গোলাঘাট ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল পাথারকান্দি নেতৃত্বে স্বয়ং মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল!
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১ জুলাই : গোলাঘাটে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক সংবেদনশীল ও বিতর্কিত ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠলো শ্রীভূমি জেলার অন্তর্গত সীমান্তবর্তী শহর পাথারকান্দি। রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের আবহের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে বিজেপির উদ্যোগে শহরের অন্যতম অঞ্চল অসম-ত্রিপুরা আট নং জাতীয় সড়কের বাইপাস মোড়ে আয়োজিত হল এক বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচি ও সড়ক অবরোধ। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নেতৃত্বে ছিলেন অসম সরকারের মৎস্য, পশুপালন ও পূর্ত বিভাগের মন্ত্রী এবং পাথারকান্দি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল। তাঁর দৃঢ় অবস্থান ও বক্তব্যে রাজনীতির ময়দানে তৈরি হল নতুন চাঞ্চল্য।

প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশে সরাসরি দৃপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করেন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পাল। তিনি আরও বলেন, গোলাঘাটের ঘটনায় যেভাবে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তা গণতন্ত্রে কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসন যদি অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে বিজেপি রাজ্যজুড়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবে।

আজকের এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন লোয়াইরপোয়া ও পাথারকান্দি মন্ডলের সহস্রাধিক বিজেপি কর্মী-সমর্থক, যাঁদের হাতে ছিল দলীয় পতাকা, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও প্রতিবাদী স্লোগান।
প্রতিবাদকারীদের মুখে শোনা যায় গোলাঘাটে ন্যায় চাই দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করো এই কান্ডে জড়িত আসল হোতাদের বের করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।সহ হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নামে জয় ধ্বনি দিয়ে আকাশ বাতাশ কাপিয়ে তোলেন।

বিক্ষোভের শুরু থেকেই শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে বাইপাস সড়ক অবরোধ করে রাখা হয় প্রায় এক ঘণ্টা। এই সময় যান চলাচলে আংশিক বিঘ্ন ঘটলেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।প্রশাসনের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।বিক্ষোভ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পাথারকান্দি থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। উপস্থিত ছিলেন এলাকার পুলিশ আধিকারিক ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। জনতাকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালানোর আহ্বান জানানো হয়। পুলিশের কড়া নজরদারির মধ্যে বিক্ষোভ শেষে শান্তিপূর্ণভাবেই সমাপ্ত হয় পুরো কর্মসূচি।এই প্রতিবাদী আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জ জেলা বিজেপি সভাপতি সঞ্জিব বণিক, পাথারকান্দি মন্ডল সভাপতি শশীবাবু সিনহা, দু’টি মন্ডলের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, মহিলা মোর্চা, যুব মোর্চা, নবনির্বাচিত জিপি সভাপতি-সহসভাপতি, ওয়ার্ড সদস্য সদস্যা এবং অসংখ্য দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় সমর্থকগণ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাথারকান্দির মাটিতে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুধু একটি সাংগঠনিক প্রয়াস নয়, বরং রাজ্য রাজনীতিতে একটি বড় বার্তা। মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পালের নেতৃত্বে আজকের এই সমাবেশ একটি নতুন রাজনৈতিক অভিঘাত তৈরি করেছে বরাক উপত্যকার বুকে।
গোলাঘাটের ঘটনা ইতিমধ্যেই অসমজুড়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এখন সেই আঁচ এসে পৌঁছেছে বরাক উপত্যকায়। পাথারকান্দির এই প্রতিবাদ কর্মসূচি নিঃসন্দেহে রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন গতি সৃষ্টি করবে বলে মত পর্যবেক্ষকদের।