নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে উচ্ছেদের নিন্দা এসইউসিআই-র
বরাক তরঙ্গ, ১৩ জুলাই : সম্প্ৰতি অসম সরকার সব ধরনের নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে গরীব, শোষিত, নিপীড়িত মেহনতি সাধারণ মানুষকে যেভাবে উচ্ছেদ করে চলেছে, তার তীব্ৰ নিন্দা জানাল এসইউসিআই (কমিউনিস্ট)। দলের অসম রাজ্য সম্পাদক চন্দ্ৰলেখা দাস এক প্ৰেস বার্তায় বলেন, কোনও ধরনের পুনৰ্বাসনের ব্যবস্থা না করে বুলডোজার চালিয়ে ৪০-৫০ বছর ধরে বসবাস করে থাকা, এমনকি ১৯৫১ সন থেকে বসবাস করা মানুষদের উচ্ছেদ করার মধ্য যে হাহাকার অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সেটা একটা সভ্য গণতান্ত্ৰিক দেশে, হওয়ার কথা নয়। একটা কল্যাণকামী দেশে অসহায় নিরাশ্রয় মানুষদের যখন সরকারি উদ্যোগে ঘর তৈরি করার প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার, তখন অতি কষ্ট করে কোনওক্রমে সাধারণ মানুষ ছোট্ট একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই বা ঘর একটা সাজিয়েছিল তাও রাজ্য সরকার বুলডোজার এবং পুলিশ দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দিল। সেই সব গরীব মানুষ অত্যন্ত অমানবিক ভাবে খোলা আকাশের নিচে থাকতে বাধ্য করা হল। উচ্ছেদ হওয়া এই মানুষ বেশিরভাগই সাধারণ সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্ৰদায় হওয়ার ফলে উচ্ছেদের লক্ষ্য করা হয়েছে বলে ইতোমধ্যে চিন্তা চৰ্চা চলছে। এর ফলে মারাত্মকভাবে সাম্প্ৰদায়িক পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় সৰ্বস্তরের জনসাধারণকে নিয়ে মানুষের জীবনের জ্বলন্ত সমস্যা সমাধানের দাবিতে গণতান্ত্ৰিক আন্দোলন গড়ে তোলা দুরূহ হয়ে পরেছে। কিন্তু এই উচ্ছেদ কেবলমাত্র সংখ্যালঘু অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ইতোমধ্যে কোকরাঝার, শিলসাঁকোতে উচ্ছেদ হচ্ছে এবং পুঁজিপতিদের স্বার্থে বা প্ৰয়োজনে কখন কে উচ্ছেদ হবে তার কোনও ঠিক নেই। নিৰ্বিচার এই উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে অসহায় মানুষের হাতে যতটুকু মাটি ছিল, সেইটুকু আদানি, আম্বানি ইত্যাদি একচেটিয়া পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেবে বলে শুনা যাচ্ছে যা কোনো অৱস্থাতেই গ্ৰহণযোগ্য নয়।
অন্যদিকে, মাতৃভাষা বাংলা বলে পরিচয় দেওয়া মানুষকে বাংলাদেশি বলে মন্তব্য করার মধ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্ৰীর মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনে বসে থাকা ব্যক্তি বিভাজনের রাজনীতিকে শক্তিশালী করছেন বলে জনসাধারণের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। নিজের মাতৃভাষা নিয়ে সবারই আবেগ থাকে এবং তা সম্পূৰ্ণ ব্যক্তিগত ও স্পৰ্শকাতর বিষয়। ফলে এই বিষয়টা নিয়ে কোনো ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্তের ফলে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে, তাই সবাইকে ধীর-স্থির ভাবে সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করা উচিত। জনসাধারণের মধ্যে ঐক্য- সংহতি বিনষ্টকারী সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করা থেকে সবাইকে বিরত থাকা উচিত।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সর্বস্তরের জনসাধারণকে এগিয়ে এসে এই অমানবিক নৃশংস উচ্ছেদের বিরুদ্ধে দূর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলা এবং সকল অংশের জনসাধারণের ঐক্য চোখের মণির মতো রক্ষা করার জন্যে এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরী।