ভাষা গৌরব সপ্তাহ পালন পাথারকান্দি কলেজে
বরাক তরঙ্গ, ১০ নভেম্বর : পাথারকান্দি কলেজে উদযাপিত হল ‘ভাষা গৌরব সপ্তাহ’। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপী ‘ভাষা গৌরব সপ্তাহ’ পাথারকান্দি কলেজে অনুষ্ঠিত হয় ৩ থেকে নয় নভেম্বর পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক অসমীয়া ও বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় আসাম সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী গত ৩ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই উৎসব পালন করা হয়েছে। এতে কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ মনজুরুল হকের এর স্বাগত ভাষণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয়। তারপর ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনুষ্ঠান চলতে থাকে। দ্বিতীয় দিনে ছিল কুইজ প্রতিযোগিতা। বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সামসুদ্দিন বড়ভূইয়া এবং গণিত বিভাগের অধ্যাপিকা মুনমি শইকিয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
তৃতীয় দিনে ছিল ছাত্রদের নৃত্য প্রতিযোগিতা। ডঃ গৌতম দাস ও অন্যান্য অধ্যাপক-অধ্যাপিকাবৃন্দের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। বাংলা ভাষার উপর বিশেষ বক্তৃতা অনুষ্ঠান ছিল, চতুর্থ দিনে। শ্যামাপদ দে, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, মডেল হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল ও কাজি আতিকুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, আছিমিয়া এমভি স্কুল, ঐ দিনের বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্যে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন যে এই স্বীকৃতি বাংলা ও বাঙালির জন্য অনেক সম্মানের। আরও বলেন, নিজের মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করা এবং মনের ভাব ব্যক্ত করা অত্যন্ত সহজ। এতে দেশের অগ্রগতির সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিদেশী ভাষা শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন, কিন্তু ঐ শিক্ষাকে যেন ফ্যাশন করা না হয়।
কাজি আতিকুর রহমান বক্তব্যে, অসমিয়া ভাষার উৎপত্তি এবং তার বিকাশ সম্বন্ধে বিশদ আলোচনা করেছেন। সভার সভাপতি তথা কলেজের অধ্যক্ষ মনজুরুল হক, বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানের পঞ্চম দিনে ছিল স্থানীয় বিভিন্ন ভাষার উপরে আলোকপাত করা। এতে মুনমি শইকিয়া, গৌতম দাস, প্রদীপ দোলে, দেরহাসাদ বসুমাতারী, কে তামনা সিংহ, সুমিতা সিনহা, মোঃ ইমাম উদ্দিন আনসারী ও জয়নুল হক অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা যথাক্রমে অসমিয়া, বাংলা, মিসিং, বড়ো, মেইথেই মণিপুরি, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি, হিন্দি ও ভোজপুরি এবং সিলেটি ও উর্দু প্রভৃতি স্থানীয় ভাষা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। ষষ্ঠ দিনে ছিল কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী সালিকুজ্জামান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। প্রতিযোগিতায় ছাত্র-শিক্ষক মিলিয়ে প্রায় ৫০ জনের মতো প্রতিযোগী ছিলেন।
ঐ দিনে বাংলা বানান বিধি নিয়ে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালাটি পরিচালনা করেন গৌতম দাস। সপ্তম তথা অনুষ্ঠানের শেষ দিনে পুরস্কার বিতরণী হয়। অনুষ্ঠানে কলেজের প্রত্যেক জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকা উপস্থিত ছিলেন। সর্বশেষে কলেজের অধ্যক্ষ মনজুরুল হকের ধন্যবাদ সূচক বক্তৃতার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।