ডিমা হাসাওতে বরাকের গ্রাম অন্তর্ভুক্তি নিয়ে লিখিতভাবে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে দাবি বিডিএফের
বরাক তরঙ্গ, ১৫ অক্টোবর : বরাকের ১৯টি গ্রাম ডিমা হাসাওতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্ক শেষ হচ্ছে না। এমনি সরকরের প্রকৃত অবস্থান জানিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, এই অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে বরাকের মানুষ না চাইলে কোন গ্রাম ডিমা হাসাওয়ে যাবে না। আবার বরাকের মন্ত্রী কৌশিক রায় বলছেন যে একটি গ্রামও ডিমা হাসাওয়ে যাবার কোন সম্ভাবনা নেই। এদিকে ডিমা হাসাওয়ের কিছু সংগঠনের বক্তব্য অন্যরকম। সব মিলিয়ে পুরো ব্যাপার নিয়ে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে যা উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনে মদত দিয়ে পারে।তাই অবিলম্বে এই নিয়ে সরকারের স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
প্রদীপ দত্তরায় আরও বলেন, বরাক উপত্যকা শান্তির দ্বীপ। বিগত কয়েক যুগ ধরে এখানে কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি। এমনকি বাবরি ধ্বংসের পর সারা দেশে দাঙ্গা হলেও বরাকে তার প্রভাব পড়েনি। এখানে বাঙালি, চা জনজাতি,ডিমাসা সবাই সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ রয়েছেন। কিন্তু দিশপুরের একটি অশুভ চক্র বরাকের বাঙালি ও হিন্দিভাষী এবং বাঙালি ও ডিমাসাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে মদত দিচ্ছেন। প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে এই ঘৃন্য চক্রান্ত আমরা তথা বরাক বাসী কখনো মেনে নেবেনা। তিনি আরও বলেন, বোড়ো জনগোষ্ঠী, ডিমাসা এবং পার্শ্ববর্তী ত্রিপুরা রাজ্যের স্থানীয় উপজাতি সবাই বৃহত্তর কছাড়ি জাতির অংশ। এবং এদের প্রত্যেকের সাথে ঐতিহাসিক ভাবে দীর্ঘযুগ ধরে বরাকের বাঙালিদের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ককে নষ্ট করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে একটি অশুভ চক্র। তিনি বলেন, তাদের কাছে খবর আছে যে ভাষা শহিদ স্টেশন ‘নামকরণের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার অনুমোদন দেবার পরও ডিমাসাদের একটি ভুঁইফোড় ছাত্রসংগঠন ডিমাসা রাজার নামে এই স্টেশনের নামকরণ চায় বলে একটি স্মারকলিপি চক্রান্ত করে পেশ করানো হয়েছে। তিনি বলেন, দরকার হলে শিলচর এয়ারপোর্টের নাম ডিমাসা রাজার নামে করা হোক। তাতে বরাকের অধিকাংশই কোন আপত্তি করবেন না। প্রদীপ দত্তরায় এদিন আরও বলেন, যদি বরাক পৃথক হয় তবে ডিমা হাসাও এবং জিরিবাম বরাকের সঙ্গে থাকবে বলে ইতিমধ্যে তার সঙ্গে কথা হয়েছে।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক এদিন বলেন যে সরকার অবিলম্বে ডিএনএলএ চুক্তি এবং বরাকের কোন গ্রাম ডিমা হাসাওয়ে যাবে কিনা, এনিয়ে স্পষ্টীকরণ দিক,অথবা শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। তিনি জনগনকে এ ব্যাপারে কোন গুজবে কান দিয়ে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যান্যদের মধ্যে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে হারাধন দত্ত এবং সজল দেবরায় উপস্থিত ছিলেন।

