চন্দ্রপুর থেকে বন বিভাগের ক্যাম্প সরানোয় জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১৮ অক্টোবর : সবুজ পাহাড় ঘেরা চন্দ্রপুরে বন রক্ষার একমাত্র ভরসা ছিল ছোট্ট সেই ফরেস্ট ক্যাম্পটি। হঠাৎ করে বন বিভাগের সেই ক্যাম্প তুলে নেওয়ায় এখন আতঙ্ক ও ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় জনতা। পরিবেশপ্রেমী মহলের দাবি, এই সিদ্ধান্তের ফলে চন্দ্রপুরসহ আশপাশের বনাঞ্চল আবারও কাঠ পাচারকারীদের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় চার-পাঁচ বছর আগে তৎকালীন ডিএফও বি. বসন্তনের সময়ে কাঠ পাচার ও বন ধ্বংস রুখতে চন্দ্রপুরে একটি বন ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। সে সময় দোহালিয়া ফরেস্ট রেঞ্জের দায়িত্বে ছিলেন প্রবীর বিশ্বাস এবং এসিএফ ছিলেন সুখদেব সাহা।
ক্যাম্প স্থাপনের পর থেকে বাদশাহী ফরেস্ট রিজার্ভের চন্দ্রপুর, মাগুরছড়া, শশিনগর, শান্তিনগর, হরিণটিলা প্রভৃতি এলাকায় বন দস্যু ও কাঠ পাচারকারীদের কার্যক্রম প্রায় সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে আসে। গত কয়েক বছরে ওই ক্যাম্পের বনকর্মীরা বনজ কাঠ পাচার রোধে একাধিক সফল অভিযান চালান, উদ্ধার হয় প্রচুর চেরা কাঠ ও কাঠ কাটার যন্ত্র, আটক হয় বন দস্যুরাও।
স্থানীয়রা জানান, ক্যাম্পটি এলাকাটির বন রক্ষার একপ্রকার রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছিল। অথচ সম্প্রতি হঠাৎ করে বন বিভাগ কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই ওই ক্যাম্পটি সরিয়ে নেয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এক প্রভাবশালী বনকর্মীর প্রত্যক্ষ মদতে ও ব্যক্তিস্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, উক্ত কর্মকর্তা নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন। এমনকি, বনাঞ্চলে বসবাসরত বিভিন্ন পরিবারের কাছ থেকে সরকারি উচ্ছেদের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
চন্দ্রপুর থেকে বন ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়ার পর আশঙ্কা করা হচ্ছে, পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে বন দস্যু ও কাঠ পাচারকারীরা, যা পুরো পাহাড়ি অঞ্চলের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
এই বিষয়ে স্থানীয় বিট কর্মকর্তা বা রেঞ্জ কর্মকর্তার কোনো মন্তব্য জানা যায়নি।পরিবেশ রক্ষায় সচেতন মহল দ্রুত চন্দ্রপুরে বন ক্যাম্পটি পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়ে বর্তমান ডিএফও অমল আর বরহাদির জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

