আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে জেলা প্রশাসনের বৈঠক, নির্দেশনা জারি
শৃঙ্খলা ও ভক্তিভাব বজায় রেখে উদযাপিত হোক দুর্গোৎসব : জেলা কমিশনার মৃদুল যাদব
বরাক তরঙ্গ, ৬ সেপ্টেম্বর: “এ বছর কাছাড় জেলায় দুর্গাপূজা যেন সম্পূর্ণভাবে শৃঙ্খলা ও ভক্তিভাবের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। কোথাও কোনও রকম বিশৃঙ্খলা বা জননিরাপত্তার অবনতি যেন না ঘটে”— এই বার্তা দিলেন কাছাড়ের জেলা কমিশনার মৃদুল যাদব (আইএএস)। শনিবার জেলা প্রশাসনিক ভবনের নবনির্মিত সম্মেলন কক্ষে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে পূজা কমিটিগুলির সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান। বৈঠকে জেলা কমিশনার জানান, রাস্তাঘাট বা জনপরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করে কোনও পূজা প্যান্ডেল নির্মাণ করা যাবে না। প্রত্যেকটি পূজা কমিটিকে যথাযথ বিভাগীয় অনুমতি সংগ্রহ করতে হবে। মহিলা, শিশু ও প্রবীণদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও প্রস্থান পথ নির্ধারণ, প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও অগ্নি-নিরাপত্তা বিধি মানা বাধ্যতামূলক, বিসর্জনের দিন ‘ড্রাই ডে’ ঘোষণার কথাও জানান তিনি। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করে পরিবেশবান্ধব পূজার উপর জোর দেন জেলা কমিশনার।
নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার কড়া নির্দেশ দেন জেলার সিনিয়র পুলিশ সুপার নোমাল মাহাত্তা বৈঠকে এক বিস্তারিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি জানান: প্রতিটি প্যান্ডেলে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করতে হবে, তাদের নাম ও যোগাযোগ নম্বরসহ রেজিস্টার রাখতে হবে, সিসিটিভি ক্যামেরা, ব্যাকআপ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, জল ও বালুর মজুদ বাধ্যতামূলক। তিনি আরও বলেন, জোর করে অনুদান সংগ্রহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উদ্যোগে কাছাড় জেলার ১,৫০০টি পূজা কমিটিকে ১০,০০০ করে অনুদান দেওয়া হবে।
শিলচর পুর নিগমের নবনিযুক্ত আয়ুক্ত সৃষ্টি সিং (আইএএস) পূজা কমিটিগুলিকে আলাদা পার্কিং জোন নির্ধারণের আহ্বান জানান, যাতে যানজট এড়ানো যায়। লোকনির্মাণ দপ্তর পূজার আগে রাস্তার গর্ত মেরামতির আশ্বাস দেয়। বিসর্জন ঘাটে চিকিৎসক দল, ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধারকারী দল মোতায়েন থাকবে বলে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়। শিলচর পুর নিগমের পক্ষ থেকে আলোকসজ্জা, পরিচ্ছন্নতা ও শ্রমিক নিয়োগের দায়িত্ব নেওয়া হবে।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা কমিশনার অন্তরা সেন, সদর সার্কল অফিসার অরুণজ্যোতি দাস, সোনাই সার্কল অফিসার মারিয়া তামিম, সহকারী কমিশনার ও তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক দীপা দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত সেন, ডিএসপি হেমন্ত দাস এবং প্রশাসনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বৈঠকের শুরুতে অতিরিক্ত জেলা কমিশনার অন্তরা সেন গত বছরের পূজা প্রস্তুতির কার্যবিবরণী পাঠ করেন ও অতিথিদের স্বাগত জানান।