দুর্গাপুরে বাংলা ভাষার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় শিলচরে মিতা
১৩ আগস্ট : দুর্গাপুরে শিল্প ও সাহিত্য পত্রিকার দপ্তরে আয়োজিত হল লেখক-কবি সমাবেশে এক অনুষ্ঠান। শিলচর থেকে উপস্থিত হয়েছিলেন বিশিষ্ট কবি-প্রকাশক -সম্পাদক মিতা দাসপুরকায়স্থ। তার আগমন উপলক্ষে ছিল এই ভাব বিনিময়ের অনুষ্ঠান। আয়োজক দুর্গাপুরের আল্পনা প্রকাশনী এবং শিল্প ও সাহিত্য মাসিক পত্রিকা। উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও সাহিত্য পত্রিকার সভাপতি সুকোমল ঘোষ, বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক পূর্ণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক ও সাহিত্যিক সিদ্ধেশ্বর শেঠ, কবি-সম্পাদক ও অনুবাদক ব্রজকুমার সরকার, বিশিষ্ট কবি ও সংগঠক স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায়, ঔপন্যাসিক মণিশঙ্কর, কবি অতনু রায়, কবি সুবোধ ঘোষ, বিশিষ্ট ছড়াকার রঘুনাথ সিনহা, কবি দেবমাল্য চ্যাটার্জি, কবি পাপিয়া চ্যাটার্জী, কবি স্মিতা ঘোষ, বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী কাকলি দাশগুপ্ত, পায়েল পোল্যে কাঁড়ার, উমাশঙ্কর সেন, কবি অরুণকুমার দাঁ, বিশিষ্ট কবি গৌতম রায় প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন কবি-সম্পাদক-প্রকাশক রাজীব ঘাঁটি।
বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় বাংলা ভাষা নিয়ে বর্তমান রাজনীতি ও টানাপোড়েন বিষয়ে খুব সুন্দর একটি আলোচনা এবং কবিতার আড্ডায় জমে উঠে সাহিত্য বাসর। বাংলা ভাষার বর্তমান অবস্থান এবং আগামী সম্ভাবনা ও দুর্ভাবনা বিষয়ে উপস্থিত গুণীজনদের আলোচনায় উঠে এলো অনেক কথা।
স্বরলিপির শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করলেন। শিল্প ও সাহিত্য পত্রিকার পক্ষ থেকে উপহারসামগ্রী ও উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানিত করা হলো মিতা দাসপুরকায়স্থকে। মণিশঙ্কর, সিদ্ধেশ্বর শেঠ, ব্রজ সরকার তাঁদের বক্তব্য রাখেন। রঘুনাথ সিনহা, সুবোধ ঘোষ, অরুণ কুমার দাঁ কবিতা পাঠ করেন।
বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলন এবং বর্তমান অবস্থান নিয়ে বক্তব্য রাখলেন কবি-সম্পাদক-প্রকাশক মিতা দাসপুরকায়স্থ। তিনি বলেন, বাংলা ভাষা তার উদারতায় ঔদার্যে তার মহত্বে শত শত বছর ধরে টিকে আছে এবং হাজার হাজার দেশি-বিদেশি শব্দকে গ্রহণ করেও আপন গতিতে প্রবহমান। এভাবেই যুগ যুগ ধরে আগামীতেও টিকে থাকবে। এ নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে গেলো গেলো রব তুলে লাভ হবে না। বাংলা ভাষা তার আপন গতিতেই চলবে। তবে বাংলা ভাষা যাতে স্থবির না হয়ে পড়ে গতিশীল থাকে সে ব্যাপারে বাঙালিদের নিজেদের সচেষ্ট হতে হবে। তিনি আত্মসমালোচনা করে কিছু উদাহরণ দেখিয়ে দেন ও বলেন শুধু শুধু সরকারের উপরে দায় চাপিয়ে দিলে ও দোষ দিলে বাংলা ভাষাকে নবপ্রজন্মের কাছে সাবলীল ও স্বতস্ফূর্ত করা যাবে না।
বাংলা ভাষার সংকটময় অবস্থার কথা বললেন পূর্ণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
সভাপতি সুকোমল ঘোষ সুন্দর এই আয়োজনের সন্ধ্যাটিকে স্বাগত জানিয়ে তার বক্তব্য রাখলেন। তিনি শিল্প ও সাহিত্য পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বললেন। বর্তমান লিটল ম্যাগাজিনগুলির মধ্যে মফস্বল শহরে শিল্প ও সাহিত্য পত্রিকা একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে বলে তিনি মনে করেন। মিতা দাসপুরকায়স্থ ‘নতুন দিগন্ত প্রকাশনী’ থেকে প্রকাশিত কিছু বই ‘শিল্প ও সাহিত্য’ পত্রিকার সম্পাদক রাজীব ঘাঁটির হাতে তুলে দেন। অনুষ্ঠানে আসার সম্মতি দিয়েও অনেকেই আসতে পারেননি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে।