মেডিক্যালের রেডিওলজি বিভাগের দুর্নীতির মামলা ভিজিল্যান্সের হাতে

বরাক তরঙ্গ, ৭ ফেব্রুয়ারি : শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেডিওলজি বিভাগে এমআরআই ও সিটিস্ক্যান করানোর নামে দুর্নীতির মামলা মুখ্যমন্ত্রী ভিজিল্যান্স সেলের হাতে হস্তান্তর হচ্ছে। দুর্নীতির বিশাল অঙ্কের বলে আঁচ পাওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এমআরআই ও সিটিস্ক্যান করানোর নামে যে দুর্নীতি হচ্ছে তা প্রকাশ্যে আসে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে। এরপর এনিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তের পর ছাটাই করা হয় রেডিওলজি বিভাগের ছয় অস্থায়ী কর্মী বিশ্বজিৎ দাস, সরোজ দাস, আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী, বাপন দেব, আব্দুল মুমিন লস্কর ও লাভলি বেগম লস্করকে। শোকজ করা হয় চার স্থায়ী কর্মী কমরুল ইসলাম লস্কর, বিনয় ছেত্রী, সামাদ আহমদ লস্কর ও শঙ্কর দেবকে।

জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ তদন্তে ২০২৩ সালের মে মাসের ২ দিনের হিসেব দেখিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে ওই দু’দিনে এমআরআই ও সিটিস্ক্যান করে আত্মসাৎ করা হয়েছে ২১ হাজার টাকা। সেই হিসেবে প্রতি মাসে দুর্নীতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। অভিযোগ অনুযায়ী, এই দুর্নীতি চলে আসছিল বছরের পর বছর ধরে। অভ্যন্তরীণ তদন্তে দুর্নীতির এই তথ্য বেরিয়ে আসার পর মামলা দায়ের করা হয় পুলিশেও। অভ্যন্তরীণ তদন্তের সূত্রে এমন চঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসার পর পুলিশে মামলা দায়ের করার পাশাপাশি অক্টোবর মাসে গুয়াহাটি থেকে অর্থ বিভাগের একটি দল এসে তদন্ত চালায়।

মেডিক্যালের রেডিওলজি বিভাগের দুর্নীতির মামলা ভিজিল্যান্সের হাতে

খবর অনুযায়ী দীর্ঘ সময়ের হিসেব টেনে এই তদন্তে যে তথ্য বেরিয়ে আসে এতে দেখা গেছে, বছরের পর বছর ধরে এভাবে দুর্নীতি করে আত্মসাৎ করা হয়েছে ১০০ কোটির চেয়েও বেশি পরিমাণ টাকা। দুর্নীতির এত বিশাল মাত্রা দেখে এবার জেলা পুলিশের কাছ থেকে মামলা মুখ্যমন্ত্রীর ভিজিল্যান্স সেলের হাতে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মেডিক্যালের রেডিওলজি বিভাগের দুর্নীতির মামলা ভিজিল্যান্সের হাতে

এমআরআই ও সিটি স্ক্যান করানোর নামে দুর্নীতির বিবরণ তুলে ধরে মেডিক্যালের এক সূত্র জানান, মেডিক্যালে এমআরআই করাতে গেলে ‘ফি’ দিতে হয় ৩ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা। আর সিটি স্ক্যানের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। তবে বাইরে বেসরকারি ক্ষেত্রে এসব করাতে গেলে ‘ফি’র পরিমাণ দাঁড়ায় দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। তাই বাইরের রোগীদের মেডিক্যালের রোগী সাজিয়ে এমআরআই ও সিটিস্ক্যান করিয়ে মেডিক্যালের হারে ‘ফি’ নিয়ে পকেটস্থ করা হচ্ছিল পুরো টাকাটাই। মেডিক্যালের তহবিলে জমা পড়েনি এর এক টাকাও। বাইরের একাংশ দালাল ও রেডিওলজি বিভাগের একাংশ মিলে চালাতেন এই দুর্নীতি। এ পর্যন্ত শুধু অস্থায়ী ছয় কর্মীকে ছাটাই করা হলেও এবার ভিজিল্যান্সের তদন্তে অনেক বড় মাথার ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান সূত্রটি।

Author

Spread the News