ভোট চুরির মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টের
১৪ অক্টোবর : ভোট চুরি নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে লাগাতার কাঠগড়ায় তুলে এসেছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও তাঁর অভিযোগ, ভোট চুরির এই কাজে বিজেপিকে সাহায্য করেছে কমিশন। রাহুল গান্ধীর সেই অভিযোগের পর জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল দেশের সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার সেই মামলা সুপ্রিম দরবারে গৃহীতই হল না। এদিন বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ মামলা খারিজ করে পরিষ্কার জানিয়ে দিল, ‘এই মামলার কোনও যৌক্তিকতাই নেই। যেখানে ইচ্ছা প্রতিকার চান। এখানে জনস্বার্থ মামলা শোনা হবে না।’

রাহুলের অভিযোগের পর আইনজীবী রোহিত পাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দাখিল করে আবেদন করেছিলেন, গত লোকসভা নির্বাচনের সময় রাহুল গান্ধী কর্তৃক উত্থাপিত ‘ভোট চুরি’ অভিযোগের তদন্তের জন্য সিট গঠন করার নির্দেশ দিক আদালত। সেই আবেদন শোনার পর, দুই সদস্যের বেঞ্চ মামলাটি শুনতেই চাননি। পাল্টা আবেদনকারীকে নির্বাচন কমিশনের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘এই বিষয়ে আবেদনকারীকে ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে যেতে হবে। এ ধরনের মামলায় তদন্তের অধিকার নির্বাচন কমিশনের কাছে রয়েছে। আপনি সেখানে গিয়ে আপনার অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।’
আদালতের প্রত্যাখানের পর মামলাকারী বলেন, তিনি কমিশনে বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করেনি। মামলাকারীর তরফে আর্জি জানানো হয়, এ বিষয়ে কমিশনকে পদক্ষেপ করার জন্য সময় বেঁধে দিক আদালত। তবে সে আর্জিতেও সাড়া দেয়নি শীর্ষ আদালত। ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ‘আমরা আবেদনকারীর কথা শুনেছি। তবে মামলাটি জনস্বার্থ আকারে দায়ের হওয়ায় এই মামলা শুনতে ইচ্ছুক নই। আবেদনকারী চাইলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে পারেন।’
রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছিলেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় কারচুপি হয়েছিল। গত ৭ অগস্ট সাংবাদিক সম্মেলন করে এই বিষয়টি জানিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল। তিনি আবেদন করে জানান, এই অভিযোগ নিয়ে স্বাধীনভাবে অনুসন্ধান করেছেন তিনি। তাতেই কারচুপির বিষয়টি উঠে এসেছে।
সোমবার দুই বিচারপতির বেঞ্চ আবেদনকারীকে এই বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে বলে। আবেদনকারী জানান, তিনি ইতিমধ্যে কমিশনে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তারা কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে দাবি আবেদনকারীর।
কর্ণাটকের সেন্ট্রাল কেন্দ্রে ‘ভোট চুরি’-র অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। আবেদনকারী জানান, সংবিধানেই অবাধ এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। ‘প্রশাসনিক পদক্ষেপে’-র কারণে সংবিধানের এই প্রাথমিক নীতি লঙ্ঘিত হতে পারে না। রাহুলের এই অভিযোগ শুনে তাঁকে এই সংক্রান্ত সমস্ত প্রামাণ্য নথি দিতে বলেন মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। ১৭ অগস্ট দেশের মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার পরের সাত দিনের মধ্যে রাহুলকে হলফনামা জমা করতে বলেন। মামলাকারী সুপ্রিম কোর্টে জমা করা নিজের আবেদনে জানান, ভোটপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য কমিশনকে নির্দেশিকা দেওয়া হোক। সুপ্রিম কোর্ট যদিও সেই আবেদন শুনতে রাজি হয়নি।
খবর : দৈনিক স্টেটসম্যান বাংলা।