বাংলাদেশি ভাষার অনুবাদক খুঁজে দিতে বঙ্গভবনকে চিঠি কেন প্রশ্ন বিডিএফের
বাঙালি মানেই বাংলাদেশি এই যুক্তি চালানোর অপচেষ্টা বন্ধের দাবি
বরাক তরঙ্গ, ৪ আগস্ট : সম্প্রতি বাংলাদেশি সন্দেহে আটজনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এসবের পাঠোদ্ধারের জন্য দিল্লি বঙ্গভবনের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ থেকে ইংরেজি, হিন্দি তর্জমা করার একজন অনুবাদক খুঁজে দেবার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন লোদি কলোনি থানার পুলিশ ইন্সপেক্টর অমিত দত্ত। বাঙালিদের প্রতি এইধরনের অপমানজনক অবস্থানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে যে কিছু হয় না এটা একজন পুলিশ আধিকারিক জানেন না এটা বিশ্বাস যোগ্য নয়। আর বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা যে বাংলা এই সাধারণ জ্ঞান যদি তার না থাকে তবে অবশ্যই তিনি এই পদের যোগ্য নন। অবিলম্বে তাকে এই পদ থেকে নিলম্বিত করা জরুরী। তিনি বলেন, বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করা অবশ্যই ইচ্ছাকৃত। কারণ তা না হলে এই চিঠি দিল্লি বঙ্গভবনের আধিকারিককে পাঠানো হল কেন ? তারমানে এই পুলিশ কর্মকর্তা কি বঙ্গভবনে বাংলাদেশি ভাষার চর্চা হয় বলে মনে করেন ? তিনি কি মনে করেন বঙ্গভবনের কর্মীরা ‘বাঙলাদেশি’ ?
জয়দীপ বলেন, ইদানীং সারা ভারত জুড়ে বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ বলে সন্দেহ করার যে অপচেষ্টা শুরু হয়েছে এটি তারই সুপরিকল্পিত অংশ। তিনি বলেন, বিডিএফ থেকে তারা এই অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এবং অবিলম্বে এই পুলিশ ইন্সপেক্টরকে প্রকাশ্যে বাঙালিদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানাচ্ছেন।
বিডিএফ এর অপর আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে বলেন, বাঙালিদের নাগরিকত্ব নিয়ে ইদানিং যে ধরনের ছেলেখেলা শুরু হয়েছে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ সংগঠিত না হলে ভবিষ্যতে হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সমস্ত বাঙালিকে এর খেসারত দিতে হবে। হয়তো আগামীতে এমন অবস্থা দাঁড়াবে যে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যে কোন রাজ্যে যে কোন বাঙালি বাংলায় কথা বললেই হেনস্থার শিকার হতে হবে। তিনি বলেন, জাতি এই দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য প্রানিপাত করল, যে জাতি বিজ্ঞান,শিল্প, সাহিত্য, রাজনীতি, প্রযুক্তিতে দেশের পথপ্রদর্শক,সেই জাতিকে আজ এমন বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হচ্ছে – এ অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। হৃষীকেশ বলেন, ধর্মীয় মেরুকরণে আসক্ত হয়ে থাকলে এই অবমাননা থেকে মুক্তি অসম্ভব। তিনি বলেন বিডিএফ সর্বদাই ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে, সে যে ধর্মাবলম্বীদের দ্বারাই সংগঠিত হোক না কেন ! কিন্তু আজ বাংলাভাষী বলে যাদের হেনস্থা করা হচ্ছে তাদের অধিকাংশই মৌলবাদী নন, খেটে খাওয়া সাধারণ নাগরিক। তাই রাজনৈতিক লাভালাভের স্বার্থে একাংশ দল ও নেতৃত্ব দ্বারা এইধরনের নিগ্রহের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সমস্ত বাঙালিকে সোচ্চার হতে হবে। এছাড়া বর্তমানে আর কোন বিকল্প নেই বলে এদিন মন্তব্য করেন তিনি।