শিলচর থেকে নাপাত্তা শুভজিতের মৃতদেহ উদ্ধার শ্রীভূমিতে

বরাক তরঙ্গ, ৩১ জুলাই : গত সোমবার থেকে সন্ধানহীন শিলচর বিলপারের যুবক শুভজিৎ পাল (৩০)-এর মৃতদেহ উদ্ধার হল শ্রীভূমিতে কুশিয়ারা নদী থেকে। বুধবার শ্রীভূমির স্টিমারঘাট এলাকায় কুশিয়ারা নদী থেকে উদ্ধার হয় তার মৃতদেহ। ঘটনাকে ঘিরে দানা বেঁধে উঠেছে রহস্য।

পরিজনরা জানিয়েছেন গত সোমবার বিকেলে শিলচরে তিনি এক বন্ধুর ভাইয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। এরপর তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেখা যায় কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে  রাইডে যাচ্ছেন।কিন্তু রাতে বাড়ি ফেরেননি।পরদিন শহরের অন্নপূর্ণা ঘাটের বরাক সেতু থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তার স্কুটি।

পরিজনরা আরও জানিয়েছেন, শুভজিৎ নিখোঁজ হওয়ার পর অন্নপূর্ণা ঘাট সেতু থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া স্কুটির ডিকিতে পাওয়া যায় তার মোবাইল,আগের দিন পরে বের হওয়া সাদা রংয়ের শার্ট ও স্কুটির চাবি।  তারা জানিয়েছেন, শুভজিৎ নাপাত্তা হওয়ার পর তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে  জানতে পেরেছেন, সোমবার জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলাকালীন তার কাছে একটি ফোন এসেছিল। পার্টির জমায়েত থেকে একটু দূরে সরে ফোনে কথাবার্তা বলার পর শুভজিৎ অনেকটা  চুপচাপ হয়ে পড়েন। দুই একজন বন্ধু, কারণ জিজ্ঞেস করলেও তিনি কিছু বলেননি। এরপর অনুষ্ঠান শেষে রাইডে গেলেও খুব একটা হই হুল্লোড় করতে দেখা যায়নি তাকে। রাইড শেষে বন্ধুরা পালপাড়া পর্যন্ত আসেন একসঙ্গে। এরপর যে যার পথে চলে যান।  বন্ধুদের কাছ থেকে এসব বিবরণ শোনার পর সদর থানায় মিসিং রিপোর্ট করা হয়।

পরিজনদের সূত্রে এও জানা গেছে, শুভজিৎ বরাক উপত্যকার অন্য এক শহরের বাসিন্দা এক যুবতীর সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে প্রেম সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। ওই যুবতী বর্তমানে কাজের সূত্রে থাকেন অসমের বাইরে। তার এক আত্মীয় বলেন, বন্ধুদের বিবরণ অনুযায়ী বাস্তবিকই যদি জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলাকালীন ফোন আসার পর শুভজিৎ মনমরা হয়ে থাকেন, তবে মনে হয় সেই ফোন এসেছিল প্রেমিকার কাছ থেকে। তারা শুনেছেন সাম্প্রতিককালে নাকি প্রেমিকার সঙ্গে শুভজিতের সম্পর্ক খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না।

আত্মীয়টি আরও জানান, সোমবার রাত ১২টা নাগাদ শুভজিতের মা তাকে ফোন করেছিলেন। তখন মাকে শুভজিৎ জানান ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই তিনি বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু রাতে আর ফেরেননি। পরবর্তীতে তাকে বারবার ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। শুভজিৎ নাপাত্তা হওয়ার পরদিন তাদের নজরে পড়ে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে, তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। আর ইনস্টাগ্রামে দেখা গেছে তার এক ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট।

ওই আত্মীয়ের কথায়, এসব কিছু মিলিয়ে প্রেম ঘটিত সম্পর্কে ফাটল ধরার দরুন শুভজিৎ আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে হলেও এর পাশাপাশি প্রশ্ন জেগে উঠছে, এত দ্রুত মৃতদেহ এতদূর শ্রীভূমির স্টিমারঘাটে পৌঁছানো কতখানি সম্ভব।এথেকে তাদের সন্দেহ জাগছে, ঘটনাটা আত্মহত্যা না হয়ে অন্য কিছুও হতে পারে। কারণ অতি পরিচিত কারো পক্ষে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে ইনস্টাগ্রামে তার নামে পোস্ট করাটা অসম্ভব কিছু নয়। সবকিছু যাতে স্পষ্ট হয়ে বেরিয়ে আসে এর জন্য পুলিশের প্রতি উপযুক্ত তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

Spread the News
error: Content is protected !!