পাথারকান্দি সমজেলায় গণনায় হয়রানির শিকার সাংবাদিকরা, ক্ষোভ
মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১১ মে : প্রথমবার অনুষ্ঠিত হওয়া পাথারকান্দির বিধানসভার আকাইদুম ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পঞ্চায়েত ভোটের গণনা কেন্দ্রে সংবাদিকদের জন্য নেই মিডিয়া সেল, চরম হয়রানির সম্মুখীন হন সংবাদকর্মীরা।এমতাবস্থায় পাথারকান্দি সমজেলায় প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার শিকার সাংবাদিক মহল, উঠছে স্বজনপোষণের অভিযোগ।
আকাইদুম ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ভোট গণনা পর্বে সংবাদকর্মীদের জন্য কোনও মিডিয়া সেল না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েন স্থানীয় সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধিরা। ভোটের দিন সাংবাদিকদের যথারীতি শ্রীভূমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়। সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে এটিই একমাত্র অনুমোদন হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু গণনার দিনে সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিক মাধ্যমের বহু সংবাদকর্মীকে গণনা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে, রোদে-ঘামে নাজেহাল অবস্থায় খবর সংগ্রহ করতে দেখা যায়। ছিল না কোনও আলাদা বসার ব্যবস্থা, পানীয়জলের বন্দোবস্ত কিংবা বৈদ্যুতিক পাখার মতো ন্যূনতম সুবিধা। এখানেই শেষ নয় সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় ছিল তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ইনফরমেশন ডেস্কের অনুপস্থিতি। ফলে সংবাদকর্মীরা গণনার অগ্রগতি বা ফলাফলের হালনাগাদ তথ্য জানতে বিভিন্ন গণনাকক্ষে ছুটোছুটি করতে বাধ্য হন। তাতেও অধিকাংশ সময় সঠিক বা নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি।এতে একাংশ সংবাদকর্মী ফিরে যেতেও দেখা গেছে। এই পরিস্থিতি দেখে সাংবাদিকদের একাংশ সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন যেখানে করিমগঞ্জ কলেজ ও রামকৃষ্ণনগর সমজেলার গণনা কেন্দ্রে মিডিয়া সেলসহ সমস্ত সুযোগ-সুবিধা উপলব্ধ ছিল, সেখানে পাথারকান্দিতে এমন অব্যবস্থা কেন? কেন একমাত্র এই কেন্দ্রেই সাংবাদিকদের প্রতি এমন বিমাতৃসুলভ আচরণ? অনেকেই এই ব্যবস্থাপনাকে স্বজনপোষণ কিংবা প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্ব’ বলেই আখ্যা দিচ্ছেন।

স্থানীয় সাংবাদিকরা বলেন, আমরা যে শুধু নিজের কাজ করতে এসেছি, সেটাই যেন প্রশাসন ভুলে গেছে। মিডিয়া সেল তো দূরের কথা বসার জন্য একটি চেয়ার পর্যন্ত জোটেনি। জনৈক স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, আমরা সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা রাত অবদি দাঁড়িয়ে কাজ করেছি। এটা অপমানজনক। যেকোনও ধরনের নির্বাচন কাভার করতে গিয়ে সংবাদকর্মীরা যে পরিশ্রম করেন, তার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে প্রশাসনের উদাসীনতা ও অদূরদর্শিতা যেন সংবাদমাধ্যমকেই গুরুত্বহীন করে তুলল। সাংবাদিকরা শুধু সংবাদ পরিবেশনের জন্য নয়, গণতন্ত্রের সঠিক চেহারা তুলে ধরার জন্য কাজ করেন। সেই কাজের পথকে যদি প্রশাসনিক অনীহা ও বৈষম্য কঠিন করে তোলে, তবে তা গণতন্ত্রের জন্যও এক অশনি সংকেত।