আরএসএসের সংঘ শিক্ষা বর্গের সমাপ্ত অনুষ্ঠান মাধবধামে

বরাক তরঙ্গ, ২০ মে : রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ দক্ষিণ অসম প্রান্তের সংঘ শিক্ষা বর্গ প্রথম বর্ষের সমাপন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হলো মাধবধামে। রবিবারের সমাপ্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত প্রণাম, ধ্বজোত্তোলন ও প্রার্থনার পর শারীরিক কসরৎ প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা। পরিচয় প্রদান ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অনুপম দাস এবং প্রতিবেদন পাঠ করেন সামান্য বর্গের বর্গাধিকারী অশোক বর্মন। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ, দক্ষিণ অসম প্রান্তের ব্যবস্থাপনায় সংঘ শিক্ষা বর্গ বিগত ৪ মে শনিবার বিকেল থেকে আরম্ভ হয়। বর্গের শিক্ষার্থীদের আয়ু ১৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এ দিন দক্ষিণ অসম প্রান্তের সংঘ শিক্ষা বর্গ ভারতমাতার প্রতিমূর্তির সম্মুখে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সূচনা করেন দক্ষিণ অসম প্রান্ত সংঘ চালক জ্যোস্নাময় চক্রবর্তী এবং প্রান্ত কার্যবাহ সুভাষচন্দ্র নাথ। সংঘ কার্য্যের প্রসার ও সুষ্ঠ পরিচালনার জন্য আবশ্যক যোগ্য এবং প্রশিক্ষিত কার্যকর্তা নির্মাণের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এই বছর ও দক্ষিণ অসম প্রান্তের শ্রীগৌরীস্থিত মাধবধামে এই বর্গ অনুষ্ঠিত হয়।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দৃষ্টিতে দক্ষিণ আসাম প্রান্ত বরাক উপত্যকা, ডিমা হাসাও জেলা এবং মিজোরাম রাজ্য নিয়ে গঠিত। সংঘের দৃষ্টিতে ১১ জেলায় বিভক্ত। এই প্রান্তের ১ জেলার ৩৭ স্থান থেকে মোট ৬১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরত ছাত্র, ব্যবসায়ী এবং চাকুরীজীবি স্বয়ংসেবক বিদ্যমান, এদের মধ্যে বাংলা, নেপালি, হিন্দি, চা-জনজাতি, ডিমাসা প্রভৃতি বিভিন্ন ভাষাভাষীর শিক্ষার্থীরা এক সাথে এই বর্গে শিক্ষা গ্রহণ করেন।

সংঘ শিক্ষা বর্গ যাতে সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও সুচারু রূপে সম্পন্ন হয়। এ বর্গে ১১ জন শিক্ষক এবং এবং বিভিন্ন বিভাগে ২৫ জন প্রবন্ধক নিযুক্ত ছিলেন।

সংঘ শিক্ষা বর্গে কার্যসূচি মতে ভোর ৪ টায় জাগরণ থেকে ৯ টা ৪৫ মিনিটে দীপ নির্বাপন পর্যন্ত শারীরিক ও বৌদ্ধিক কার্যক্রমে ভরপুর ছিল প্রতিদিনের প্রশিক্ষণ সূচি ও দিন চর্চা। সকাল ৪-৪৫ মিনিটে একাত্মতাস্ত্রোত্রম অর্থাৎ ভারতমাতার কন্দনার মাধ্যমে ভারতের পবিত্র নদনদী, পাহাড়-পর্বত, বেদ-পুরান, মুণি-ঋষি, মহাপুরুষ বীর-বিরাঙ্গনা, সমাজ শাস্ত্রী ও সমাজের বিভিন্ন প্রান্তঃস্মরণীয় ব্যক্তিদের স্মরণ করে প্রতিদিনের কার্যক্রম আরম্ভ করা ছিল নিত্য শিক্ষণ সূচীর প্রথম বিষয়। প্রতিদিন সকাল ও বিকাল মিলিয়ে মোট চার ঘন্টার শারীরিক প্রশিক্ষণ এবং ৪ ঘন্টা ২৫ মিনিটের বৌদ্ধিক বিভাগের প্রশিক্ষণ হয়।
শারীরিক প্রশিক্ষণের বিষয় ছিল-দণ্ড, নিঃযুদ্ধ, দণ্ড যুদ্ধ, যষ্ঠি, পদবিন্যাস, সমতা, সামূহিক সমতা, যোগাসন, ব্যায়াম যোগ এবং ঘোষ (সংঘের বাদ্যযন্ত্র) ইত্যাদি। শারীরিক প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের শারীরিক বিকাশ, আত্মরক্ষা, নিজেকে সুস্থ রাখা এবং অনুশাসনের মূখ্য পাঠ হিসেবে বিবেচিত হয়।
সমারোহে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অসম সরকারের রাজস্ব বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত সচিব সদস্য বিমলেন্দু ভট্টাচার্য। ভট্টাচার্য তাঁর বক্তব্যে রাষ্ট্রীয় ভাবধারা ও হিন্দু সভ্যতার বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন। সংঘ রাষ্ট্রহিত ও ভারতীয় দর্শনের কথা বলেন। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রান্ত সংঘচালক জ্যোৎস্নাময় চক্রবর্তী।

Author

Spread the News