স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে রইস উদ্দিন, জানালেন এসপি
আলি চৌধুরী, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২১ ডিসেম্বর : বড়খলায় বরাক নদীতে অল্টো গাড়ি ডুবে মৃত্যু হওয়া মা ও শিশুর এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার দিনও সন্দেহ ছিল পুলিশ সহ একাংশ লোকের। অবশেষে সন্দেহের অবসান হওয়ার পথে। তদন্ত প্রক্রিয়া এগুনোর সঙ্গে সঙ্গে, পুলিশ নিশ্চিত হয়ে গেছে হেলি বেগম বড়ভূইয়া (২১) ও তার ১৩ মাস বয়সী শিশুকন্যা জন্নত বেগমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হেলি বেগমের স্বামী রইস উদ্দিন বড়ভূইয়া (২৮) চালকের আসনে ছিলেন। শনিবার পুলিশসুপার নুমুল মাহাতো জানিয়েছেন, রইস উদ্দিন বড়ভূইয়াকে শুরু থেকেই সন্দেহ করা হচ্ছিল। তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। তদন্ত প্রক্রিয়া কিছুটা এগুনোর পর, বর্তমানে তাঁরা নিশ্চিত যে পরিকল্পিতভাবে সে হত্যা করেছে হেলি বেগম ও জন্নতকে। তিনি আরও জানান, তদন্ত প্রক্রিয়ায় উঠে এসেছে অর্থকরী বিষয় নিয়ে রইস উদ্দিন ও হেলি বেগম এর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।
এ দিকে, হেলি বেগমের কাকা পুলিশে এক মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার দিন চিকিৎসক দেখিয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে তাঁদের বাড়িতে এসেছিলেন। তাড়াহুড়ু করে রাত আটটা নাগাদ বেরিয়ে পড়েন। প্রায় তিন ঘণ্টার পর তাঁরা দুর্ঘটনার খবর পান। সেখান থেকে রইসের বাড়ি পৌছতে এত সময় প্রয়োজন হয় না। এতক্ষণ কোথায় ছিলেন এ নিয়ে সন্দেহ হয় তাঁদের। হেলি বেগমকে প্রেম করে বিয়ে ছিলেন রইস উদ্দিনকে। তাঁরা বিয়েতে রাজি না হলে পরবর্তীতে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে বিয়েতে রাজি করায় রইস।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে বড়খলার রায়পুরে বাঁধ থেকে বরাক নদীতে গড়িয়ে পড়ে একটি অল্টো গাড়িটি। পরদিন নদীর জলে ডুবে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করা হলে ভেতরে পাওয়া যায় আরোহী হেলি বেগম বড়ভূইয়া ও শিশুকন্যা জন্নত বেগমের মৃতদেহ। ঘটনার সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন হেলি বেগমের স্বামী রইস উদ্দিন বড়ভূইয়া (২৮)। গাড়ি বাঁধ থেকে নদীতে গড়িয়ে পড়লেও অক্ষত অবস্থায় রক্ষা পেয়ে যান রইস উদ্দিন। সেসময় তিনি বয়ান দেন, বাধ তথা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাবার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে গাড়ি গড়িয়ে পড়ে নিচে নদীতে। তিনি কোনওক্রমে গাড়ির কাঁচ ভেঙে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও স্ত্রী হেলি বেগম এবং শিশু কন্যা জন্নত বেগমকে বের করে আনতে পারেননি। রইস উদ্দিন এভাবে বয়ান দিলেও শুরু থেকেই পুলিশের কাছে তার কথাবার্তায় কিছু অসংলগ্নতা ধরা পড়ে। তদন্ত প্রক্রিয়া কিছুটা এগুনোর পর শুক্রবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।