মানবদরদী এক শিল্পীকে হারাল দেশ : বিডিএফ
বরাক তরঙ্গ, ২০ সেপ্টেম্বর : মাত্র ৫২ বছর বয়েসে নিভে গেল তাঁর জীবনদীপ। সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে অকালে প্রয়াত শিল্পী জুবিন গর্গের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, ভুপেন হাজরিকার পর সম্ভবত জুবিন গর্গই অসমের একমাত্র শিল্পী যিনি রাজ্য, দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের সঙ্গীত প্রেমীদের হৃদয় জয় করেছিলেন। তার সঙ্গীত প্রতিভা ছিল বিস্ময়কর। ২৬টি তিনি ভাষায় ৩৮০০০ গান রেকর্ড করেছেন। টলিউড ও বলিউডের অসংখ্য জনপ্রিয় গানের নেপথ্য গায়ক ছিলেন জুবিন। তাঁর এই সৃষ্টি আগামী বহুদিন ধরে অনুরণিত হবে অনুগ্রাহী মহলে।
প্রদীপ দত্তরায় আরও বলেন, শিল্প সৃষ্টির পাশাপাশি অসম্ভব এক মানবদরদী মন ছিল তার। তাঁর উপার্জনের অধিকাংশ টাকা তিনি অকাতরে বিলিয়ে দিতেন দুস্থদের সাহায্যার্থে। মানবিক যে কোন বিপর্যয়, সে বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দাঙ্গা যাই হোক না কেন সবকিছুর মোকাবেলায় অগ্রনী হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে বারবার তাঁকে দেখা গেছে। প্রদীপ দত্তরায় আরও বলেন, মানবিক হওয়ার পাশাপাশি তাঁর এক স্পর্ধিত সত্ত্বা ছিল যার জন্য বিতর্কিত বিষয়ে নিজের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরতে তিনি কখনই কুন্ঠিত হননি, সে সত্য যত অপ্রিয়ই হোক না কেন। তিনি আরও বলেন, জুবিন জাতি, ধর্ম, ভাষার ব্যাবধানকে মানতেন না। মানব প্রেমই ছিল তাঁর বিশ্বাস ও ধর্ম।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন, প্রয়াত শিল্পীর সঙ্গে বরাক উপত্যকার একটি আন্তরিক যোগাযোগ ছিল যেহেতু তাঁর ছাত্রজীবনের একাংশ করিমগঞ্জ জেলায় কেটেছে। স্থানীয় সিলেটি ভাষায় তিনি অনর্গল কথা বলতে পারতেন এবং এই শিকড়কে তিনি কখনও ভুলে জাননি। তাঁর অসংখ্য বাংলা গান বরাকে জনপ্রিয় ছিল। কখনো তিনি নিজেকে তিনি আধা বাঙালি আধা অসমিয়া বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বলেন, তাই সমগ্র রাজ্যের সাথে বরাকের জনগনও আজ শোকস্তব্ধ। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠন তাঁদের অনুষ্ঠান বাতিল করেছে।
প্রদীপ দত্তরায় এদিন বিডিএফ এর পক্ষ থেকে প্রয়াত শিল্পীর উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।