কংগ্রেসি প্রবঞ্চনায় মুসলিমরা হতাশ!
।। আব্দুল শুক্কুর বড়ভূইয়া ।।
(লেখক, সাংবাদিক)
১৪ জুন : মুসলমান! কংগ্রেস-ও লাগাতার অসহনীয় বঞ্চনা! কাছাড় জেলা পরিষদে একজন বৌদ্ধ কংগ্রেসি সহ এক হিন্দি ভাষাবাসী মেয়েও চেয়ারম্যান হয়েছিলেন, অথচ একক সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের একবার ভুলেও ওই পদ দেয়নি সংখ্যালঘুর ত্রাতা, রক্ষাকর্তা কংগ্রেস?
রাজ্যসভায় বহুবার কংগ্রেসিরা প্রবেশাধিকার পেলেও দলের মূল সমর্থক মুসলমানদের কপালে জুটেনি একবারও? মোট ৭/৮ কংগ্রেসি মনোনয়ন বরাকে এলেও মুমিনদের ভাগ্যে শূন্য। স্মরনীয় ঘটনা, এঁদের মধ্যে কেবল সন্তোষমোহন দেব হেরেছিলেন, বাকি কেউই হারেননি। কংগ্রেসে এত্ত নেতা! থাকতে ঘোর প্রতিপক্ষ হয়ে যারা দলীয় টিকিট দাবি করতে সাহস পায়, এর মানে মূল দলীয়রা আদৌ নেতা নন বরং অভিনেতা? আজ্ঞাবাহী!
যাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে দলীয় নেতা? কর্মী সমর্থকরা টিকিট বিক্রির অভিযোগ এনেছে সরাসরি যত্রতত্র, প্রকাশ্যেই। মনে রাখা কিংবা থাকা দরকার বিশ্ব বিখ্যাত ফুটবলার- পেলে, গ্যারিঞ্চা, প্ল্যাটিনি, ইউসুবিও, লেভ ইয়াসিন, মারাদোনা, পুসকাস, মেসি, রোনাল্ড, রোনাল্ডিনহ, ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, রোমারিও, ওজিল, জেনেদিন জিদান, রোজ্জার মোল্লা, সক্রেটিস প্রভৃতিরা সুসংঘটিত টিম নিয়ে সফলতা অর্জন করেছেন। বিশেষ বৈশিষ্ট থাকলেও একজনের একক শ্রেষ্টত্ব প্রমাণ করে না।তিনবারের মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র, সাংসদ গৌরব গগৈ নিঃসন্দেহে জনপ্রিয় ব্যক্তি তবে যে দলের অনেক রাজ্য সভাপতি, বিধায়ক, মন্ত্রী, সাংসদ কংগ্রেস তালাক দিয়ে যায়, ফিরে এসে আবার গুরুত্ব পায় সেই দলের বহুভারী, ওজনদার ব্যক্তিদের নিয়ে সগৌরবে সরকার চালাচ্ছেন এককালে কংগ্রেসের দ্বিতীয় মুখ্য মুখ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। যাঁর আশেপাশে রয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেসি, এঁদের অনেকই লোকসভায়, কেউ রাজ্যসভায়!
পূর্ব সোনাইয়ে যে রেজাল্ট হয়েছে এতে কোনও কৃতিত্ব নেই কারও কেননা এখানে কোনও বিরোধী শক্তি, অথবা তেমন পরিচিত, সাহসী, আত্মপ্রত্যয় সম্পন্ন, কোনও ব্যক্তি ছিলেন না, ওপরদিকে বিশাল মুসলিম প্রাধান্য থাকা ওই আসন হতে এক হিন্দি ভাষাবাসী রমণী বীনা গোয়ালা নামের মহিলাকেও জিতিয়ে এনেছিলেন উদার মনের বিধায়ক এনামুল হক বড় মার্জিনেই, প্রতিপক্ষ না থাকায়।
সর্বশেষ ডি লিমিটেশনে রাজ্যে একক গরিষ্ঠ মুসলমানদের আসন ৩৩ থেকে কমে ২৩ ওপরদিকে ১o৩ সব মিলিয়ে ১২৬ আসন। এহেন অবস্থায় গৌরবের সৌরভে সরকার গঠন করতে হলে সর্বনিম্ন আসন লক্ষ্য হতে হবে ৬৪টি। দলীয় খেলায় কী তিনি একাই পারবেন?
