রাষ্ট্র সেবিকা সমিতির চতুর্থ প্রমুখ সঞ্চালিকা প্রমীলা তাই মেড়ে’র জীবনাবসান

৩১ জুলাই : চলে গেলেন রাষ্ট্র কাজে নিবেদিত প্রাণ, ক্ষুরধার ব্যক্তিত্ব, দক্ষ সংগঠক প্রমীলা তাই মেড়ে। রাষ্ট্র সেবিকা সমিতির তিনি ছিলেন চতুর্থ প্রমুখ সঞ্চালিকা। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে নাগপুরের দেবী আহল্যা মন্দিরে (সমিতির কেন্দ্র কার্যালয়) বার্ধক্যজনিত কারণে শ্রদ্ধেয় প্রমিলা তাইজির প্রয়াণ  ঘটে। তাঁর ৯৭ বছরের কর্মময় জীবন আর এই  সময়কালের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল সম্পূর্ণ রূপে রাষ্ট্র কাজে সমর্পিত। তাঁর প্রয়াণে সমস্ত দেশ শোকস্তব্ধ। নিরলস কর্মযোগী, বিশাল মাতৃহদয়ের অধিকারী এই মহীয়সী নারীর তপস্যালব্ধ জীবনের কতটুকুই বা জানতে পেরেছি। দক্ষিণ অসম প্রান্তে সমিতি কাজের বীজ বপন তাঁর হাতেই। উত্তর পূর্বের প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যেও তাইজীর নিত্য প্রবাস এবং সুনিয়োজিত কার্য যোজনার জন্যেই কিন্তু আজকের সংগঠন কাজের ভিত দৃঢ় হয়েছে।

তিনি সমিতির কেন্দ্র কার্যালয় প্রমুখ, অখিল ভারতীয় প্রমুখ কার্যবাহিকা, সমিতির বিশ্ব বিভাগের প্রমুখ, সহ-প্রমুখ সঞ্চালিকা (২০০৩–২০০৬) এবং প্রমুখ সঞ্চালিকা (২০০৬–২০১২) – এই সমস্ত গুরুদায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছিলেন। শুধু  ভারতেই উনার কার্য সীমিত ছিল না ,ভারতের বাইরে  শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া, যুক্তরাজ্য, আমেরিকা প্রভৃতি  দেশেও  সংগঠন কাজের বিস্তৃতির জন্য উনার  নিরন্তর  প্রবাস হত। আমেরিকায় তাঁর অবস্থানকালে নিউ জার্সি  তাঁকে সম্মানজনক মানদ নাগরিকত্ব প্রদান করে। ২০২০ সালে SNDT বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডি.লিট উপাধিতে সম্মানিত করে।

২০০৩–২০০৪ সালে বন্দনীয়া মৌসিজির জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে একটি চিত্র প্রদর্শনী নিয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত এবং নেপালসহ মোট ১০৮টি স্থানে প্রায় ২৮,০০০ কিমি পথযাত্রা তিনি নিজে গাড়ি চালিয়ে সম্পন্ন করেন – তখন তাঁর বয়স ছিল ৭৫ বছর!

কেনিয়াতে সমিতি কাজের বিস্তৃতির জন্য সারস্বতী সদন’ নামে কার্যালয় ভবনের উদঘাটন হয় উনার হাতে। “वयं विश्वशान्त्यै चिरं यत्नशीलाः” এই গ্রন্থে তাঁর আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার বিবরণ রয়েছে। বিদেশের বহু কার্যকর্তা শ্রদ্ধেয়া তাইজীকে দেখতে দেখতে নাগপুরে আসেন। তরুণ কার্যকর্তাদের সঙ্গে তাঁর কোনো জেনারেশন গ্যাপ থাকতো না কারন নিত্যনতুন সমস্ত বিষয়ের  আপডেট থাকতো তাইজীর কাছে। পোশাক- পরিচ্ছেদ, কথাবার্তা, অধ্যয়ন বক্তৃতা, সভা পরিচালনা – সব কিছুতেই ছিল  উনার নিখুঁত পরিপাটি। কোথাও অন্যায় দেখলে, ভালো কিছু হলে, তাৎক্ষণিক ফোন করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, লেখক, সম্পাদক, বা রাজনীতিক, সে যেই হোন না কেন নির্দিধায়  স্পষ্টভাবে জানাতেন। এহেন ব্যক্তির প্রয়াণে অবশ্যই সংগঠন এবং রাষ্ট্রের যে অপূরণীয় ক্ষতির হল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।  রাষ্ট্র সেবিকা সমিতি দক্ষিণ অসম প্রান্তের পক্ষে এক শোক বার্তায় এ খবর জানানো হয়েছে।

Spread the News
error: Content is protected !!