যেসব গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো বড়সড় দুর্ঘটনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। যেকোনো সময় বড় দূরপাল্লার বাস বা ট্রাক উল্টে যেতে পারে এইসব গর্তে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে কোনও একটি দুর্ঘটনা ঘটলেই পুরো জাতীয় সড়ক দীর্ঘ সময়ের জন্য অচল হয়ে পড়তে পারে।

জাতীয় সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ! পাথারকান্দি-শ্রীভূমি পর্যন্ত গর্তে দখলে, ক্ষোভ

এই ভয়ঙ্কর বাস্তবতার মাঝেও পূর্ত বিভাগ এবং প্রশাসন কার্যত কুম্ভকর্ণের ঘুমে আচ্ছন্ন। অভিযোগ উঠেছে, রাজ্যে ও কেন্দ্রে শাসকদল বিজেপি বারবার উন্নয়ন ও সড়ক অবকাঠামো নিয়ে বড় বড় ঘোষণা দিলেও বাস্তবে সেসব প্রতিশ্রুতি কাগজেই রয়ে যাচ্ছে। মাটিতে গিয়ে সেই উন্নয়নের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

এই অবস্থায় উত্তর-পূর্ব ভারত গণ সংহতি পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি সোচ্চার হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবী লক্ষ্মী দেবনাথ এবং সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু দাস এক যৌথ বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এই পরিস্থিতি নিয়ে। তাঁরা সরাসরি পূর্ত বিভাগের মন্ত্রী, বিভাগীয় আধিকারিক এবং স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান এই রাস্তা শুধুমাত্র পাথারকান্দি বা করিমগঞ্জবাসীর নয়, এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রাণরেখা। সড়ক পথে অসম ও বরাক উপত্যাকা সহ বহির ভারতের সঙ্গে যোগযোগের জন্য উক্ত সড়কের উপর নির্ভরশীল ত্রিপুরা রাজ্যের জনগণ। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়কের এমন করুণ দশা প্রশাসনের চরম ব্যর্থতার পরিচায়ক। আমরা অবিলম্বে রাস্তার ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলি সংস্কারের জোরালো দাবি জানাচ্ছি।সরকার ও প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে যে কোনো সময় বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটনার প্রবল সম্ভ না রয়েছে।

জাতীয় সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ! পাথারকান্দি-শ্রীভূমি পর্যন্ত গর্তে দখলে, ক্ষোভ

উল্লেখ্য, বর্ষার জল জমে গর্তগুলো আরও গভীর ও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। বহু ক্ষেত্রেই বাইক আরোহী ও ছোট যানবাহন চালকদের পড়তে হচ্ছে দুর্ঘটনার কবলে। এমন কি নিত্যদিন পথচারীদের চলাচল করাও দুষ্কর হয়ে উঠেছে। তবুও নেই কোনো কার্যকরী উদ্যোগ।

স্থানীয় মানুষ, যানবাহনের চালক এবং সাধারণ যাত্রীদের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি উঠছে। তাই এই ভয়ানক পরিস্থিতিতে মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিত্যযাত্রী সহ স্থানীয় সহ ভুক্তভোগী জনগণ।

Spread the News
error: Content is protected !!