ব্রহ্মপুত্রের উত্তর তীরের সর্বমোট ৮৮টি জেডপি আসনের মধ্যে অতীতের নাওবৈচা যার নতুন নাম রাঙানদী এই আসনই মাত্র জিতেছে কংগ্রেস যেখানে ওই জেডপি আসনের নির্বাচিত সদস্য স্বয়ং মুসলিম এবং স্থানীয় ভোটার ৪৭ooo হাজারই মুমিন! জানান জনৈক পরিচিত ব্যক্তি। গৌরব গগৈ নিঃসন্দেহে সময়ের প্রয়োজনে অত্যন্ত গ্রহণ যোগ্যতা সম্পন্ন, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তবে খেলাটি ব্যক্তিগত নয় বরং দলগত, তাই বলছিলাম দুনিয়ার সেরা, শ্রেষ্ট ফুটবলারদের নাম উল্লেখ করেই। অনেকে আমাকে অনিরপেক্ষ ভাবে যা ওদের কল্পনার রাডারের দৃষ্টিতেই কিন্তু আমার বলায়, লেখায়, কওয়ায় কী যায় আসে?
খোদ সাংসদ গগৈর কেন্দ্রে মোট আসন কত! এবং কতটি জেডপি আসনে কংগ্রেস জিতেছে এটা কী রাজনীতির হিসেব করার জন্য একটি সেরা উপাদান নয়? জানা মতে শূন্য
অন্যদিকে তাজা খবর, যেখানে রকিবুল হোসেন চৌদ্দ লাখের অধিক ভোট পেয়ে প্রায় দশ লক্ষ ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিলেন, সেখানে গত পঞ্চায়েত ভোটে তাঁর সমর্থন হ্রাস পেয়েছে এবং টেকেছে মাত্র ৯০ হাজারে। অন্যদিকে, বদরুদ্দিন যেখানে পান মাত্র ৪ লক্ষের অধিক সেখানে বেড়ে হয়েছে সাত লক্ষের বেশি। সেই রকিবুল নন্দন সমাগুড়িতে উপনির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে হেরেছেন।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, শিলচরে যারা নানা কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও কংগ্রেস দলকে লালন, পালন করেন তাদের ধন্যবাদ দিচ্ছি এই কারণেই। জেলার মুসলিম প্রধান অঞ্চলে ওরা খুব পরিশ্রম করে তবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই কংগ্রেস টিকিটপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে লড়েছেন মুসলিম নির্দলরাই! অতএব বুঝুন কংগ্রেসের শক্তি, সামর্থ্য সংগঠনের জোর? জোয়ার!
সোনাইর ৪ জেডপি আসনের ৩টিতেই কংগ্রেসের ভোট কমেছে ঐতিহাসিক ভাবেই।

পূর্ব সোনাইয়ে যে রেজাল্ট হয়েছে এতে কোনও কৃতিত্ব নেই কারও কেননা এখানে কোনও বিরোধী শক্তি, অথবা তেমন পরিচিত, সাহসী, আত্মপ্রত্যয় সম্পন্ন, কোনও ব্যক্তি ছিলেন না, ওপরদিকে বিশাল মুসলিম প্রাধান্য থাকা ওই আসন হতে এক হিন্দি ভাষাবাসী রমণী বীনা গোয়ালা নামের মহিলাকেও জিতিয়ে এনেছিলেন উদার মনের বিধায়ক এনামুল হক বড় মার্জিনেই, প্রতিপক্ষ না থাকায়।
বাকি তিন ৩ আসনের একটি তে নির্দল জিতেছে এবং তিনটির সর্বত্র কংগ্রেসের ভোট কমেছে হাজার, হাজার, যা দরকারে সংখ্যা তথ্য সমেত উপস্থাপন অসম্ভব নয়?
লিখব, সত্য, আসল পরিসংখ্যান দিয়েই। এটা আমার এক সময়ের পেশা, এখন নেশা, এসব পড়তে অনেকে অপেক্ষা করেন হর হামেশা।আমার বিশ্লেষনে সত্যতা, সততা থাকবে এনিয়ে তাদের রয়েছে পূর্ণ আস্থা অটল আশা! (মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)