রাজ্য বাজেটে ফের বঞ্চিত বরাক : বিডিএফ
বরাক তরঙ্গ, ১৩ মার্চ : সাম্প্রতিক রাজ্য বাজেটে বরাক উন্নয়ন বিভাগের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ১০৫ কোটি টাকা। একই বাজেটে বোড়োল্যান্ডের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ১১৪৩ কোটি টাকা। তাই এই বাজেটেও বরাক বঞ্চিত হল বলে মন্তব্য করলেন বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের কর্মকর্তারা।
এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, উড়াল সেতুর ব্যাপারে যে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দকে ফলাও করে প্রচার করছেন বিজেপি নেতারা ,কার্যক্ষেত্রে তা এই বছর কতটা ব্যায়িত হবে তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, ২০২২ সালে এই প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আজ অবধি বলতে গেলে কোন অগ্রগতিই হয়নি। কিছুদিন আগেও এনিয়ে জনগণের মতামত নেওয়া ইত্যাদি নাটক চলেছে। জয়দীপ বলেন, যদি এই ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা থাকত তবে এতদিন ধরে এই প্রকল্প ফেলে রাখা হতনা। তিনি বলেন যদি এই অর্থবর্ষে কাজ শেষ না হয় তবে এই বরাদ্দ ফেরত যাবে। তাই যদি এই ব্যাপারে উদ্দেশ্য সঠিক হয় তবে অবিলম্বে কাজ শুরু করে প্রমাণ দিক সরকার। অন্যথা বুঝে নিতে হবে যে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগনকে বিভ্রান্ত করতেই এই বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছে। জয়দীপ এদিন আরও বলেন, একই সময়ে তারাপুর শিবাবাড়ি রোডে উড়াল সেতু নির্মাণের ঘোষণাও করা হয়েছিল। কিন্তু আজ অব্দি এই কাজ কি অবস্থায় রয়েছে তা ভুক্তভোগী জনগন দেখতে পাচ্ছেন। তিনি বলেন বরাকবাসী প্রতিশ্রুতি শুনে শুনে ক্লান্ত। তাই সদর্থক ভূমিকা পালন করতে হলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এবার কাজ দেখিয়ে প্রমাণ দিতে হবে। উড়াল সেতুর ক্ষেত্রেও তাই সতর্ক নজর রাখতে জনগনকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিডিএফ আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে এদিন বলেন যে বরাকের উন্নয়নের জন্য একটি পৃথক বিভাগ খুললেও তাঁতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ নগন্য। তাই এই বিভাগ বরাকের উন্নয়নে কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন রাজ্যের অন্যান্য অংশে যেভাবে বাজেট বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়েছে তার অনুপাতে এই বিভাগের বরাদ্দ স্থির করা উচিত ছিল। তাঁর বক্তব্য বড়োল্যান্ডে জনসংখ্যা ৩১ লক্ষ, কার্বিআংলংয়ে,ডিমা হাসাওতে ২ লক্ষ যেখানে বরাক উপত্যকার বর্তমান জনসংখ্যা ৪৩ লক্ষ। অথচ উড়াল সেতু বাদ দিয়ে উল্লেখিত এইসব প্রতিটি এলাকায় বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ বরাক থেকে বেশি। তাই কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আবার বঞ্চিত হল এই উপত্যকা। তিনি বলেন এখানে সমস্যার শেষ নেই। রয়েছে কর্মসংস্থানের অভাব, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকাঠামোর অভাব। কৃষি, শিল্প, বানিজ্য সবক্ষেত্রেই একনাগাড়ে পিছিয়ে যাচ্ছে এই উপত্যকা। আগামীতে বর্ষাকাল আসছে। রাঙ্গিরখাল সংস্কারের কাজ অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে। বরাক নদীর বাঁধে স্থানে স্থানে ফাটল দেখা দিচ্ছে। সবমিলিয়ে আবার বন্যার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এইসব সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগী হতে পারত বরাক উন্নয়ন বিভাগ। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দই বুঝিয়ে দিয়েছে যে সরকার বরাকের উন্নয়নে কতটা আগ্রহী। তিনি বলেন অনুন্নয়ন মুক্তি পেতে গেলে এই উপত্যকার জনগনের বিকল্প ব্যবস্থা ভাবা ছাড়া কোন পথ নেই বলেই বিডিএফ মনে করে। বিডিএফ এর পক্ষ থেকে দেবায়ন দেব এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।