পাথারকান্দির রথযাত্রায় অংশ নিলেন কৃষ্ণেন্দু
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ২৮ জুন : শনিবার সকালে গুয়াহাটি থেকে বিমানে ফিরেই নিজ নির্বাচনী কেন্দ্র পাথারকান্দিতে পৌঁছান রাজ্যের মৎস্য, পশুপালন ও পূর্ত বিভাগের মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল। ফেরার পরপরই তিনি যোগ দেন পাথারকান্দির তিনখালে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী অষ্টরথ রথযাত্রা মহোৎসবে। প্রতি বছরের মতো এবারও তিনখাল এলাকায় আয়োজন করা হয় বিশাল রথযাত্রা উৎসবের। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যার দিকে বিশাল ভক্তসমাগমে মুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী সম্প্রদায়ের শত শত নারী ও পুরুষ তাঁদের ঐতিহ্যবাহী একরঙা পোশাক পরে, ধর্মীয় নিষ্ঠা আর সাংস্কৃতিক আবেগ নিয়ে অংশ নেন এই রথ উৎসবে।

বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়, শুধু প্রবীণরা নয়, বিপুল সংখ্যক যুবক-যুবতী এবং শিশু-কিশোররাও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে এক আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে। স্থানীয় তিনখাল ছাড়াও গোকিলা, পারুগাঁও, কচুবাড়ি, কৈলাসশহর, পাথারকান্দি শহর এবং আশপাশের বহু গ্রাম থেকে হাজার হাজার ভক্তের ঢল নামে এই মহোৎসবে। সুসজ্জিত আটটি রথ মহাপ্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার প্রতিমাকে ধারণ করে ঢাক-ঢোল, করতাল ও কীর্তনের শব্দে মুখর হয়ে যাত্রা শুরু করে। এই রথগুলি রাজ্য সড়ক ধরে এগিয়ে যায় এক অনন্য ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে। উৎসব যেন এক মিলে যাওয়া নদীর মতো যেখানে মিশে গেছে ধর্ম, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর স্থানীয় জনমানসের আত্মিক আবেগ।

রথযাত্রার শুরুর আগমুহূর্তে মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল উপস্থিত হয়ে নিজ হাতে রথের রশিতে টান দেন এবং মহাপ্রভুর আশীর্বাদ নেন। রথ টানার মধ্য দিয়ে তিনি জানান, “এই উৎসব শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বৃহত্তর পাথারকান্দির সাংস্কৃতিক ঐক্য, সম্প্রীতি ও প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতীক। আমি সকল ভক্ত ও স্থানীয় মানুষকে আহ্বান জানাই—আপনারা সকলে এই পবিত্র রথযাত্রায় অংশ নিয়ে জগন্নাথদেবের আশীর্বাদে সমৃদ্ধ হোন।”এদিনের উৎসবে নিরাপত্তার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়। প্রশাসনের তরফ থেকে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের মোতায়েন করে গোটা কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করা হয়।