দেশে বাড়ছে হৃদরোগের সংখ্যা,ষষ্ঠ অসম পুলিশ ব্যাটালিয়নে যৌথ সচেতনতা লায়ন্স ক্লাবের
ইকবাল লস্কর, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১৭ জুলাই : বর্তমান সময়ে হৃদরোগ সংক্রান্ত নানা অসুস্থতার সংখ্যা ভারতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এ রোগ জনসচেতনতা বাড়াতে যৌথভাবে ময়দানে নামল লায়ন্স ক্লাব অফ শিলচর সেন্ট্রাল। হার্ট কেয়ার সোসাইটি অফ আসাম এবং অসম পুলিশের সহযোগিতায় যৌথভাবে এসব কর্মসূচি বিভিন্ন স্থানে পরিচালনা করা হচ্ছে। এরমধ্যে কাঠাল পয়েন্টস্থিত ৬ নম্বর আসাম পুলিশ ব্যাটালিয়নের কর্মীদের জন্য তাদের স্থানীয় সদর দপ্তরে এক সভার আয়োজন করা হয়। দক্ষিণ অসম রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল কঙ্কণজ্যোতি শইকিয়ার সহযোগিতায় এদিন অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট প্রদীপ শইকিয়া। আয়োজক ক্লাব সভাপতি লায়ন সোমিক সেন এবং লায়ন সুভাষ চন্দ্র চৌধুরীকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানে লায়ন তথা হার্ট কেয়ার সোসাইটির সদস্য সুভাষ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য রক্ষায় হৃদয়ের ভূমিকা অনেক। তিনি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন।

তিনি বলেন, যক্ষা, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড ইত্যাদি নিরাময়যোগ্য রোগ। কিন্তু অনিরাময়যোগ্য রোগ হচ্ছে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। সুভাষবাবু হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওর এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের মধ্যে পার্থক্য ও লক্ষণগুলো তিনি সতর্ক করে দেন। যদি হৃদয়ের যথাযথ যত্ন না নেওয়া হয় তাহলে হৃদরোগের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, হৃদরোগ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রধান কারণ। ভারতে কেবলমাত্র হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের কারণে বছরে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় এবং এই সংখ্যা আগামী দশ বছরে দ্বিগুণ হতে পারে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের লক্ষণ হচ্ছে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়া, নাড়ির অনুপস্থিতি, শ্বাস প্রশ্বাস না থাকা, অচেতনতা। কখনো কখনো কিছু পূর্বলক্ষণ দেখা দেয় – যেমন বুকের অস্বস্তি, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, হৃদকম্পন ইত্যাদি। হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে
বুকের মাঝখানে চাপ বা ব্যথা, যা কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় বা যায়-আসে, শরীরের অন্যান্য অংশে অস্বস্তি, শ্বাসকষ্ট, ঠাণ্ডা ঘাম, বমিভাব বা মাথা ঘোরা।

আবার স্ট্রোকের লক্ষণ হচ্ছে
হঠাৎ মুখমণ্ডল, হাত বা পায়ে অসাড়তা বা দুর্বলতা, বিশেষত শরীরের একপাশে, কথা বলতে বা বুঝতে সমস্যা, হঠাৎ দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, চলাফেরায় অসুবিধা, ভারসাম্য হারানো, বা হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা ইত্যাদি।
তিনি বলেন, অতিমিষ্ট খাবার, আইসক্রিম, কার্বোনেটেড পানীয়, রেড মিট, যেকোনো ধরনের তামাক, ফাস্ট ফুড (চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, পিজ্জা), অতিরিক্ত লবণ ও অ্যালকোহল মারাত্মকভাবে ক্ষতিকর। এর পরিবর্তে সবুজ শাকসবজি, মৌসুমি ফল, শস্যজাতীয় খাবার, বাদাম, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য খেতে হবে। অনুষ্ঠানের শেষে সিপিআর (কার্ডিয়াক পালমোনারি রিসাসিটেশন) প্রদর্শনের মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএসপি বিজয় সিনহা, ডিএসপি ভাস্কর ওঝা এবং মেডিকেল অফিসার ডাঃ শ্রেয়া দে। অনুষ্ঠানে কমান্ড্যান্ট প্রদীপ শইকিয়া ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং লায়ন্স ক্লাবের পক্ষ থেকে সভাপতি সোমিক সেন সবাইকে সাধুবাদ জানান।