শ্রীভূমিতে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস উদযাপন
জনসংযোগ, শ্রীভূমি।
বরাক তরঙ্গ, ২৪ মার্চ : বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস উপলক্ষে সোমবার শ্রীভূমি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে এক সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। “হ্যাঁ! আমরা যক্ষ্মা নির্মূল করতে পারি” এই মূল প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিবসটি উদযাপিত হয়। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় একটি র্যালির মাধ্যমে, যা পতাকা নেড়ে উদ্বোধন করেন ডাঃ সুমনা নাইডিং, যুগ্ম স্বাস্থ্য সঞ্চালক, শ্রীভূমি। উপস্থিত ছিলেন ডাঃ লিপি দেব, সুপারিন্টেনডেন্ট, শ্রীভূমি সিভিল হাসপাতাল, ডাঃ জামাল আহমেদ চৌধুরী, মন্দিরা শর্মা, অধ্যক্ষ, নার্সিং কলেজ এবং এনটিইপি, শ্রীভূমির বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা র্যালির পর শ্রীভূমি সিভিল হাসপাতালের কনফারেন্স হলে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কমিউনিটি হেল্থ অফিসার, এএনএম, এবং আশা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ডাঃ সুমনা নাইডিং, তাঁর বক্তব্যে প্রাথমিক পর্যায়ে যক্ষ্মা সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা সম্পন্ন করার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন। তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের যক্ষ্মার লক্ষণযুক্ত রোগীদের চিহ্নিত করা এবং যথাযথভাবে চিকিৎসা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
এছাড়াও, তিনি সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন যে নিখরচায় যক্ষ্মা নির্ণয়, ওষুধ এবং “নিক্ষয় পোষণ যোজনা”-র মাধ্যমে পুষ্টিগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ডা. লিপি দেব, তাঁর বক্তৃতায় যক্ষ্মা নিয়ে সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার দূর করার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন। তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহিত করেন যাতে মানুষকে বোঝানো যায় যে যক্ষ্মা সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য রোগ, যদি তা সময়মতো সনাক্ত ও চিকিৎসা করা হয়। ডা. জামাল আহমেদ চৌধুরী তাঁর বক্তৃতায় জাতীয় যক্ষ্মা নির্মূল কর্মসূচি (NTEP)-এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সরকার যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যে বিনামূল্যে নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদান করছে। এর মূল লক্ষ্য হলো সক্রিয় রোগ সনাক্তকরণ, রোগীদের চিকিৎসা শেষ করতে উৎসাহিত করা এবং সম্প্রদায়ের সহায়তা বৃদ্ধি করা।”
তিনি আরও জানান যে যক্ষ্মা রোগীদের পুষ্টির ঘাটতি দূর করতে “নিক্ষয় পোষণ যোজনা” চালু করা হয়েছে, যা রোগীদের দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করবে। সেমিনারে সুমন চৌধুরী, জেলা মিডিয়া বিশেষজ্ঞ, এনএইচএম (NHM), আলোচনার মডারেটর হিসেবে যক্ষ্মা সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম এবং কমিউনিটি অ্যাওয়ারনেসের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন। এই কর্মসূচির বিশেষ দিক ছিল ডা. সুমনা নাইডিং-এর “নিক্ষয় মিত্র” উদ্যোগে এক যক্ষ্মা রোগীকে দত্তক গ্রহণ। তিনি রোগীকে চিকিৎসাকালীন পুষ্টি ও মানসিক সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। অনুষ্ঠানটি শ্রীভূমিকে যক্ষ্মামুক্ত করার সংকল্প গ্রহণের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়, যেখানে সকলে সক্রিয় রোগ সনাক্তকরণ, চিকিৎসা অনুসরণ এবং কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন।
