হাইলাকান্দিতে মহারানি অহল্যাবাঈ হোলকারের ৩০০তম জন্মদিন পালিত

বরাক তরঙ্গ, ১৬ মার্চ : হাইলাকান্দিতে পূন্যাশ্লোকা মহারানি অহল্যা বাঈ এর তিনশত তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে এক মনোজ্ঞ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় রবিবার।হাইলাকান্দি শ্রীকিষণ সারদা কলেজের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পৌরোহিত্য করেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের জেলা সংঘচালক লাল মোহন নাথ। শুরুতে ভারতমাতা এবং অহল্যা বাঈ এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করা হয়।উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করে সরস্বতী বিদ্যা নিকেতনের পড়ুয়ারা।এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন জন্মশতবর্ষ উদযাপন সমিতির সংযোজক ড. মণীষ রায়। তিনি বক্তাদের সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দেন এবং এই মহীষী রানি সম্পর্কে আলোকপাত করেন। এর পর শুরু হয় বক্তৃতা অনুষ্ঠান। এতে অংশ গ্রহণ করেন  জেলা সংঘচালক লাল মোহন নাথ মুখ্য বক্তা ক্ষৌণিশ চন্দ্র চক্রবর্তী, রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতির কর্মকঞ্জ বিভাগের বিভাগ সম্পর্ক প্রমুখ মনি নাথ। প্রথমে মণি নাথ পূন্যাশ্লোকা মহারানীর জন্ম বৃতান্ত তুলে ধরে  বলেন, অহল্যাবাঈ ১৭২৫ সালের ৩১ মে মহারাষ্ট্রের চৌন্ডী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমান সময়ে এই গ্রামটি মহারাষ্ট্রের আহমদনগর জেলায়। তাঁর বাবা মানকোজি রাও শিন্দে গ্রামের পাটিল ছিলেন। সেই সময় মহিলারা বিদ্যালয়ে যেতেননা, কিন্তু অহল্যাবাঈয়ের বাবা তাকে পড়তে ও লিখতে শিখিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন সময়ের প্রথা অনুযায়ী মাত্র বারো বছর বয়সে অহল্যা বাঈ এর বিবাহ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৭৫৪ সালে কুমহেরের যুদ্ধে অহল্যাবাঈয়ের স্বামী খান্দেরাও হোলকরের মৃত্যু হয়। এর বারো বছর পর তাঁর শ্বশুর মল্লার রাও হোলকরও মারা যান। আর এক বছর পর তিনি মালওয়া রাজ্যের রানি হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি আক্রমণকারীদের লুটপাট থেকে তার রাজ্য রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে যুদ্ধে সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিতেন। তিনি তুকোজিরাও হোলকরকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি সারা ভারতে শত শত মন্দির ও ধর্মশালা নির্মাণ করেছিলেন। তাছাড়া তিনি ধর্ম পরায়ন ও ন্যায় পরায়ণ ছিলেন।প্রজাদের প্রতি তিনি ছিলেন দরদী এবং রামচন্দ্রের আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন। তাছাড়া তিনি মহিলা দের সাবলম্বী এবং আত্ম রক্ষার পাঠ ও দিয়েছিলেন বলে মনি দেবী জানিয়ে মহারানীর জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

হাইলাকান্দিতে মহারানি অহল্যাবাঈ হোলকারের ৩০০তম জন্মদিন পালিত

মুখ্য বক্তা তথা সংঘের দক্ষিণ আসাম প্রান্তের কার্যনির্বাহী সদস্য  ক্ষৌণিশ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, অহল্যা বাঈ ভারতবর্ষের একটি ছোট রাজ্যের রানি ছিলেন। কিন্তু তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে একটা ছাপ রাখতে পেরে ছিলেন। তাই এবার গোটা দেশ জুড়ে গত বছরের মে মাসে উদযাপন শুরু হয়েছিল যা আগামী মে মাসে সম্পন্ন হবে। তাই রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের আদর্শে অনুপ্রানিত সংঘটন গুলো এই পুন্যাশ্লোকা মহারানীর তিনশত তম  জন্ম জয়ন্তী পালন করা হচ্ছে। তিনি অহল্যা বাঈ এর জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ভারত বর্ষের নারী স্বাধীনতা ও সমাজ ও দেশের প্রতি নারীদের অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। বলেন রাজা রামমোহন রায়ের সতি দাহ প্রথার প্রচলন বন্ধ করার প্রচেষ্টার প্রায় শতবর্ষ আগে অহল্যা বাঈকে সতি হতে হয়নি বরং রাজপাঠ সামলাতে দেন তার পরিবার বর্গ। আর পরবর্তীতে একজন সাধারণ মহিলা হিসেবেই রাজ্যপাঠ দক্ষতার সাথে সামলিয়েছেন। তিনি একই সঙ্গে উনার কর্তব্য পরায়নয়তা সহ কুটনৈতিক বুদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করে উপস্থিত সবাইকে উদ্ভুদ্ধ করেন। পরবর্তীতে ধন্যবাদ সূচক  বক্তব্য রাখেন উদযাপন সমিতির সদস্য ড০ গোলাব নন্দী।অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন বর্গের লোক সহ সংঘ পরিবারের বিভিন্ন শাখা সমিতির সদস্য সদস্যারা উপস্থিত ছিলেন।

হাইলাকান্দিতে মহারানি অহল্যাবাঈ হোলকারের ৩০০তম জন্মদিন পালিত

Author

Spread the News