শিলচরে ভারতীয় ব্যাঙ্ক কর্মচারী সংঘের ধর্মঘট
বরাক তরঙ্গ, ৯ জুলাই : দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গতি রেখে ৯ জুলাই শিলচরে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়। এদিন দেশের অন্যতম বৃহত্তম ব্যাঙ্ক কর্মচারী সংস্থা ভারতীয় ব্যাঙ্ক কর্মচারী সংঘের সদস্য-সদস্যারা সকাল থেকেই বনধ সফল করতে সক্রিয় ছিলেন। কাছাড় জেলাজুড়ে থাকা রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাঙ্ক ও গ্রামীন ব্যাঙ্কের সব শাখাই এদিন বন্ধ রাখা হয়। সংগঠনের সদস্যরা আসাম গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়ে নিজেদের বক্তব্যের মাধ্যমে বনধের কারণ ও সংগঠনের দাবীগুলো তুলে ধরেন।
এদিন আসাম গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের কর্মচারী সংস্থার পক্ষ থেকে বলতে গিয়ে সম্পাদক প্রিতম চন্দ নিজের বক্তব্যে সরকার দেশের বিভিন্ন রাজ্যে থাকা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধে সরব হন। এতে ব্যাংকের ওপর মুষ্ঠিমেয় শেয়ারহোল্ডারদের নিয়ন্ত্রণ বাড়বে বলে তিনি আশংকা ব্যক্ত করেন। তিনি সরকারের কাছে সংস্থার পক্ষ থেকে দাবী জানান যে অবিলম্বে দেশের গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোকে তাদের স্পনসর ব্যাংক থেকে আলাদা করে একটি সাধারণ জাতীয় স্থরের গ্রামীণ ব্যাংক গড়ে তুলতে। সংস্থার সদস্য রাহুল রায় রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংকগুলোর কথা বলতে গিয়ে বলেন যে দশ বছর যেখানে দেশের মোট ব্যাঙ্ক ব্যবসার ৭৫ শতাংশই ছিল রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংকের অধীনে, বর্তমানে তা ৫৮ শতাংশে এসে নেমেছে। ব্যাংকের খাতা থেকে অনাদায়ী ঋণ সরানোর নামে শাসক দল ঘনিষ্ঠ কর্পোরেট ঋণ মকুব করে দেওয়া হচ্ছে। এতে ব্যাঙ্কগুলোর মূলধন কমে যাওয়ায় পরবর্তীতে ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে সেই ঘাটতি মেটানোর নীতি নেওয়া হয়েছে। ঢালাও করে প্রচার করে বলা হচ্ছে যে সরকারি ব্যাংক রেকর্ড মুনাফা করছে, বাস্তবে সেখানে নিয়মিত কর্মী কমিয়ে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করে খরচ কমানো হচ্ছে। একদিকে সরকারি ব্যাংকের শাখা কমানো হচ্ছে তো অন্যদিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকের শাখা ও কর্মী বাড়ছে।
দেশে প্রচলিত শ্রম কোডের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বক্তা বলেন যে এতে দেশের ৯৩ শতাংশ অসংগঠিত শ্রমিকই আইনের বাইরে থাকছেন। বাকি ৭ শতাংশ সংগঠিত শ্রমিকদের জন্য এই আইন নুন্যতম বেতন, নির্ধারিত কাজের সময় বা সামাজিক নিরাপত্তার মতো ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করতে ব্যর্থ। এই আইনে অবিলম্বে বদল দরকার। আসাম গ্রামীণ ব্যাঙ্কের আধিকারিক সমিতির সম্পাদক জন্মজিত দেবনাথ নিজের বক্তব্যে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন পদে দীর্ঘদিন থেকে আটকে থাকা প্রায় ত্রিশ হাজার কর্মী নিয়োগের দাবি জানান। সাগর রবিদাস নিজের বক্তব্যে সংগঠন ও দেশের বৃহত্তর শ্রমিক আন্দোলনের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আবেদন জানান। এদিন সংস্থার সদস্যরা পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ইউকো ব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্কে সক্রিয় ভাবে ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন।