স্মার্ট মিটার : শরিফনগরে কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভা
বরাক তরঙ্গ, ২৭ আগস্ট : প্রিপেড স্মার্ট মিটার প্রত্যাহারের দাবিতে করিমগঞ্জ জেলা আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে শরিফনগর বাজারে মঙ্গলবার রাতে এক প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পৌরহিত্য করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী আতিকুর রহমান চৌধুরী। এ সভায় জেলা ইলেকট্রিসিটির কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুজিত কুমার পাল তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, প্রিপেড স্মার্ট মিটার হচ্ছে গ্রাহকদেরকে বোকা বানিয়ে টাকা লুটার এক বৃহৎ ষড়যন্ত্র। কারণ আগে যেখানে মানুষের ঘরে কারেন্টের বিল আসতো পাঁচশ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কিন্তু স্মার্ট মিটার লাগানোর পর থেকে সেই ঘরে আসছে ২,৩, ৫, ১০ হাজার টাকা করে। এতে সাধারণ জনগণ নিজের পরিবার কি ভাবে চালাবে না বিদ্যুৎ বিল মিটাবে। তাই অত্যাধিক হারে গ্রাহকদের টাকা লুটার ষড়যন্ত্র প্রিপেইড মেশিনটি বর্জন করে পুরানো মিটার লাগাতে তিনি উপস্থিত সকলকে আহ্বান জানান। এতে যদি সরকার সায় না দেয় তাহলে জনগণ তাদের সংস্থার সাথে তাল মিলিয়ে গ্রাম- শহরের জনগণের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে একত্রিত হয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বৃহত্তর গন আন্দোলন গড়ে তুলে তা প্রতিহিত করতে তিনি সকলকে আহ্বান জানান। তারপর তিনি বলেন, এই প্রিপেড স্মার্ট মিটার ব্যবস্থা যেহেতু বিলে টাকা অগ্রিম দিতে হয় তাই টাকা বেশি কেটে গেলেও অভিযোগ জানানোর কোন সুব্যবস্থা থাকে না। আর একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্রে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের এটা একটা শুধু জন বিরোধী কাজ নয় তা গ্রাহকদের মৌলিক অধিকার খর্ব করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তাই এই স্মার্ট মিটার সম্পূর্ণরূপে জনবিরোধী ও বিদ্যুৎ গাহকদের স্বার্থের পরিপন্থী বলেও মত প্রকাশ করেন। তাই স্মার্ট মিটার প্রতিস্থাপন প্রত্যাহারের দাবিতে জনগণকে সচেতন করে আন্দোলন গড়ে তুলে ও নিজেদের ঘরে স্মার্ট মিটার বসানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
স্মার্ট মিটার প্রত্যাহারের দাবি জানানো সহ নতুন ভাবে কারো ঘরে প্রিপেইড মিটার বসাতে না দেওয়ার আহবান জানিয়ে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন জিপি সভাপতি হুসেন আহমেদ চৌধুরী, সংস্থার সভাপতি সুজিত রঞ্জন দাস, সংস্থার সদস্য গোপাল চন্দ্র দাস, অজয় চৌধুরী, সভার সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, সভায় বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল নুর, মওলানা সুয়েল আহমেদ নোমানি, মওলানা ইমাদ উদ্দিন আত্তারী, বিশিষ্ট সমাজসেবী নাসির চৌধুরী, মওলানা খালেদ আহমদ, মুতলিব আলি, জাহাঙ্গীর আলম, আজু মিয়া, রাজু রায়, অসিত রায় সহ অনেক। এদিনের সভায় সর্ব সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় জিপিভিত্তিক একটি আঞ্চলিক ইলেকট্রিকসিটি কনজ্যুমার ফোরাম গঠন করা এবং প্রিপেড মিটার সরিয়ে পুরোনো মিটার দেওয়ার দাবিতে এলাকার জনগণের সাক্ষর সমেত স্মারকলিপি জেলা উপায়ুক্তের কাছে প্রেরণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরও যদি সুরাহা না হয় তাহলে অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কুনজ্যুমার এসোসিয়েশনের সাথে মিলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমগ্র অসম ব্যাপিয়া আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর গোহাটি বিজুলী ভবন অভিযানে জেলা সর্বস্তরের জনগণকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়। পরিশেষে সভার সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সভার ইতি টানেন।