সম কাজে সম বেতন সহ অন্যান্য দাবিতে তিনদিনের কর্মবিরতি NHM কর্মীদের
ইকবাল লস্কর, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৪ মার্চ : রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাছাড় জেলায়ও তিনদিনের কর্মবিরতি ধর্মঘটে বসল অল এনএইচএম-র কর্মীরা। আসাম হেলথ অ্যান্ড টেকনিক্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (এএএইচটিডব্লুএ) এবং অন্যান্য ভ্রাতৃ সংগঠনের ডাকে আহুত এই ধর্মঘটের ডাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে কাছাড় জেলা এনএইচএম এমপ্লোয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (এনইএ)।
মঙ্গলবার থেকে শুরু এই কর্মবিরতি ধর্মঘটে জেলার ৮টি স্বাস্থ্যখণ্ডের অধীনস্থ প্রতিটি চিকিৎসা কেন্দ্র, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শিলচর সিভিল হাসপাতালে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এন এইচ এম-র কর্মীরা। জেলা স্তরে সম্মিলিতভাবে শিলচর সিভিল হাসপাতাল এবং জেলার প্রতিটি ব্লক ও শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সকল স্তরের এনএইচএম কর্মীরা সামিল হয়ে নিজেদের প্রধান তিন দফা দাবিতে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেন।

তাদের তিনদফা দাবির মধ্যে রয়েছে, বিশেষ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালি পদে বর্তমান এন এইচ এম-র কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ। সপ্তম পে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন সহ ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে বকেয়া প্রদান এবং দেশের সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী সমান কাজের সমান বেতন সহ সরকারি সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া।

এএএইচটিডব্লুএ-র কাছাড় জেলা কমিটির পক্ষে সভাপতি ওয়াসিম জাভেদ চৌধুরী ও সম্পাদক মফিদুল ইসলাম জানান , এই ধর্মঘট পালনে এনএইচএমের সকল স্তরের কর্মী ও আধিকারিকরা কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছেন। তারা জানান, কর্মবিরতির এসওপি অনুযায়ী আজ একান্ত জরুরি (ইমারজেন্সি) পরিষেবা ছাড়া কোনও ধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবায় জড়িত থাকেননি এনএইচএমের চিকিৎসক, ল্যাব টেকনিসিয়ান, নার্স সহ সকল স্তরের কর্মীরা।

তাঁরা জানান, এই তিন দিন দৈনন্দিন পরিষেবার মধ্যে অপিডি, ফার্মাসি, ল্যাবরেটরি, প্রসবপূর্ব টিকা, ১০০ দিনের যক্ষ্মা নির্মূল অভিযান, গ্রাম্য স্বাস্থ্য ও পুষ্টি দিবস (ভিএইএনডি), আয়ুষ্মান আরোগ্য, কাউন্সিলিং, আরবিএসকে স্ক্রিনিং, সমস্ত অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক রিপোর্ট ও অন্যান্য রিপোর্টিং ইত্যাদিতে অংশ নেবেন না রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য মিশনের কর্মীরা। কর্মবিরতির শুরুর দিনে আজো এসব কাজ তারা করেনি। তবে একমাত্র যেখানে স্থায়ী কর্মী নেই, সেখানে কালোব্যাজ ধারণ করে জরুরিকালীন পরিষেবায় নিয়োজিত থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মীরা।

কাছাড় জেলা এনএইচএম এমপ্লোয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (এন ইএ)-এর সভাপতি ইকবাল বাহার লস্কর ও সাধারণ সম্পাদক হিমেন্দুশেখর নাথ জানান, এন এইচ এমের কর্মীদের তিনদিনের দাবি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ন্যায্য অধিকার নিয়ে এই কর্মবিরতিকে সফল করে তুলতে যথাসম্ভব সহযোগিতা তাঁরা আজ ময়দানে নেমে কর্মীদের আন্দোলনে উৎসাহিত করেন এবং আগামীতেও তাদের পক্ষে এই ধারা বজায় থাকবে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার জেলার আটটি স্বাস্থ্যখণ্ড যথাক্রমে বিক্রমপুর, বড়খলা, ধলাই, হরিনগর, জালালপুর, লক্ষীপুর, সোনাই ও উধারবন্দে ব্লক এলাকার কর্মীরা সম্মিলিতভাবে কর্মবিরতিতে জড়ো হন। আন্দোলনে নামেন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত এন এইচ এম কর্মীরা। জেলা পর্যায়ে শিলচর সিভিল হাসপাতালে নিজেদের দাবিতে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন দীপ্তিরানি দেব, সুমি নাথ, নিবেদিতা সিংহ, শিবানি নাথ, অমিতা দাস সহ এনএম, জিএনএম, ল্যাব টেকনিসিয়ান, চিকিৎসক, সিএইচও, যক্ষ্মা , ম্যালেরিয়া ইত্যাদি নানা বিভাগের কর্মী ও আধিকারিকরা।