জেএনইউতে বাম ঐক্যের ঐতিহাসিক জয়! চার শীর্ষ পদে এবিভিপিকে হারিয়ে ফের ‘লাল’ ক্যাম্পাস
৭ নভেম্বর : দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্র সংসদ নির্বাচন, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (JNUSU) ২০২৫-এর ফল ঘোষণা হল। এবার সবকটি শীর্ষ পদে বিশাল ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে আনল বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলির জোট । অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP)-কে পরাজিত করে ক্যাম্পাসটিকে কার্যত ফের বাম-দুর্গ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করল তাঁরা।
চার শীর্ষ পদে বামেরা তাঁদের দখল নিশ্চিত করেছে। বাম ঐক্যের এই জয় প্রায় একতরফা। নির্বাচিত ছাত্রনেতারা হলেন:
সভাপতি : অদিতি মিশ্র।
সহ-সভাপতি : কে. গোপিকা।
সাধারণ সম্পাদক : সুনীল যাদব।
যুগ্ম সম্পাদক : দানিশ আলি।
সভাপতি পদে আইসার অদিতি মিশ্র, এবং সহ-সভাপতি পদে এসএফআইয়ের কে. গোপিকা স্পষ্ট ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ডিএসএফের সুনীল যাদব হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর জয় ছিনিয়ে আনেন, এবং যুগ্ম সম্পাদক আসনটি দখল করেন আইসার দানিশ আলি। এই ব্যাপক জয়ের মাধ্যমে জেএনইউ-এর ছাত্র রাজনীতিতে বামেদের দীর্ঘদিনের আধিপত্য আরও একবার জোরদারভাবে প্রতিষ্ঠিত হল।
JNUSU নির্বাচন ২০২৫-এ মোট ভোটারের ৬৭ শতাংশ ভোট দিয়েছেন। যদিও গতবারের ৭০ শতাংশের তুলনায় এবার ভোটের হার সামান্য কম ছিল। জেএনইউ নির্বাচন কমিটির তথ্য অনুসারে, এই বছর মোট ৯,০৪৩ জন ছাত্রছাত্রী তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। শান্তিপূর্ণ ও সুসংগঠিতভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, যা জেএনইউ-এর গভীর রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের আগ্রহকে পুনরায় প্রমাণ করল বলেই মনে করেছেন অনেকে।
নতুন ছাত্র সংসদকে এখন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলি হল, হোস্টেল ও লাইব্রেরির পরিকাঠামোর উন্নতি,শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার ও গবেষণার জন্য তহবিল বৃদ্ধি প্রমুখ। এছাড়াও জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP), ক্যাম্পাসের স্বশাসন এবং সামগ্রিক ছাত্র কল্যাণের মতো বিষয়গুলিও আগামী এক বছর বাম ঐক্যের প্রধান এজেন্ডা হয়ে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিটির প্রশংসা করেছে। অন্যদিকে, বিজয়ীরা এখন মেতে রয়েছেন জয়ের উল্লাসে। তাঁদের সমর্থকরা হোস্টেল ও জনসমাগমের স্থানগুলিতে ব্যানার ও স্লোগান দিয়ে উৎসব পালন শুরু করে দিয়েছেন। এই ফলাফলের হাত ধরে জেএনইউ-এর রাজনৈতিক বিতর্ক ও সক্রিয় ছাত্র আন্দোলন যে এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করল, তা বলাই বাহুল্য।
খবর : উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল।

