“সাঁকো” সাহিত্য পত্রিকার বসন্ত উৎসব ও অনন্যা ভট্টাচার্যের কাব্যগ্রন্থ “অনাদৃতা” উন্মোচন
বরাক তরঙ্গ, ১৬ মার্চ : রঙের উৎসব হোলির আবহে রবিবার এক প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হলো কবি অনন্যা ভট্টাচার্যের প্রথম কাব্যগ্রন্থ “অনাদৃতা”। এদিন সকাল ১১টায় হাইলাকান্দির হরকিশোর হাইস্কুল প্রেক্ষাগৃহে শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় “সাঁকো” সাহিত্য পত্রিকার বসন্ত উৎসব ও ১০৪তম সাহিত্য আসর। শুরুতে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে উপস্থিত সকলকে আবিরের ছুঁয়া দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। এরপর বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব কবি প্রাবন্ধিক মানিক চক্রবর্তী, অনন্যা ভট্টাচার্যের মা রত্না ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ড. হিফজুর রহমান লস্কর, কবি চিত্র নাট্যকার আশুতোষ দাস, লেখক হিফজুর রহমান লস্কর এবং সংস্কৃতিকর্মী সমর চক্রবর্তীকে মঞ্চে বসিয়ে উত্তরীয় দিয়ে বরণ করা হয়। তারপর স্বাগত ভাষণ দেন সাঁকো পত্রিকার কর্ণধার সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এই সাহিত্য আসরগুলি শুধু সাহিত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এতে ঐক্যের সুর ধ্বনিত হয়। তাছাড়া আজকের অনুষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো কবি অনন্যা ভট্টাচার্যের প্রথম কাব্যগ্রন্থ অনাদৃতার আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
স্বাগত ভাষণের পর উপস্থিত বিশিষ্ট গুণীজন কবি প্রাবন্ধিক মানিক চক্রবর্তী, অনন্যা ভট্টাচার্যের মা রত্না ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ড. হিফজুর রহমান লস্কর, কবি চিত্র নাট্যকার আশুতোষ দাস, লেখক হিফজুর রহমান লস্কর, সংস্কৃতিকর্মী সমর চক্রবর্তী, প্রতাপ সম্পাদক শৈলেন দাস, প্রবাহ সম্পাদক আশিসরঞ্জন নাথ, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন কবি কল্লোল চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক ড০ শতানন্দ ভট্টাচার্য, শব্দ নিরন্তর সম্পাদক নীহাররঞ্জন দেবনাথ (বাপি), কবি লেখক সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়, কবিতা দাস, রবীন্দ্রনাথ কাশ্যপ, শঙ্করী পুরকায়স্থ চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী প্রমুখের হাত দিয়ে উন্মোচিত হয় “অনাদৃতা”।

অনন্যা ভট্টাচার্যের এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়ে সবাই অনন্যার লেখার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করে আগামীতে আরও বই প্রকাশের উৎসাহ প্রদান করেন। পাশাপাশি সাঁকো সাহিত্য পত্রিকা ও সাহিত্য আসরের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও বক্তব্য রাখেন বক্তারা। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন মানিক চক্রবর্তী, রত্না ভট্টাচার্য, ড. হিফজুর রহমান লস্কর, আশুতোষ দাস, হিফজুর রহমান লস্কর, সমর চক্রবর্তী, শৈলেন দাস, আশিসরঞ্জন নাথ, কল্লোল চৌধুরী, ড. শতানন্দ ভট্টাচার্য, সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়, কবিতা দাস, রবীন্দ্রনাথ কাশ্যপ, শঙ্করী পুরকায়স্থ চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, জিতেন্দ্র নাথ, চুনিলাল নাথ, তিলক রঞ্জন দাস, শংকর চৌধুরী, ড. অভিজিৎ মিত্র, শঙ্করী চৌধুরী, মিতালী হালদার চক্রবর্তী, মহাশ্বেতা দেব, এম রিয়াজুল আজহার লস্কর, রজত পাল প্রমুখ। কবি অনন্যা ভট্টাচার্য তার বক্তব্যে বলেন যে উনার ঠাকুমা, মা এবং জীবন সঙ্গী রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী সহ শ্বশুর বাড়ির প্রতিজন সদস্যের উৎসাহের ফসল এই কাব্যগ্রন্থ অনাদৃতা। গৃহবধূ ও পেশায় শিক্ষিকা হয়েও সবদিক সামলিয়ে তিনি পরিবারের প্রত্যেকজন লোকের নিরন্তর সহযোগিতা পেয়েছেন বলেই আজ তার অক্ষর চাষ সফলতা পেলো। তিনি বইটির নাম অনাদৃতা কেন হলো সে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন এই নামকরণ করেছেন তার জীবনসঙ্গী। বইটির প্রচ্ছদ করে দিয়েছেন সহপাঠী আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অভিজিৎ দেবনাথ, প্রকাশক শীতলাং পাব্লিকেশন। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন নীহাররঞ্জন দেবনাথ (বাপি)। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সবার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনা হয় বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্যের আবৃত্তির মাধ্যমে। নিজের লেখা ও সুরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন চুনিলাল নাথ। এরপর অধ্যক্ষা মিতালী হালদার চক্রবর্তীর পরিচালনায় হাইলাকান্দি সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রীরা সমবেত ভাবে তিনটি নৃত্য পরিবেশন করে। শিল্পীরা ছিল অদিতি রায় চৌধুরী, মেঘা শুক্লবৈদ্য, আরোহী পাল, মিশিতা দেবনাথ, আদ্রিজা দাস, পিহু পাল, ভবানী কর এবং রাজেশ্রী ঘোষ। সবশেষে ছিল সাহিত্য আসর। বেশীর ভাগ কবিরাই স্বরচিত কবিতা পাঠের সাথে অনাদৃতা থেকে কবিতা পাঠ করেন। যেসকল কবিরা আজ কবিতা পাঠে অংশ নিয়েছিলেন তারা হলেন মানিক চক্রবর্তী, আশুতোষ দাস, হিফজুর রহমান লস্কর, শৈলেন দাস, কল্লোল চৌধুরী, সুস্মিতা অধিকারী, সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়, কবিতা দাস, পূরবী নাথ, রবীন্দ্রনাথ কাশ্যপ, ড০ অভিজিৎ মিত্র, শঙ্করী চৌধুরী, মহাশ্বেতা দেব, এম রিয়াজুল আজহার লস্কর, শিপ্রা শর্মা মহন্ত, অনামিকা শর্মা, রজত পাল, পঞ্চতপা নাথ, মহাশ্বেতা দেব প্রমুখ। শিশু শিল্পী দিপান্বিতা চক্রবর্তী ছুটি কবিতা আবৃতি করে অনুষ্ঠানে অন্যমাত্রা যোগ করে।

উল্লেখ্য, এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেবশ্রী চক্রবর্তী, মাধবী শর্মা, রুদ্রনীল চক্রবর্তী, শান্তা ভট্টাচার্য, ধ্রুব চৌধুরী, ঝর্ণা ভট্টাচার্য, অরুন্ধতী দেব, মিঠুলাল চৌধুরী, চম্পা শুক্লবৈদ্য, সংহিতা রায় চৌধুরী, অমৃতা সরকার দেবনাথ, মমি পাল, ধ্রুবজ্যোতি দাস, পার্থ চক্রবর্তী প্রমুখ বিশিষ্ট সংস্কৃতি ও সাহিত্যপ্রেমী গুণীজন। রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী ও সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আসরে সমর চক্রবর্তী কর্তৃক ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে এদিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়।