মুম্বইয়ে পণবন্দি উদ্ধারে টানটান উত্তেজনা, গুলিতে মৃত্যু অপহরণকারী  

৩১ অক্টোবর : এক টানটান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সাক্ষী থাকল মুম্বইয়ের পোয়াই এলাকায় একটি ফিল্ম অডিশন স্টুডিও। বৃহস্পতিবার দুপুরে রুটিন কাস্টিং কল চলাকালীন ওই (RA Studios) স্টুডিও-র কর্মচারী রোহিত আর্য (৩৮), ১৭ জন কিশোর-কিশোরী ও এক প্রবীণ নাগরিক সহ মোট ১৯ জনকে পণবন্দি করে ফেলে। এরপরেই সে ওই স্টুডিওতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ও গুলি চালানোর হুমকি দিতে শুরু করে। তবে পুলিশি তৎপরতায় মাত্র ৩৫ মিনিটের দ্রুত পুলিশি অভিযানে সকল বন্দিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনার দরুন পুলিশের গুলিতে জখম হন অপহরণকারী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।

এদিন ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে নামানো হয় কুইক রিঅ্যাকশন টিম (QRT)-এর আট কমান্ডোকে। দীর্ঘ আলোচনার পরও যখন আর্য নিজের অবস্থান থেকে সরতে রাজি হননি এবং নিজের কাছে থাকা বন্দুক, রাসায়নিক ও লাইটার দিয়ে বন্দিদের ক্ষতি করার হুমকি দেন, তখনই এই রুদ্ধশ্বাস অভিযান শুরু হয়। পণবন্দিদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে কমান্ডোরা মূল দরজা এড়িয়ে বাথরুমের একটি ছোট প্রবেশপথ দিয়ে ওই ঘরটিতে প্রবেশ করেন যেখানে পণবন্দিদের রাখা হয়েছিল।

এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উদ্ধারকারী কমান্ডোরা আর্য-র সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু এরই মধ্যে উদ্ধারকারীদের লক্ষ্য করে ওপেন ফায়ার করে আর্য। আর্যর হাতে থাকা অস্ত্রটি প্রাথমিকভাবে আসল আগ্নেয়াস্ত্র ভেবেই কমান্ডোরা দ্রুত পালটা গুলি চালায়, যার ফলে আর্য আহত হন। পরে অবশ্য পুলিশ নিশ্চিত করে যে, আর্যর অস্ত্রটি আসলে একটি এয়ার গান ছিল। কিন্তু উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আর্যর ফায়ারিংয়ের পরই আর কোনও ঝুঁকি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর্যকে আটক করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, আর্য ওই স্টুডিওর কর্মী ছিলেন এবং একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালাতেন। উদ্ধার হওয়া ভিডিও ফুটেজে আর্য দাবি করেন যে, তাঁর দাবি “নৈতিক” ও “আচরণগত” ছিল, কোনও আর্থিক দাবি ছিল না। আর্য এও দাবি করেছিলেন যে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেসরকরের আমলে একটি স্কুলের প্রকল্পের জন্য বকেয়া টাকা না পাওয়ার ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকেই তিনি এই চরম পদক্ষেপ নেন।

ঘটনাস্থল থেকে এয়ার গান, রাসায়নিক এবং লাইটার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এদিন এই চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মাঝেও ১৭ জন কিশোর-কিশোরীসহ মোট ১৯ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে কমান্ডোরা। ডাক্তারি পরীক্ষার পর সকল শিশুকেই তাঁদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
খবর : উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল।

Spread the News
error: Content is protected !!