বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহ! হরিয়ানায় বাঙালিদের চরম নির্যাতন, নিন্দায় তৃণমূলের

২৪ জুলাই : বিজেপি শাসিত রাজ্যে আবারও হেনস্থার শিকার বাঙালিরা। এবার ঘটনাস্থল গুরুগ্রাম। বাংলাদেশি সন্দেহে একাধিক বাঙালিকে চুলের মুঠি ধরে, মারধর করতে করতে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল হরিয়ানা পুলিশের বিরুদ্ধে। যে মুহূর্তের ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই, তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। যেখানে দেখা গেছে, কয়েকজন বাঙালিকে বেধড়ক মারতে মারতে গাড়িতে তুলছে হরিয়ানা পুলিশ। বাংলা ভাষায় কথা বলায়, গুরুগ্রামে বাঙালিদের বাংলাদেশি সন্দেহে চরম হেনস্থা করা হচ্ছে। পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে বাঙালিদের বাংলাদেশি সন্দেহে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে হরিয়ানা পুলিশ।

পার্থপ্রতিম রায় জানিয়েছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্য হরিয়ানা থেকে কোচবিহারের বাসিন্দা, এক পরিযায়ী শ্রমিক এই ভিডিওটি তাঁকে পাঠিয়েছেন। সেই পরিযায়ী শ্রমিক এই ভিডিওটি তুলেছেন। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের চরম হেনস্থা করা হচ্ছে বলেই দাবি তাঁর। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তাঁরা।

ভিডিওতে দেখা গেছে, মাঝ রাতে একাধিক পুলিশ এসে কয়েকজনকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করছে। পুলিশি অত্যাচারে এক মহিলাকে চিৎকার করতেও দেখা গেছে। সেই মহিলাকেও লাঠি দিয়ে মারতে দেখা গিয়েছে হরিয়ানা পুলিশকে। গাড়িতে কয়েকজন পুরুষকেও তোলা হয়েছে। তাঁরা সকলেই বাঙালি।

প্রসঙ্গত, ভিন রাজ্যে বাঙালিদের বাংলাদেশি সন্দেহে হেনস্থার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। দিন কয়েক আগেই আরও এক বিজেপি শাসিত রাজ্য ওড়িশায় এক পরিযায়ী শ্রমিক হেনস্থার শিকার হন। বাংলাদেশি সন্দেহে আটক ওড়িশায়। চরম হয়রানির শিকার হুগলির পরিযায়ী শ্রমিক হন। যাবতীয় প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও চলে চরম হেনস্থা। অনেক কষ্টে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরেন রবীন্দ্র নগরের দেবাশিস দাস। জানান হয়রানির কথা।

জানা গেছে, ওড়িশার ঝারসুগুডা জেলায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হয়। কাজে ওড়িশায় গিয়েছিলেন জুন মাসের ১৪ তারিখ। এক সংস্থার সঙ্গে কাজে গিয়েছিলেন হুগলির চুঁচুড়া ২ নং রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা দেবাশিস দাস। শুধু তিনি এক ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন। তাঁরা ওই সংস্থার ওড়িশায় চলা বিভিন্ন প্রজেক্টের ফায়ার সিস্টেমের কাজ করেন।

দেবাশিসের অভিযোগ, ওই দিন কাজের জায়গায় পৌঁছনো মাত্রই বিনা কারণে তাঁকে আটক করা হয়। তারপর ওড়িশার স্থানীয় পুলিশের দ্বারা চরম হয়রানির শিকার হন তিনি। আটক করার পর তাঁদের কাজের জায়গা থেকে তুলে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। কী কী ডকুমেন্ট আছে, তা দেখতে চাওয়া হয়।

দেবাশিসের কাছে পাসপোর্ট, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড, জন্মের শংসাপত্র সহ স্কুলের মাধ্যমিকের এবং পুলিশ ভেরিফিকেশান সার্টিফিকেট সবই ছিল। তিনি সেই যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দেখান। কিন্তু কোনও লাভ হয় না। ওই আধিকারিকরা তাঁর কাছে থাকা সরকারি পরিচয়পত্রকে কোনও গুরুত্ব দেন না। সেগুলো দেখার পড়ে ছাড়া তো দূরের কথা, উল্টে তাঁর ফোন কেড়ে নেন। তারপর থেকে বাড়িতে পরিজনদের সঙ্গে বা সংস্থার ঠিকাদারের সঙ্গেও কোনও কথা তাঁকে আর বলতে দেওয়া হয়নি।
খবর : আজকাল ডট ইন।

Spread the News
error: Content is protected !!