দাবিমতো যৌতুক না দেওয়ায় খুন গৃহবধু! আটক স্বামী
নিপ্পু লস্কর, সোনাই।
বরাক তরঙ্গ, ৬ এপ্রিল : দাবিমতো যৌতুক না দেওয়ায় খুন হতে হল গৃহবধুর। এমন অভিযোগ গৃহবধূর বাপের লোকদের। এমন অভিযোগে গৃহবধূর স্বামীকে আটক করল পুলিশ। ঘটনাটি পূর্ব সোনাইয়ের কচুদরম থানা এলাকার গঙ্গগানগর ৯ খণ্ডে (কালাখাল)। শনিবার রাতে কচুদরম পুলিশ গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়। এনিয়ে কচুদরম থানায় খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে, ময়নাতদন্তের পর রবিবার গৃহবধূর নিথর দেহ তার বাবার বাড়ি ভাউরীকান্দি ২য় খণ্ডে নিয়ে আসা হয় এবং সন্ধ্যে ৬টায় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ভাউরীকান্দি ২য় খণ্ডের বাসিন্দা মতিবুর রহমান লস্করের মেয়ে হোসনা বেগম লস্করের (২২) সঙ্গে গঙ্গানগর ৯ম খণ্ডের (কালাখাল) সেলিম উদ্দিন লস্করের ছেলে দিলবার হোসেন লস্করের সামাজিক প্রথা অনুযায়ী বিয়ে হয় প্রায় তিন বছর আগে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌতুক নিয়ে প্রায় ঝগড়া হতো। এরমধ্যে হোসনা বেগম লস্কর ফুটফুটে একটা পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে পুত্র সন্তানের বয়স দেড় বছর, নাম সাকিদুল হোসেন লস্কর। তখন সবাই ভেবেছিলেন তাদের পুত্র সন্তানের কারণে হয়তো যৌতুকের কথা ভুলে যাবে দিলবার পরিবার। কিন্তু দিন দিন অত্যাচার বেড়েই চলে হোসনার ওপর। শনিবার সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ হোসনা ফোন করে বাবার বাড়িতে জানিয়ে দেয় ‘যৌতুকের বেজাল শেষ না করলে তোমরা আমাকে বাড়িতে নিয়ে যাও। নতুবা ওরা সবাই মিলে আমাকে মেরে ফেলবে’। এরপর থেকে ফোনে আর হোসনাকে পাওয়া যায়নি। রাত ৯ টা নাগাদ খবর আসে হোসনা মারা গেছে। খবর পেয়ে কচুদরম পুলিশ নিয়ে হোসনার বাবা মতিবুর রহমান লস্কর এবং নিকট আত্মীয়রা কালাখালে গিয়ে হোসনাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে, পুলিশ হোসনার স্বামী দিলবার হোসেন লস্করকে নিয়ে আসে। রবিবার হোসনার বাবা মতিবুর রহমান লস্কর কচুদরম থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করেন। এতে তিনি অভিযুক্ত করেছেন হোসনার স্বামী দিলবার হোসেন লস্কর, শশুর সেলিম উদ্দিন লস্কর এবং শাশুড়ি হালিমা বেগম লস্করকে। মামলার মতে ওরা তিনজন মিলে হোসনাকে খুন করেছেন যৌতুকের কারণে। মামলা পেয়ে পুলিশ দিলবারকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত তদন্ত শুরু করেছে।

এই ঘটনায় কালাখাল এবং ভাউরীকান্দি আশপাশ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।