পালংঘাটে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা, আহত একাধিক যাত্রী, গুরুতর ২ শিশুসহ ৮ মহিলা
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ১৭ আগস্ট : রবিবার সন্ধ্যায় পালংঘাটের ডুগরুবস্তি এলাকায় এক মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় একাধিক যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুও রয়েছে। এদের মধ্যে ২ শিশুসহ ৮ মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক। জানা গেছে, বাসটি প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে কাবুগঞ্জ-আমড়াঘাট পূর্ত সড়কে যাচ্ছিল।
যাত্রী ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বাসটি ঝুলনপুল সেতুর কাছে যান্ত্রিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। চালক তার দিয়ে কোনওমতে মেরামত করে বাসটি আমড়াঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু, পালংঘাট উন্নয়ন খণ্ড কার্যালয় পার হয়ে ডুগরুবস্তিতে পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেল সামনে চলে আসায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। এর ফলে বাসটি রাস্তার বাম পাশে একটি খাদে উল্টে যায়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। তারা বাসের জানালার কাঁচ ভেঙে ভেতরে আটকা পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করেন। বাসের ভিতর থেকে আহতদের কান্নার রোল শোনা যাচ্ছিল।
খবর পেয়ে পালংঘাট থানার ইনচার্জ ওসি অপ্রতিম খাউন্ড ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় মহাত্মা গান্ধী মডেল হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক, সোনাইয়ের বাসিন্দা দীপন শুক্লবৈদ্য (২৬) গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তাকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চালকের খামখেয়ালিপনার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
গুরুতর আহত হয়ে যারা শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, তারা হলেন: মোহনখালের মাসুক আলি লস্করের স্ত্রী আসমা বেগম লস্কর (৩৫), থাংগিম ২য় খণ্ডের বাসিন্দা ফারহান হুসেন লস্কর (৫), সাহানারা বেগম লস্কর (২৭), রুকিয়া বেগম লস্কর (১৯) এবং কল্যানপুরের দীপ্তি রায় (৪৮)। এছাড়া, পালংঘাট মডেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন: গঙ্গানগর ২য় খণ্ডের সীতাংশু বর্মন (৪৮), পাঠবাড়ির মৃণালী দাস (৪৮), কৃষ্ণপুরের শেফালী রানী দাস (৪০) এবং সুরেন্দ্র দাস। আহত সবাই ধলাই বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা।
এই দুর্ঘটনার পর কাছাড় জেলার পরিবহন ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যাত্রীদের অভিযোগ, বহু বাস ও যানবাহন দীর্ঘদিন ধরে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই রাস্তায় চলছে, যা দুর্ঘটনার হার বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে যানবাহনের নিয়মিত পরিদর্শনের দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকেরা।