শিলচরে আকাঙ্খা হাট উদ্বোধন জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদবের
জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২ আগস্ট : “আকাঙ্ক্ষা হাট কেবলমাত্র অর্থনৈতিক লেনদেনের একটি স্থান নয়, এটি সেই মঞ্চ যেখানে সমাজের আকাঙ্ক্ষাগুলি স্বনির্ভর উদ্যোগে রূপ নেয়”— এই বলিষ্ঠ ঘোষণা দিয়ে শনিবার শিলচরে জেলা স্তরের আকাঙ্খা হাটের সূচনা করলেন কাছাড় জেলার জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব। নীতি আয়োগের ‘ভোকাল ফর লোকাল’ উদ্যোগের অন্তর্গত এই তিনদিনব্যাপী হাটের সূচনা হয়েছে বিপুল উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে, যেখানে জেলাজুড়ে বিভিন্ন স্বনির্ভর আত্মসহায়ক গোষ্ঠীগুলি নিজেদের তৈরি সামগ্রী নিয়ে অংশগ্রহণ করে।
উদ্বোধনী ভাষণে জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব বলেন, “এই হাট আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। স্বনির্ভরতা কেবল অর্থনৈতিক নয়, এটি আত্মমর্যাদার প্রতীকও।” তিনি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ভাবনী, মহিলানেতৃত্বাধীন ও গ্রামীণ উদ্যোগগুলিকে সর্বদা সহযোগিতা ও সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেন। একইসঙ্গে তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা স্থানীয় পণ্যের প্রতি দায়িত্বশীল ভোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লক্ষীপুরের সমজেলা আয়ুক্ত ধ্রুবজ্যোতি পাঠক, কাছাড় জেলা পরিষদের মুখ্য কার্যবাহী আধিকারিক প্রণবকুমার বরা, অতিরিক্ত জেলা আয়ুক্ত হেমাঙ্গ নবীশ ও রক্তিম বরুয়া।
স্বাগত ভাষণে প্রণবকুমার বরা বলেন, “আকাঙ্খা হাট শুধুই একটি মেলা নয়, এটি গ্রামীণ সক্ষমতার এক প্রতীক। প্রতিটি স্টলই এক একটি গল্প সৃজনশীলতার, পরিশ্রমের, ও স্বপ্নপূরণের।” তিনি জানান, এই ধরনের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশেষ করে মহিলানেতৃত্বাধীন আত্মসহায়ক গোষ্ঠীগুলি সরাসরি ভোক্তাদের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারছেন, যা তাদের জীবিকা নির্বাহে নতুন দিশা দেখাচ্ছে।
হাট প্রাঙ্গণটি উচ্ছ্বাসে ও কর্মক্লান্তিতে মুখর। কাছাড় জেলার সাতটি ব্লকের আত্মসহায়ক গোষ্ঠী প্রায় ৫০টি স্টলে স্থানীয় হাতে তৈরি পণ্যের সমাহার উপস্থাপিত হয়েছে। হস্তশিল্প, তাঁত, খাদ্য সামগ্রী সহ নানা বৈচিত্র্যময় পণ্য দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে, যা স্থানীয় সম্প্রদায়ের উদ্ভাবনী শক্তি ও রুচির পরিচয় বহন করে।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও আকাঙ্খা হাট এক সাংস্কৃতিক উৎসবের রূপ নিয়েছে। সন্ধ্যাবেলায় স্থানীয় শিল্পীরা বরাক উপত্যকার লোকসংস্কৃতির গানে-নৃত্যে মঞ্চ মাতান। এই অনুষ্ঠানগুলি একদিকে যেমন দর্শকদের মনোরঞ্জন করছে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে সাংস্কৃতিক শিকড়ের প্রতি গর্ব ও সংযোগ গড়ে তুলছে।