প্রতিভার বিকাশে পরিপূরক হচ্ছে যোগাভ্যাস : অধ্যক্ষ ড. সুজিত

মহিলা কলেজে যোগ সার্টিফিকেট কোর্স নিরাময়ের, দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ বললেন শতাক্ষী

বরাক তরঙ্গ, ২৩ জানুয়ারি : প্রতিভার বিকাশে পরিপূরক হচ্ছে যোগাভ্যাস। এমনটাই বললেন শিলচর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. সুজিত তিওয়ারি। বলেন, পড়ুয়াদের  শুধুমাত্র দু’মলাটের পাঠ্যক্রমের মধ্যে বেঁধে রাখতে চায় না শিলচর মহিলা কলেজ। ছাত্রীদের  বহুমুখী বিকাশে বরাবরই বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এই  প্রতিষ্ঠানের। তবে, পড়াশোনা থেকে শুরু করে সব প্রতিভাকে তুলে ধরার জন্য  নিঃসন্দেহে  চাই শারীরিক ও মানসিক শক্তির পরিপূর্ণতা। এই ক্ষেত্রে কিন্তু যোগ অনুশীলন অমোঘ পন্থা হিসেবেই কাজ করে। এককথায়  এই জায়গায় যৌগিক ক্রিয়ার কোনও বিকল্প নেই। এমন কথাই শোনালেন কলেজের অধ্যক্ষ ড.সুজিত তিওয়ারি।

বৃহস্পতিবার পরাক্রম দিবসে যোগ সার্টিফিকেট কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করছিলেন তিনি। ড.সুজিতের মন্তব্য, শিলচর নিরাময় যোগ শিক্ষা সংস্থানের সঙ্গে মিলে  শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগ শিক্ষার আগ্রহ বাড়াতে একের পর এক কর্মসূচি হচ্ছে কলেজে। ফলে, নতুন শিক্ষানীতির অন্তর্গত সেমিষ্টারের পাঠ্যক্রমে অংশগ্রহণ বাড়ছে পড়ুয়াদের। এবারে কলেজ নিরাময়-এর সঙ্গে যৌথ  উদ্যোগ নিয়ে ‘যৌগিক প্র্যাকটিসেস ফর উওমেন্স ওয়েলনেস’ সার্টিফিকেট কোর্স চালু করেছে আজ। নিয়মশৃঙ্খলা অনুযায়ী এই কোর্স সম্পূর্ণ করার পর যে শুধুমাত্র সার্টিফিকেট মিলবে তা  নয়, যোগ শিক্ষায় ক্যারিয়ার গড়ে তোলার রাস্তাও কিন্তু খুলে যাবে। তাই, এই কোর্সের গুরুত্ব যে অনেক, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অধ্যক্ষ ড.তিওয়ারির কথায়, যোগাভ্যাস  প্রতিভার বিকাশে পরিপূরক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। একজনকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে অন্যতম ভূমিকা নেয়। কার্যত, এই বিষয়কে মাথায় রেখেই ছাত্রীদের জন্য এই  উদ্যোগ কলেজের। আগামী দিনগুলোতে এরকম আরও বিভিন্ন কোর্স শিলচর মহিলা কলেজ চালু করবে, এমন পরিকল্পনার ব্যাপারেও জানান তিনি।

প্রতিভার বিকাশে পরিপূরক হচ্ছে যোগাভ্যাস : অধ্যক্ষ ড. সুজিত

এ দিন, কলেজ প্রেক্ষাগৃহে  বিশিষ্টজনেদের হাত দিয়ে সার্টিফিকেট কোর্স সংক্রান্ত ক্ষুদ্র পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন হয়। যোগ সেন্টারে ফিতা কেটে শুরু হয় কর্মসূচি। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি-সাংবাদিক মহুয়া চৌধুরী, অধ্যক্ষ ড. সুজিত তিওয়ারি, নিরাময় যোগ শিক্ষা-সংস্থানের ডিরেক্টর শতাক্ষী ভট্টাচার্য, আইকিউএসি-র সংযোজক ড.শান্তনু দাস, ভোকেশনাল এডুকেশনাল সেলের সংযোজক ড.সুজয় দাস, নিরাময়ের মুখ্য সংযোজক দিব্য গীতানন্দ সহ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।  পড়ুয়াদের অংশগ্রহণও ছিল লক্ষণীয়। শ্রেয়া দত্ত ও সংহিতা চক্রবর্তীর বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান।

প্রতিভার বিকাশে পরিপূরক হচ্ছে যোগাভ্যাস : অধ্যক্ষ ড. সুজিত

একই সঙ্গে  ডেমন্স্ট্রেটর রাতুল চক্রবর্তীর সূর্য নমস্কার প্রদর্শনী। এরপর পরই ছিল স্নেহময় নাথ ও নন্দনা মজুমদারের যোগাসন প্রদর্শনী। প্রত্যেককে নিরাময়ের তরফে কলেজ ও নিরাময়ের তরফে সার্টিফিকেট সহ স্মারক তুলে দেওয়া হয়। সম্মান জানানো হয় দুই  প্রশিক্ষক রাতুল চক্রবর্তী ও শুভঙ্কর সাহাকেও। কলেজের পক্ষে এ দিন সম্মান জানানো হয় নিরাময়ের ডিরেক্টর শতাক্ষী ভট্টাচার্যকে। তিনি, মেয়েদের যোগাভ্যাসের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিশদ কথা বলেন। শতাক্ষীর বক্তব্য, মেয়েরা সমাজের ভিত। ফলে তাঁদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার গুরুত্ব রয়েছে খুব। এ ক্ষেত্রে কলেজের এই সার্টিফিকেট কোর্সে উপকৃত হবে শিক্ষার্থীরা। বরাকের কোনও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু মেয়েদের জন্য  প্রথম এমন এরকম অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। যোগ শিক্ষার প্রচার-প্রসারে মহিলা কলেজের অঙ্গীকার সমাজে দৃষ্টান্ত রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শতাক্ষী। নিরাময়ের চেয়ারম্যান ডা: অজিতকুমার  ভট্টাচার্য উপস্থিত হতে না পারলেও এক বার্তায় কোর্সটি মেয়েদের জন্য লাভদায়ক হবে বলে উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অনেক পরিবর্তন আসবে, প্রশিক্ষার্থীরা নিজেরাই তা উপলব্ধি করতে পারবেন।

প্রতিভার বিকাশে পরিপূরক হচ্ছে যোগাভ্যাস : অধ্যক্ষ ড. সুজিত

ড. সুজয় দাস  জানান, কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের মেয়েরা এমন-কি শিক্ষিকারাও অংশ নিতে পারেন কোর্সে। কলেজে এসে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারেন যে কেউ। তবে, পড়ুয়াদের জন্য প্রথমবার কোনও কোর্স ফি রাখছে না কলেজ। সমবেত ধ্যানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান। অভ্যাস করান শতাক্ষী ভট্টাচার্য। সম্পূর্ণ পর্বের সঞ্চালনায় ছিলেন ড. সুজয় দাস।

Author

Spread the News