গুরুচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কিরণ শশী’ বার্ষিক সাময়িকীর প্রকাশ ও নারী স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মসূচি
বরাক তরঙ্গ, ১৩ সেপ্টেম্বর : গুরুচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিরণ শশী মহিলা সেলের পিয়ার-রিভিউড বার্ষিক সাময়িকী ‘কিরণ শশী’ প্রকাশিত হল। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিরন শশী-র মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এ দিন একই মঞ্চে আয়োজিত হয় ‘স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যবিধি ও পুষ্টি’ শীর্ষক আলোচনাচক্র। এতে অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন পালংঘাটের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সোনাম পাণ্ডে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন গুরুচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিরঞ্জন রায়, রেজিস্ট্রার ড. বিদ্যুতকান্তি পাল, কাছাড় কলেজের অধ্যক্ষ ড. অপ্রতীম নাগ, শিলচর মেডিক্যাল কলেজের কান, নাক ও গলা বিভাগের প্রধান ডাঃ স্মৃতিলেখা দত্ত, গুরুচরণ কলেজের প্রাক্তন মণিপুরি বিভাগের প্রধান ড. কে নয়নচন্দ সিংহ এবং শিলচরের সফল নারী উদ্যোক্তা সুরোমিতা পোদ্দার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কিরণ শশী মহিলা সেলের সম্পাদক ড. সেহনারা বেগম চৌধুরী সকল অতিথি, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের স্বাগত জানিয়ে, কর্মসূচির উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। সভাপতির ভাষণে কিরণ শশী মহিলা সেলের সভাপতি ড. সেবা রায় উল্লেখ করেন মহিলা সেল দুর্যোগ ত্রাণ, অ্যাকাডেমিক আউটরিচ, সামাজিক সেবা, ছাত্রছাত্রী সহায়তাসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে সমাজসেবায় নিয়োজিত রয়েছে।
‘কিরণ শশী’ পত্রিকার উন্মোচনের সময় প্রধান সম্পাদক ড. বন্দনা থাওসেন সাময়িকীর বিষয়বস্তু সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, সাময়িকীটি দু’টি খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে এতে ইংরেজি, হিন্দি, বাংলা, পার্শি ও মণিপুরি ভাষায় প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক নিরঞ্জন রায় বক্তব্যে মহিলা সেলের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং প্রকৃত নারী-ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। উপাচার্য আরও পরামর্শ দেন যে সাময়িকীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (ই-জার্নাল) প্রকাশ করা হোক। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সেই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অধ্যাপক অপ্রতীম নাগ তাঁর বক্তব্যে বলেন, “২০০৪ সালেই গুরুচরণ কলেজের মহিলাদের উদ্যোগে কিরণ শশী মহিলা সেল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে মহিলা সেল গঠনের জন্য National Assessment and Accreditation Council (N.A.A.C.)-এর নির্দেশিকার অনেক আগেই শুরু হয়েছিল।”
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অতিথি বক্তা ডাঃ সোনাম পাণ্ডে মূল্যবান ও তথ্যবহুল বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন। জিসি কলেজ প্রাক্তন ছাত্রী এবং একজন দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে তিনি মহিলাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে—কৈশোর, যৌবন এবং রজঃনিবৃত্তি-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে—নারীস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত সমস্যাগুলি বিশদভাবে আলোচনা করেন। পাশাপাশি প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্ব সম্পর্কেও আলোকপাত করেন।
ডাঃ স্মৃতিলেখা দত্ত সংক্ষিপ্ত ভাষণে নারীর স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেন এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। উদ্যোক্তা সুরোমিতা পোদ্দার নিজের বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজের জন্য বেঁচে থাকা এবং নিজেকে ভালোবাসা।”
অনুষ্ঠানটি সামগ্রিক ভাবে সম্পাদনা করেছিলেন ড. বেগম আয়েশা সুলতানা লস্কর ও ড. দীপা নাথ। সঞ্চালনার দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করেছিলেন ড. স্বর্ণালি ভট্টাচার্য। স্বাগত নৃত্য পরিবেশন করেছে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী সায়নী দাস।