বোড়ো জাতির পিতা উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মের স্বপ্ন সাকার করতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান বিডিএফের
বরাক তরঙ্গ, ১২ সেপ্টেম্বর : আগামী ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বোড়োল্যান্ড টেরিটরিয়াল কাউন্সিলের সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনে বোডোফা উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মের সম্মান রক্ষার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রলোভনে পা না দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য আপামর বড়োল্যান্ডের জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানালেন আকসার প্রাক্তন সভাপতি তথা বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়।
এক প্রেস বার্তায় প্রদীপ দত্তরায় বলেন, আকসার নেতৃত্বে বরাক উপত্যকায় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল বড়ো জাতির পিতা উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মের সহযোগিতা না পেলে সেই দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না। তিনি বলেন, বোডোফার নেতৃত্বে যখন বড়ো ল্যান্ডের জন্য আন্দোলন চলছিল তখন উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয় এবং তাঁরা পরস্পরের আন্দোলনকে সমর্থন ও সহযোগিতায় সম্মত হন। এরপর ১৯৮৬ সালে এক প্রকাশ্য জনসভায় তাঁর উপস্থিতিতে বোডোফা এই সমর্থন ও সহযোগিতার কথা ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে আকসার আন্দোলনের একটা সময়ে তৎকালীন ইউজিসির চেয়ারম্যান জানান যে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য এককোটি জনসংখ্যা দরকার যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করবেন। বরাক উপত্যকার জনসংখ্যা তখন ৩৫ লক্ষ। সেই সময় উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্ম বোড়ো ল্যান্ড এলাকার চল্লিশ লক্ষ লোকের সমর্থন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে বলে লিখিত ভাবে জানান। বাকি মিজোরাম ও ত্রিপুরার সমর্থন পেয়ে অবশেষে ইউ জি সির চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয় এবং তার পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে সবুজ সংকেত মেলে। প্রদীপবাবু বলেন, বোডোফার এই অবদান বরাকবাসী কখনই বিস্মৃত হবেনা। এবং পরবর্তীতে বিটিসি নির্বাচনে আকসার পক্ষ থেকে তাঁরা উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মের সমর্থনে সহযোগিতা করেন।
প্রদীপ দত্তরায় আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পর উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মের এই অবদান মনে রেখে আকসার তরফে তার স্মৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি প্রেক্ষাগৃহ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং তাঁর জন্য বোড়ো ল্যান্ডের নেতা হাগ্রামা মহিলারি ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান বরাদ্দ করেন। এবং সবার সহযোগিতায় এই প্রেক্ষাগৃহ নির্মিত হয়েছে। আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মের একটি আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠার একটি প্রস্তাব রয়েছে এবং এর বাস্তবায়নে হাগ্রামা মহিলারির সহযোগিতা পাবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রদীপবাবু প্রেসবার্তায় বলেন, বিজেপির আমলে সারা অসমের বাঙালিরা বঞ্চনা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ডি ভোটার, ডিটেনশন ইত্যাদির মাধ্যমে বাঙালিদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবার প্রক্রিয়া চলছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাঙালিদের প্রতি বৈষম্য চলছে। তিনি বলেন, তাই আগামী নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক প্রলোভনের ফাঁদে পা না দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বাঙালি সহ বোড়ো ল্যান্ডের সবাইকে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে। একমাত্র তা হলেই বোডোফা উপেন্দ্র নাথ ব্রহ্মের স্বপ্ন সাকার করা সম্ভব হবে বলে এদিন মন্তব্য করেন তিনি।