নির্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্রীকে কারাগারে দেখা যাবে : রাহুল গান্ধী
বরাক তরঙ্গ, ১৬ জুলাই : ছয়গাঁওয়ে কর্মিসভা করলেন কংগ্রেসের সাংসদ এবং সিনিয়র নেতা রাহুল গান্ধী। বুধবার কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, “কিছু দিনের মধ্যে অসমে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এবং এই নির্বাচনে কংগ্রেস একটি বিশাল বিজয় অর্জন করবে।” গৌরব গগৈ এবং তার দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন কাজ করছেন তাই কাজের ফল পাবেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে একটি আদর্শের জন্য সংগ্রাম চলছে। একদিকে রয়েছে RSS-এর আদর্শ, যা সহিংসতা, বিভাজন এবং ঘৃণায় পূর্ণ, এবং অন্যদিকে রয়েছে কংগ্রেসের সত্য ও অহিংসার আদর্শ, যা ঘৃণা দূর করার উদ্দেশ্যে তৈরি।” রাহুল গান্ধী আরও মন্তব্য করেন, “বিহারে, ভোটার তালিকা আপডেট করার নামে লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাদ দেওয়া হয়েছে। গরিব, শ্রমিক, কৃষক এবং কংগ্রেস ও RJD-এর ভোটারদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তারা অসমেও একই কাজ করার চেষ্টা করবে, কিন্তু আমরা এখানে তা হতে দেবেন না।”
বিজেপির নির্দেশে নির্বাচন কমিশনের কাজ করার অভিযোগ তুলে, গান্ধী আরও বলেন, “ভোটার তালিকা সঠিকভাবে প্রকাশ করা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব; সবার নাম অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।” অসমের মুখ্যমন্ত্রী এখন স্পষ্টভাবে ভয়ের লক্ষণ দেখাচ্ছেন। নির্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্রীকে কারাগারের পেছনে দেখা যাবে। যদি কংগ্রেস নির্বাচনে জয়ী হয়, তাহলে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে জেলে পাঠানো হবে।” এই বিস্ফোরক মন্তব্যটি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ছয়গাঁও সংখ্যালঘু-প্রাধান্যপূর্ণ এলাকায় একটি জনসভায় করেছেন।
তিনি বলেন, আদানি-আম্বানির হাতে রাজ্যের হাজার হাজার একর জমি তুলে দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন তিনি। কখনও সৌর শক্তির অজুহাত দেখিয়ে, আবার কখনও রিসোর্টের নামে নিজেও জমি দখল করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। তিনি এবং তাঁর পরিবার আপাদমস্তক দুর্নীতিতে জড়িত। তিনি বলেন, “অসমে যা হচ্ছে গোটা দেশে সেটাই হয়ে চলেছে। আদানি-আম্বানির হাতে রাজ্যের জমি সম্পত্তি তুলে দিতে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা যেভাবে উঠেপড়ে লেগেছেন, একই ঘটনা ঘটছে অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতেও। শুধু তাই নয়, অসমে মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিভিন্ন অজুহাতে জমি দখল করে চলেছেন। তিনি এবং তাঁর পরিবারের দুর্নীতির কথা রাজ্যবাসীর জানা রয়েছে। আর একদিন জনগণের কাছে এর হিসেব দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে।
লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল বলেন, দেশের জল, জমি, সম্পত্তি আদানি-আম্বানি সহ পাঁচ-ছয় জন শিল্পপতির হাতে তুলে দিচ্ছে সরকার। রামদেবকেও দেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার একর জমি। সেখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাষী, শ্রমিকদের অবস্থা একেবারে বেহাল। চাকরি পাচ্ছেন না দেশের যুবকরা। অত্যাবশ্যক সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিতে আমজনতার অবস্থা একেবারেই নাকাল। বিনামূল্যে চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত জনগণ। একই অবস্থা শিক্ষাক্ষেত্রেরও।
বর্তমানের কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষা-স্বাস্থ্যের বেসরকারিকরণে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এর ফলে শিক্ষা এবং চিকিৎসার নামে প্রচুর টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে আমজনতার পকেট থেকে। আর সেই টাকা যাচ্ছে পাঁচ-ছয় জন শিল্পপতির পকেটেই। কেন্দ্রীয় সরকার যে নীতিতে এগিয়ে চলেছে এতে দেশের কোনও লাভ হবে না। সেখানে দরিদ্র জনগণ, চাষী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, শ্রমিকদের স্বার্থে লড়াই করছে কংগ্রেস। বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে পার্থক্য এখানেই। তিনি বলেন,কেন্দ্রের নীতিতে দুটি দেশ তৈরি হয়েছে। একটিতে রয়েছে পুঁজিপতি এবং তাঁদের সন্তানরা। এবং আরেকটিতে রয়েছে বিভিন্ন সমস্যায় নিমজ্জিত দেশের জনগণ। আর কংগ্রেস জনতার পাশেই থাকবে।